অনেকেই আছেন যাদের শরীরে বছরের ৩৬৫ দিনেই চুলকানি জনিত সমস্যায় ভোগেন। তাদের জন্যই আজকে শরীরে চুলকানি সমস্যা সমাধান করার জন্য কিছু ক্রিমের নাম ও ঘরোয়া উপায়ে দূর করার সম্পর্কে জেনে দিব।
অনেকেই আছেন অন্যের গায়ে চুলকানি দেখলে এমনিতেই হাত পা থেকে শুরু করে পুরো শরীর চুলকানি ওঠে। আমাদের আশেপাশে এমন অনেকে আছেন যারা সারা বছর চুলকানি রোগে ভোগেন। তাছাড়া খাবারে এ্যালার্জি আছে মনে করে চুলকানি হওয়ার ভয়ে খাবার খেতেও ভয় পান।
আশা করি আজকের এই পোষ্টে আপনার গায়ের চুলকানি দূর করার কয়েকটি ক্রিমের নাম ও চুলকানি বেশি হলে কি করা উচিৎ, চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম সর্ম্পকে-
দ্রুত শরীরে চুলকানি দূর করার ক্রিম
আপনার গায়ের চুলকানি দূর করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম ও ঔষধ রয়েছে যেমন-
- অ্যালোভেরা ক্রিম
- ক্যালামাইন ক্রিম
- বেটামেথ্যাসোন ক্রিম
- হাইড্রোকর্টিসোন ক্রিম
- বেনজিল পারঅক্সাইড ক্রিম
- স্যালিসিলিক অ্যাসিড ক্রিম
- ক্লোরহেক্সিডিন ক্রিম
চুলকানি দূর করার ঔষধের নাম
- অ্যান্টিহিস্টামিন
- অ্যান্টিবায়োটিক
- ওষুধী গাছ
আপনার শরীরে অতিরিক্ত চুলকানি হওয়ার কারণে এসব ক্রিম বা ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, অ্যালার্জি জনিত সমস্যার কারণে চুলকানি দেখা দিলে অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিবায়োটিক। তাছাড়া আপনার ত্বক শুষ্ক থাকার কারণেও চুলকানি হলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
নিমেষেই চুলকানি দূর করার উপায়
অতিরিক্ত চুলকানি দূর করার কিছু প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। যেই উপাদান ব্যবহার করেও আপনার চুলকানি দূর করতে পারবেন।
নিমপাতা: হচ্ছে চুলকানি রোগের জন্য অত্যন্ত কার্যকরি একটি উপাদান। চুলকানি দূর করার জন্য প্রথমে নিমপাতা ভালোকরে ধুয়ে পিষে নিতে হবে। তারপর আপনার শরীরে যেসব জায়গায় চুলকানি হয় সেখানে নিম পাতার পেস্ট লাগান। তাছাড়া আপনি যদি এই প্রক্রিয়া না করতে পারেন সেক্ষেত্রে নিমপাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়েও গোসল করতে পারেন। এটি করলে আপনার শরীরের সমস্ত চুলকানি নিমেষেই কমে যাবে।
অ্যালোভেরা: একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এর বহু উপকারিতা রয়েছে। সেই সব উপকারিতার মধ্যে দিয়ে আপনার গায়ের চুলকানি দূর করতে ভালো কাজে দেয়। সে জন্য একটি তাজা অ্যালোভেরা পাতা নিন। পাতা থেকে অ্যালোভেরা জেল বের করে আপনার চুলকানি স্থানে লাগিয়ে নিন। দেখবেন কিছুক্ষণ পর আপনার চুলকানি দ্রুতই কমে যাবে।
নারিকেল তেল: আমাদের বাসার আশে পাশের যেকোন দোকানে সহজে পাওয়া যায়। আমরা জানি নারকেল তেল চুলের পুষ্টি জন্য। তাছাড়া চুলের যত্নের পাশাপাশি নারিকেল তেলের আরো কিছু গুনাগুন রয়েছে। চুলকানি স্থানে বা কোন পোকামাকড় কামড়ে দিলে ঐ স্থানে নারিকেল তেল ভালোভাবে লাগিয়ে দিয়ে চুলকানি সহ ব্যথা সেরে যায়।
লেবুর রস: চুলকানি দূর করার জন্য একটি বিশেষ উপাদান। একটি লেবুর রস করে নিন। তারপর চুলকানি হওয়া স্থানে লেবুর রস লাগিয়ে রস শুকানো পর্যন্ত কিছুক্ষণ সময় অপেক্ষা করুন। এতে করে দেখবেন চুলকানি অনেকটাই কমে গিয়ে আরাম অনুভুত হবে।
চুলকানি দূর করার ঘরোয়া উপায়
কিছু কিছু ক্ষেত্রে গায়ে অতিরিক্ত চুলকানি দেখা দিলে ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করলেও দ্রুতই চুলকানি সেরে যায়। সেই উপায়গুলো হচ্ছে-
- ঠান্ডা পানি দিয়ে ত্বক ধুয়ে ফেলতে হবে
- ভালো মানের লোশন বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা
- অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা
- ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করা
- ঠান্ডা চা কিংবা দুধে ভিজিয়ে রাখা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে ফেলা
এতেও যদি চুলকানি অনুভত হয় তাহলে, একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিন।
ত্বকের চুলকানি দূর করার টিপস
- আপনার ত্বক পরিষ্কার রাখুন
- ত্বকের যত্ন নেওয়ার সময় জোরো ঘষবেন না
- আটসাট পোশাক পরবেন না
- নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
- অ্যালার্জি আছে এমন খাবার ছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার খান
গায়ে চুলকানি বেশি হলে কী করা উচিত?
আপনার যদি অ্যালার্জি থেকে তীব্র চুলকানি হয় সেক্ষেত্রে, একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হওয়া উচিত। কারণ আপনার গায়ে তীব্র চুলকানি মাত্রানুযায়ী ডাক্তার চুলকানি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করবেন।
পরিশেষে: শরীরে চুলকানি সম্পর্কে কিছু কথা
আশা করি আপনি আজকের এই আলোচনায় শরীরে চুলকানি দূর করার বিষয়ে বিস্তারিত একটি ধারণা পেরেছেন। পাশাপাশি ঔষধ ছাড়া ঘরোয়া উপায়ে চুলকানি নিরাময়ের ব্যাপারেও জানতে পেরেছেন।
আপনার শরীরে কোন ধরনের চুলকানি হয় আর চুলকানি দূর করার জন্য কি ক্রিম বা ঔষধ ব্যবহার করছেন তা কমেন্টে জানাতে পারেন।
আর একটা বিষয় হচ্ছে, আপনার যদি চুলকানি খুব বেশি দেখা দেয় তাহলে, দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্রিম বা ঔষধ সেবন করাই ভালো।
সূত্র:- Right News BD