সুন্দরবন ভ্রমণ করে যা যা উপভোগ করবেন

প্রত্যেক বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে অনেক মানুষ সুন্দরবন ভ্রমণ করে আনন্দ উপভোগ করার জন্য। তবে শুধুমাত্র সুন্দরবনে নয় রাঙ্গামাটি ভ্রমণ সহ আরো অনেকে দর্শনীয় জায়গায় যায় এই দুই মাস আনন্দ উপভোগ করার জন্য। বাংলাদেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভ্রমণের জন্য এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্তে ছোটে না যাওয়া দর্শনধারী জায়গা খোজে আনন্দ উপভোগ করার জন্য। কারণ এই দুই মাস ভ্রমণের জন্য অনেকে দার্শনীক স্থানে যেতে পচ্ছন্দ করে। ভ্রমণের জন্য এই দুই মাস থাকে শীত গরমের মাঝামাঝি।

ঠিক এই সময়ের মধ্যে আমি আর আমার কয়েকজন বন্ধু মিলে সাত দিনের জন্য সুন্দরবন ভ্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেই।

তাই আজকে আমি আপনাদের বলব সুন্দরবন ভ্রমণ করে কি রকম আনন্দ উপভোগ করতে পেরেছি। প্রথমে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে সিদ্ধান্ত নেই। সিদ্ধান্ত হওয়ার ঠিক দুই দিন পর সুন্দরবন ভ্রমণ করার উদ্দ্যেশে যাত্রা শুরু করি। তবে সুন্দরবন ভ্রমণ করার জন্য সাত দিনের জন্য ৩৫ হাজার টাকায় একটি হায়েস মাইক্রো ভাড়া করি। তারপর খুব সকালে আমরা হালকা কিছু নাস্তা করে সেই গাড়িতে সুন্দরবন ভ্রমণ করার যাত্রা শুরু করি।

সুন্দরবন যাওয়ার পথ

সুন্দরবন যাওয়ার পথ

সুন্দরবন যাওয়ার দুইটি রাস্তা আছে খুলনা এবং মোংলা। গাড়ী থেকে নেমে আমরা খুলনা থেকে চলে যাওয়া শীপে উঠে মোংলা হয়ে সুন্দরবন প্রবেশ করি। এছাড়াও আপনী চাইলে ঢাকা থেকে সায়দাবাদ, গুলিস্তান ও গাবতলি থেকে খুলনাতে এসি ও নন এসি বাসে সরাসরি যেতে পারবেন। এসি বাসের ভাড়া ৭’শ থেকে ১৪’শ টাকা এবং নন এসি বাসের ভাড়া ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা। তাছাড়াও সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন সকাল বেলা সুন্দরবনের উদ্দ্যেশে যাত্রা করে এবং চিত্রা এক্সপ্রেস সন্ধ্যায় ছাড়ে। ভাড়া ৫৫০ থেকে ১৮০০ টাকা।

সুন্দরবনের দর্শনীয় স্থান ঘুরে যা দেখেছি

সুন্দরবন প্রকৃতির সৌন্দর্য্য অন্বেষণ এবং উপভোগ করার জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গায় চলে যাই। সুন্দরবন ভ্রমণে উপভোগ করার জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান গিয়েছি, যেমন-

  • নৌকায় চড়ে ম্যানগ্রোভ বনের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেছি।
  • সুন্দরবন টাইগার রিজার্ভ পরিদর্শন করেছি এছাড়াও বাঘ, হরিণ, বানর ও নানা ধরণের পাখিও দেখেছি। যা কিনা আমার বাস্তব জীবনে এরকম রং বে-রঙের সুন্দর পাখি দেখার সৌভাগ্য হয়নি। যা কি না এই সুন্দরবন ভ্রমণে এসে দেখতে পেয়েছি।
  • একটি সতেজ অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য বঙ্গোপসাগরে সব বন্ধু মিলে সাতার কেটেছি।
  • গ্রামে হাঁটা, মাছ ধরা, কাঁকড়া ধরা, এবং নৌকায় চড়ার মতো অনেক কিছু সেখানে নিমিশের মধ্যে উপভোগ করতে পেরেছি। তবে আমি শৈশবের সময় যা কিছু করেছি তা পুর্নরায় উপভোগ করতে পেরেছি।
  • ভাত এবং মাছের তরকারি, টোক-দানা এবং মিষ্টি স্বাসাদু খাবারগুলো কয়েকদিন ধরে পেটপুড়ে খেয়েছি। সেখানকার খাবারগুলো খেতে অনেক মজাদার ছিল। যা আমি কখনো এসব খাবার উপভোগ করতে পারিনি।
  • অনন্য হস্তশিল্পের জন্য স্থানীয় বাজারে নিজের পচ্ছন্দমত অনেকগুলো কেনাকাটা করেছি।
  • ঐতিহাসিক সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানে বনের সৌন্দর্য্য উপভোগ করেছি।

সুন্দরবন ভ্রমণে গিয়ে যে সমস্যাগুলো হয়

  • সুন্দরবনের কিছু কিছু এলাকা আছে মোবাইল ফোনে একদম নেটওয়ার্ক থাকে না। আবার কিছু কিছু এলাকা আছে টেলিটকের নেটওয়ার্ক পাওয়া যায়।
  • শীপে ওঠার আগেই নিরাপদ পানি ও খাবার সাথে নিয়ে উঠতে হবে।
  • শীপের প্যাকেজের বিষয়ে সেখানকার এজেন্সির সাথে কথা বলে জেনে নিতে হবে। তা না হালে সমস্যা হতে পারে।
  • কোন শীপ যাবে তা আগে ভাগেই জেনে নিন।
  • ভ্রমণের জন্য আপনার বাজেটের সমস্যা না থাকলে লাক্সারী শীপে আনন্দের সাথে ভ্রমণ করতে পারেন।
  • নিজের খরচ কমাতে চাইলে ছুটির দিনে যাওয়া যাবে না।
  • সুন্দরবনে প্রবেশ করার সময় অবশ্যই একসাথে থাকবেন। তা না হলে সমস্যা হতে পারে।
  • সুন্দরবন ভ্রমণের সময় অবশ্যই একজন প্রহরী সাথে রাখা প্রয়োজন।
  • যদি শীতের সময় এখানে ভ্রমণ করেন তাহলে অবশ্যই শীতের পোষাক সাথে নিবেন।
  • সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য হয়তো আপনার শরীরের জন্যেও সমস্যা হতে পারে।

সুন্দরবন ভ্রমণে গেলে কোথায় থাকবেন

লঞ্চে ঘুরেছি সেখানেই থেকেছি, আপনী চাইলেও সেখানে থাকতে পারবেন। এছাড়াও নীলকমল ও কাটকার রেস্টহাউজে থাকার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। তবে মোংলা, খুলানা নগরীতের ভালোমানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। সেখানে আপনার বাজেটের মধ্যে থাকতে পারবেন।

সূত্র:- Right News BD

en_USEnglish