আমরা কমবেশি সবাই জানি ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার। ডিমে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ভিটামিন রয়েছে। এটি শরীরের জন্য বেশ উপকারী। দুঃখ জনক হলেও সত্যি ডিম খাওয়ার উপকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি অপকারিতাও রয়েছে।
স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে পুষ্টির দিকে লক্ষ্য রেখে ডিম খাওয়া উচিত।
প্রিয় পাঠকগণ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে আজকে যে পোষ্টটি শেয়ার করতে যাচ্ছি, পোষ্টটি একটু লম্বা হতে পারে।
আপনার শারীরিক দিক বিবেচনা করে এখানে ডিমের উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিতে পারেন।
চলুন দেরী না করে জেনে নেয়া যাক ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে-
ডিম খাওয়ার উপকারিতা
ডিমে থাকা উচ্চ মানের প্রোটিনের উপকারিতা
ডিমে রয়েছে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই প্রোটিনের পরিমাণ শরীরের পেশী গঠনে সহায়ক।
শরীরের কোষ পুনর্গঠনে ও টিস্যুর রক্ষণাবেক্ষণ করতে সাহায্য করে।
পেশী বৃদ্ধি ও পুনর্গঠন:
ডিমের প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিডে সমৃদ্ধ, যা পেশী বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। সকালে ব্যায়াম করার পর ডিম খেলে পেশীর দ্রুত পুনর্গঠন হয়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক:
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার আমাদের বেশি সময় ধরে পেট ভরা অনুভূতি দেয়, ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ডিম সকালের নাশতায় খেলে সারা দিন ক্ষুধা কম অনুভব হয়, যা ওজন কমানোর জন্য সহায়ক।
শক্তি বৃদ্ধি:
ডিমের প্রোটিন দ্রুত শরীরে শক্তিতে পরিণত হয়, যা শারীরিক কার্যক্রমে সহায়ক। ডিম খাওয়ার ফলে আমাদের সারা দিন কর্মক্ষম রাখতে সাহায্য করে।
ডিমের পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে, তবে একটি সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে ডিম খাওয়া সর্বোত্তম।
চর্বি ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ
ডিম একটি পুষ্টিকর খাবার যা প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলের সমৃদ্ধ উৎস। তবে ডিম খেলে চর্বি ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি।
আসুন, ডিমের উপকারিতা, কোলেস্টেরলের প্রভাব কিভাবে চর্বি নিয়ন্ত্রণে রাখে তা বিশদভাবে জানি।
ডিমের কোলেস্টেরল ও ভালো চর্বি: পার্থক্য জানুন
ডিমের কুসুমে কোলেস্টেরল থাকলেও এটি স্বাভাবিক চর্বি হিসেবে কাজ করে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীরের জন্য ভালো চর্বি, যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) কমিয়ে দেয়।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ডিমে এই উপাদানটি থাকে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। এটি রক্তনালীর প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিকর ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- ভালো কোলেস্টেরল (HDL): ডিমের প্রোটিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান শরীরের ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে সাহায্য করে, যা শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) দূর করতে কার্যকর।
ডিম খেলে চর্বি ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায়
- সিদ্ধ ডিম বেছে নিন: সিদ্ধ ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, এতে অতিরিক্ত তেল বা চর্বি ব্যবহার করতে হয় না। এটি ক্ষতিকর চর্বি শরীরের প্রবেশ করে না।
- কুসুমের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করুন: যদিও ডিমের কুসুমে পুষ্টি উপাদান রয়েছে, তবুও যদি আপনি কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, সপ্তাহে ৩-৪ দিন একটি কুসুম খেতে পারেন। বাকি সময়ে শুধু সাদা অংশ খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- সবুজ শাকসবজির সাথে ডিম: সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, ব্রোকলি, বা টমেটোর সাথে ডিম খেলে শরীরের ফাইবার সরবরাহ করে, যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
সঠিক পদ্ধতিতে ডিম খেলে ডিমের পুষ্টিগুণ উপভোগ করা যায় এবং শরীরের স্বাস্থ্যের উন্নতি নিশ্চিত করা যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে ডিম খাওয়ার উপকারিতা
ডিমের পুষ্টিকর শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডিমের পুষ্টিগুণ অনেক উপকারী। ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে ডিম খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
ডিম খাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ কীভাবে কাজ করে?
ডিমের প্রোটিন, ভিটামিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
ডিম খেলে পেট ভরে ফলে সারা দিন ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ কম থাকে। এ কারণে ডিম ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
- উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ: ডিমের মধ্যে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরে ক্যালোরি বার্ন করে এবং ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে, ফলে ওজন কমানো সহজ হয়।
- লো ক্যালোরি খাবার: একটি মাঝারি আকারের ডিমে মাত্র ৭০-৮০ ক্যালোরি থাকে, যা ওজন কমানোর জন্য আদর্শ। এটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন হলেও পুষ্টি সমৃদ্ধ, ফলে এটি শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।
- মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়ক: ডিমে থাকা প্রোটিন মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। প্রোটিন হজম করতে ক্যালোরি খরচ হয়, যা শরীরের ক্যালোরি বার্নের হার বাড়িয়ে দেয়। ফলে, এটি ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- অ্যাপেটাইট কন্ট্রোল: সকালের নাশতায় ডিম খেলে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষুধা কম অনুভব হয়। এতে করে অন্য সময় অপ্রয়োজনীয় স্ন্যাকস বা উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী।
ওজন কমানোর জন্য ডিম খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি
সিদ্ধ ডিম ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী।
এটি রান্না করতে তেল বা অতিরিক্ত চর্বি ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না, ফলে এটি কম ক্যালোরি সম্পন্ন হয় এবং পুষ্টিগুণ অক্ষত থাকে।
- অমলেটের সাথে সবজি: ডিমের অমলেটের সাথে সবজি যোগ করলে এটি আরও পুষ্টিকর হয়। পেঁয়াজ, টমেটো, ক্যাপসিকাম, এবং পালং শাকের মতো সবজি যোগ করে ফাইবার ও ভিটামিন বাড়ানো যায়, যা হজমে সহায়ক হিসেবে পেট ভরা রাখতে কার্যকর।
- কুসুম নিয়ন্ত্রণ: যদি আপনি কোলেস্টেরলের সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হন, তাহলে প্রতিদিন একাধিক ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন এবং কুসুমের পরিমাণ কমাতে পারেন। তবে, কুসুমে অনেক পুষ্টি উপাদান থাকে, তাই এটি পুরোপুরি এড়ানো উচিত নয়।
ডিমের পুষ্টিগুণ এবং এর প্রভাব
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হাড় ও পেশীর জন্য উপকারী। এটি শরীরের প্রদাহ কমায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন বি১২: ডিমে থাকা ভিটামিন বি১২ শরীরে শক্তি জোগায় এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
- কোলিন: এই উপাদানটি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং শরীরের ফ্যাট মেটাবলিজমকে উন্নত করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে ডিমের উপকারিতা
অনেক মানুষ মনে করেন, ডিমের কুসুমে উচ্চ মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, ডায়েটারি কোলেস্টেরল বা খাদ্য থেকে প্রাপ্ত কোলেস্টেরল সবসময় রক্তের কোলেস্টেরল মাত্রাকে বৃদ্ধি করে না।
বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়া নিরাপদ এবং এটি হার্টের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক হতে পারে।
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড: ডিমে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রক্তনালীর প্রদাহ কমাতে এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে সহায়ক। এটি ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা উন্নত করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
- ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়: ডিম খেলে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ে, যা শরীর থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল (LDL) কমাতে কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ডিম খান, তাদের ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি হয়।
- প্রোটিন ও শক্তি সরবরাহ: ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রোটিন শরীরের কোষ পুনর্গঠন এবং শক্তি যোগাতে সহায়ক, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
- ভিটামিন ও মিনারেলের উৎস: ডিমে ভিটামিন ডি, বি১২, এবং কোলিন থাকে, যা হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষায় সহায়ক। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়ামের শোষণ বাড়িয়ে হাড়কে শক্তিশালী রাখে, যা হার্টের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সহায়ক।
মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ডিমের মধ্যে চোলিন রয়েছে, যা স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
চোলিন মস্তিষ্কের নতুন কোষ তৈরিতে ঠিকভাবে পৌঁছাতে সহায়ক হয়।
ত্বকের স্বাস্থ্য এবং হাড়ের উন্নতি
ডিমে ভিটামিন এ, ডি রয়েছে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বায়োটিন ত্বকের কোষ গঠন এবং পুনর্গঠনে সাহায্যের পাশাপাশি ত্বককে নরম রাখে।
ডিমের ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখার
ডিমের মধ্যে লুটেইন ও জেক্সানথিন নামে দুইটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা চোখের ম্যালা এবং রেটিনার ক্ষতি থেকে রক্ষা করে।
এই উপাদানগুলো চোখের দৃষ্টি শক্তি এবং স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক।
চর্বি কমাতে সহায়তা
ডিমে রয়েছে প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
ডিম খাওয়ার ফলে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা থাকে, যা অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণের প্রবণতা কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি
ডিমে রয়েছে ট্রিপ্টোফ্যান এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা মস্তিষ্কের সেরোটোনিন স্তর বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
সেরোটোনিন একটি ‘ফিল গুড’ নিউরোট্রান্সমিটার যা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
ডিমের প্রোটিন আমাদের পেটকে ভরা রাখতে সহায়তা করে, যা ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ করে।
এটি সকালের নাস্তায় ডিম খাওয়া ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে কারণ এটি অতিরিক্ত স্ন্যাক খাওয়ার প্রবণতা কমায়।
শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক
ডিমের প্রোটিন, চর্বি এবং ভিটামিন বি আমাদের দেহকে প্রয়োজনীয় শক্তি দেয়।
তাছাড়া মেটাবলিজম বৃদ্ধিতে সহায়তা করার পাশাপাশি আমাদের সারা দিন সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে।
ডিম খাওয়ার অপকারিতা
যদিও ডিম অনেক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ, তবে কিছু ক্ষেত্রে এটি শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে যেগুলো ডিম খাওয়ার ফলে হতে পারে। এখানে ডিম খাওয়ার কিছু সম্ভাব্য অপকারিতা আলোচনা করা হলো:
কোলেস্টেরল বৃদ্ধি
ডিমের কুসুমে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল রয়েছে, যা কিছু মানুষের ক্ষেত্রে রক্তে কোলেস্টেরল লেভেল বাড়াতে পারে। উচ্চ কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষ করে যাদের হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের ডিম খাওয়ার আগে সতর্ক হওয়া উচিত।
অ্যালার্জি
অনেক মানুষ ডিম খেলে অ্যালার্জি সমস্যার সম্মুখীন হয়। এটি বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
ডিম অ্যালার্জির ফলে ত্বকের চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, পেট ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি মারাত্মক অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে।
হরমোনের সমস্যা
বাজারে পাওয়া কিছু ডিমে হরমোন ব্যবহার করা হয়, এতে করে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে।
এটি পুরুষ ও নারীদের ক্ষেত্রেই হরমোন সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ওজন বৃদ্ধি
যদিও ডিম প্রোটিন সমৃদ্ধ, সেহেতু অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিশেষ করে যদি ডিম ভাজার জন্য অতিরিক্ত তেল বা মাখন ব্যবহার করার ফলে ক্যালোরি বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি
ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষ করে যদি ডিম বেশি তেলে ভাজা হয়, তাহলে এটি খাওয়ার ফলে হার্টের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
ত্বকের সমস্যা
কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ডিম খাওয়ার ফলে ত্বকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মুখের ব্রণের সমস্যা হতে পারে, বিশেষ করে যদি তারা ডিমের কোনো উপাদানে অ্যালার্জি থাকে।
পেটের সমস্যা
ডিম খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের পেটে সমস্যা হতে পারে, যেমন পেটে গ্যাস, বদহজম বা ডায়রিয়া। বিশেষ করে যারা ডিম সহজে হজম করতে পারে না, তাদের ক্ষেত্রে এটি বেশি হয়ে থাকে।
মানসিক স্বাস্থ্য
ডিমের স্যাচুরেটেড ফ্যাট মস্তিষ্কের কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের ফলে মানসিক অবসাদ এবং বিষণ্নতার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ
ডিমের স্যাচুরেটেড ফ্যাট উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
বিশেষ করে যারা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের ডিম খাওয়ার বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।
কিডনি সমস্যা
ডিমে প্রোটিন থাকায় অতিরিক্ত ডিম খাওয়ার ফলে কিডনির ওপর চাপ পড়তে পারে।
বিশেষ করে যদি কারও আগে থেকেই কিডনি সমস্যা থাকে। এটি কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
চোখের দৃষ্টিশক্তির সমস্যা
যদিও ডিমে কিছু চোখের জন্য উপকারী উপাদান রয়েছে, তবে অতিরিক্ত খাওয়া হলে চোখের দৃষ্টিশক্তির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
ডিমে থাকা স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল দৃষ্টিশক্তির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য
ডিম খাওয়ার ফলে কিছু মানুষের কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে যদি অন্যান্য ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার কম খাওয়া হয়।
ডিমে ফাইবার না থাকায় এটি হজমপ্রক্রিয়ায় সমস্যা তৈরি করতে পারে।
বিষণ্নতার লক্ষণ
ডিমে থাকা ফ্যাট এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা যদি অতিরিক্ত হয়ে যায়, তবে এটি বিষণ্নতা এবং মনোবল কমাতে প্রভাব ফেলতে পারে।
কিছু গবেষণা দেখায় যে, অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট গ্রহণের ফলে মানসিক চাপ এবং অবসাদের সমস্যা হতে পারে।
ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে শেষ কথা
ডিম খাওয়ার আগে, ডিম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানা প্রয়োজন।
মূল কারণ হচ্ছে আপনার স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে ডিম খাওয়া উচিত।
আপনার যদি আগে থেকেই স্বাস্থ্যের সমস্যা থাকে। তাহলে একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
সূত্র: Right News BD