সমস্ত দিন নিজেকে পানাহার এবং শরীয়ত মোতাবেক কাজে বিরত থাকার পর, রমজান মাসে ইফতারির সময় একজন রোজাদার ব্যক্তির জন্য সেই সময়টাই অনেক আনন্দের সময়। তবে রমজান মাসে ইফতারির গুরুত্ব নিয়ে মহানবী (সা:) বলেছেন, একজন রোজাদার ব্যক্তির জন্য দু’টি আনন্দের সময় রয়েছে। সেই আনন্দের মধ্যে একটি হলো ইফতার করার সময় যেকোনো নেক দোয়া কবুল হয়ে যায়। আর একটি হচ্ছে কেয়ামতের দিনে স্বয়ং নিজেই আল্লাহ তায়ালার সাথে সাক্ষাত করার সময়। (তিরমিজি, হাদিস নং: ৭৬৬; বুখারি, হাদিস নং : ৭৪৯২; মুসলিম, হাদিস নং ১১৫১)
অন্য দিকে আর এক হাদিসে রাসুল (সা:) বলেছেন, মহান আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন ‘হাদিসে কুদসিতে’ আমার একমাত্র বান্দাদের মধ্যে তারাই আমার সবচেয়ে প্রিয় যারা কিনা রোজা রাখার পর দ্রুত ইফতার করে।’ (তিরমিজি, আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৬০, পৃষ্ঠা: ১৩১)
রোজাদার ব্যক্তিদের দোয়া কবুলের সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে এই হাদিস অনুসারে ইফতারের সময় আনন্দের সেই সময়ে। এছাড়াও ইফতার করার সময়টা একমাত্র আল্লাহ পাকের জন্য ধৈর্যশীলতা ধারণের একটি মুহূর্ত।
এছাড়াও হাদিস অনুযায়ী বর্ণিত রয়েছে, একজন রোজাদার ব্যক্তি ইফতারির সময় দোয়া করলে আল্লাহর নিকট এতটাই আকর্ষণীয় হয় যে মহান আল্লাহ তা’আলা রমজান মাসে সেই সময় ফেরেস্তাগণদের যথাযথভাবে ঘোষণা করেন। সে জন্য রমজান মাসে তোমাদের পূর্বে থাকা সকল দায়িত্ব মাফ করা হলো এবং আগামী দিনের নতুন দায়িত্ব পালনের জন্য আদেশ করা হলো। সেক্ষেত্রে আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন, আমার রোজাদার বান্দাগণ ইফতারির সময় কোনো দোয়া মোনাজাত করবে, ঠিক তখনই তোমরা আমিন! আমিন! আমিন! বলার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
এছাড়াও আরেক হাদিসে বর্ণিত আছে, রোজা থাকা অবস্থায় দোয়া করলে আল্লাহ পাক কখনো ফিরিয়ে দেন না। এ প্রসঙ্গে হযরত মোহাম্মদ (সা:) বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া কখনো নিষিদ্ধ করা হয় না বরং তাড়াতাড়ি কবুল করা হয়। (এক) পিতার দোয়া, (দুই) রোজা পালন করে এমন ব্যক্তির দোয়া এবং (তিন) মুসাফিরের দোয়া। বায়হাকি-হাদিস: ৩/৩৪৫; সিলসিলাতুস সহিহা, আলবানি : ১৭৯৭)
নবীজি (সা:) দোয়া করার গুরুত্ব নিয়ে আরও বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া আল্লাহ তায়ালা কখনো ফেরত দেন না। (১) ন্যায়নিষ্ঠ শাসকের দোয়া। (২) সিয়াম পালন করে এমন ব্যক্তির দোয়া, যতক্ষণ না সেই ব্যক্তি ইফতার করে। (৩) মজলুম ব্যক্তির দোয়া। (মুসনাদে আহমাদ : ৯৭০৪)
এফ এ কিউ
রমজান মাসে একজন ব্যক্তি সারা দিন রোজা রাখার পর মাগরিবের আযানের সময় (সূর্যাস্তের শেষ সময়) মুসলিম ধর্ম পরায়ণ মানুষ ইফতার খেয়ে থাকে। শুধুমাত্র রোজাদার ব্যক্তিদের জন্যই রমজান মাসে ইফতার করার তাৎপর অনেক বেশি থাকে।
ইফতার করার আগে একজন রোজাদার ব্যক্তি তার শারীরিক সুস্থ্যতা, নামাজ, রোজা এবং ইফতার কবুল হওয়ার জন্যই মোনাজাত করা হয়। এছাড়াও রমজান মাসে সূর্যাস্তের পর ইফতারি সামনে নিয়ে মোনাজাত করলে আল্লাহ তায়ালা সেই দোয়া কবুল করেন।
সূর্যাস্তের শেষ হওয়ার সময় মাগরিবের আযান শুরু হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করার সঠিক সময় হয়ে যায়। বুখারি হাদিসের ১৮৩০ নম্বর আয়াতে বর্ণিত আছে ইফতারের সময় হওয়া মাত্র সাথে সাথে ইফতার করাই একমাত্র উত্তম সময়। উত্তম সময়ের মধ্যে ইফতার করলে রোজাদার ব্যক্তির রোজা পরিপূর্ণতা পায়।
সূত্র:- Right News BD