একজন সুস্থ ব্যক্তির স্বাস্থ্য রক্ষার্থে রক্তচাপ ১২০/৮০ মিমি মার্কারি থাকা প্রয়োজন। অন্যদিকে, ৯০/৬০ মিমি মার্কারির এর নিচে রক্তচাপকে নিম্ন রক্তচাপ বলে। নিম্ন এবং উচ্চ রক্তচাপ উভয়ই স্বাস্থ্যের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
নিম্ন রক্তচাপ অনেক কারণেও হতে পারে। যেমন উদ্বেগ, গর্ভাবস্থা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, পানি শুন্যতা, রক্তশূন্যতা, পুষ্টির ঘাটতি, হার্টের সমস্যা ইত্যাদি। নিম্ন রক্তচাপের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, অজ্ঞান হওয়া, বমি ভাব, বুকে ধড়ফড়, অলসতা, ঝাপসা দৃষ্টি এবং স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে অসুবিধা।
রক্তচাপ কমে গেলে কী খাবেন
শরীর পানিশূন্য হলে রক্তের ঘনত্ব হ্রাস পায়, যা রক্তচাপ কমায়। তাই অন্যান্য তরল যেমন ফলের রস, কফি, স্যুপ, ডাবের পানি, ঘোল, দুধের সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করুন; লবণ আর চিনি দিয়ে লেবুর রস খেলে রক্তচাপ বাড়ে।
লবণ: লবণ শরীরের রক্তচাপ বাড়ায়। যেহেতু এতে সোডিয়াম থাকে। কিন্তু অনেকে পানিতে শুধু লবণ খায়; যা শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। সে জন্য এক গ্লাস পানিতে ২ চা চামচ চিনির সঙ্গে ১ চা চামচ লবণ মিশিয়ে নিলে ভালো হয়।
স্যালাইন: লবণাক্ত খাবার নিম্ন রক্তচাপে সবচেয়ে উপকারী ও তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর। সেক্ষেত্রে রক্তচাপ খুব বেশি পরিমাণে হলে সাথে সাথে স্যালাইন পান করুন। লবণাক্ত পানির চেয়ে স্যালাইন ভালো কাজে দেয়।
যেসব খাবার রক্তস্বল্পতা নিরাময় করে: মূলত, রক্তস্বল্পতা নিরাময়কারী সব খাবারই রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। আয়রন, ভিটামিন সি, বি ১২ এবং ফোলেট রক্তাল্পতার প্রয়োজনীয় পুষ্টি। ডাল, শাকসবজি, আলু, মসুর ডাল এবং সেদ্ধ ডিমে ফোলেট থাকে। টক ফলগুলিতে ভিটামিন সি রয়েছে। এছাড়াও, গরুর মাংস এবং মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, ফোর্টিফাইড সিরিয়াল, ছোলা, পালং শাক, মটরশুটি, লাল শাক, কুমড়ার বীজ এবং শুকনো ফল আয়রনের ভাল উৎস। এগুলো খাবারেও সোডিয়ামের পরিমাণ কিছুটা হলেও বেশি থাকে।
বিটের রস: বিটরুটে সোডিয়াম বেশি থাকে। তাই স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বিটরুটের রস রক্তচাপ সহজাত রাখতে সহায়তা করে।
স্যুপ: মুরগির মাংস, গরুর মাংস, সবজি, ডাল এবং যেকোনো স্যুপে সোডিয়াম বেশি থাকে। স্যুপ রান্নাযর সময় যেকোনো সস সুবিধার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সয়া সস, টমেটো সস, ইত্যাদি সেহেতু সসে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম যুক্ত থাকে।
টক ফল: অনেকেই মনে করে থাকেন টক ফল খেলে রক্তচাপ কমে যায়। কিন্তু টক ফলের মধ্যে ভিটামিন সি সহ সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ ও ভিটামিন রয়েছে। যেমন পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম আর প্যান্টোথেনিক; যা সোডিয়ামের উপকারিতা বজায় রাখতে অনেক সাহায্য করে। অবশ্য অনেক ধরণের টক ফল যেমন মাল্টা, কমলা, লেবু ইত্যাদি দ্রুতগতিতে শরীরে রক্তচাপ বাড়াতে সাহায্য করে।
মাখন: সোডিয়ামের জন্য দারুণ উৎস। সেজন্য মাখন দিয়ে বাদাম ভেজে নিন। বাটার মিল্কের সাথে লবনাক্ত বিস্কুট খান। পনির, আচার ও লবনাক্ত বিস্কুট সোডিয়ামের জন্য ভালো উৎস। রক্তচাপ কম গেলে খাদ্যের মধ্যে এসব খাবার সীমাবদ্ধ রাখা যেতে পারে।
ক্যাফেইন: শক্তিশালী কফি, হট চকলেট উদাহরণস্বরুপ যেকোনো শক্তিশালী ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। যে সব ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে এই কঠিন সমস্যায় ভুগছেন, তারা সকালে বেল ভারী নাস্তার পর এক কাপ শক্তিশালী ক্যাফেইন সমৃদ্ধ পানী পান করতে পারেন।
সে জন্য মনে রাখবেন, যেসব খাবারে অতি তাড়াতাড়ী রক্তে শোষিত হয়, রক্তচাপ কমে গেলে এমন খাবার কম খাওয়ায় ভালো।
সূত্র:- Right News BD