ঈদের ছুটিতে ফাঁকা রয়েছে পুরো রাজধানী ঢাকা শহর। এদিকে ঈদের ছুটিতে বাজারে ক্রেতা নেই বিভিন্ন দোকানগুলোতে। এছাড়াও এই ঈদে অনেক ব্যবসায়ীরাও ঈদের ছুটিতে চলে গেছে নিজের গ্রামের বাড়িতে। তবে ঈদের এক দিন পর রাজধানীর বিভিন্ন বাজারেও বন্ধ রয়েছে অনেক দোকানপাট। আবার অধিকাংশ বাজারে দুই একটি দোকান খোলা দেখা গেলেও কোন ক্রেতা নেই সে সব দোকানগুলোতে। এমতবস্থায় অলসতায় পার করছেন সে সব দোকান মালিকরা।
ঈদের পরের দিন রোববার রাজধানীর মগবাজার, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজার সহ বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, মানুষের বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে মুদিখানার বেশির ভাগই দোকান বন্ধ ছিল। এদিকে মগবাজার ও মালিবাগ বাজারে মাছ-মাংস এবং ডিমের দোকানের মধ্যে দুই একটি দোকান খোলা রয়েছে। এছাড়াও কারওয়ান বাজারে আট থেকে দশটি ব্রয়লার মুরগির দোকান ছিল। তাছাড়াও মাছ এবং ডিমের কয়েকটি মাত্র দোকান খোলা ছিল। মগবাজার এবং মালিবাগ বাজারে খোলা ছিল কয়েকটিমাত্র সবজির দোকান। সব মিলিয়ে সবজির দোকান খোলা ছিল কারওয়ান বাজারে প্রায় ১০-২০টির মতো। এর মধ্যে অধিকাংশ দোকান খোলা দেখা গেলেও ক্রেতা না থাকায় চাহিদা অনেকটাই কম ছিল।
এদিকে বিশেষ করে রাজধানীর মোট তিনটি বাজারে বেগুন, ঝিঙে ও পটোল কেজি প্রতি দাম ছিল ৫০ -৬০ টাকা। এছাড়াও ৬০-৭০ টাকা কেজি দরে করলা বিক্রি হয়েছে। ভালোমানের টমেটো ৩০-৪০ টাকা। কাঁচা মরিচ কেজি প্রতি ৮০-১০০ টাকা। ভালোমানের প্রত্যেকটি লাউয়ের দাম ছিল ৬০-৮০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও লেবুর হালি ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল।
ঈদের ছুটির কারণের বাজারে ভালো চাহিদা না থাকলেও কমেনি কিন্তু ব্রয়লার মুরগির দামও। ঈদের পূর্বের দাম অনুযায়ী বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। এছাড়াও আজকেও ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ২৪০-২৬০ টাকা ও সোনালি মুরগি ৩৫০-৩৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে পূর্বের বাজার অনুযায়ী কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২০০-২১০ টাকা পর্যন্ত। ৩৩০ টাকা কেজি প্রতি সোনালি মুরগির দাম ছিল ।
কারওয়ান বাজারের একজন ব্রয়লার মুরগি বিক্রেতা বলেন, ‘ঈদের পূর্বের বাজারের তুলনায় মুরগির দাম কিছুটা হওলও বেড়ে গেছে। কিন্তু বাজারে কোন প্রকার ক্রেতা থাকলেও আজকে প্রায় ৮০ হাজার টাকার মত মুরগি বিক্রি করতে পেরেছি। ঈদের ছুটির দিন ছাড়া এমনিতে স্বাভাবিক দিনগুলোতে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকার মুরগি বিক্রিয় হয়।
ঈদের ছুটি হওয়ার কারণেও বন্ধ রয়েছে সরকারি সংঘ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। সেজন্য গতকালও বাজারের বিভিন্ন পণ্যের দরদামের নির্ধারিত তালিকা প্রকাশ করেনি এই সরকারি সংস্থাটি। এর ফলে এসব বাজারগুলোতে বিভিন্ন পণ্যের নির্ধারিত সরকারি দামের কোন রকম তথ্যও পাওয়া যায়নি। এমতবস্থায় ঈদের ছুটির পূর্বে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি’র) তথ্য অনুযায়ী, বাজারগুলোতে সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে চিনির মূল্য অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রিয় হচ্ছে প্রায় ১১৫-১২০ টাকায়।
এছাড়াও রাজধানীর কয়েকটি বাজারে বিক্রেতাদের সাক্ষাৎকারে জানা যায়, এই ঈদের ছুটিতে যে সব ব্যবসায়ী বাড়িতে যাননি, সে সব ব্যবসায়ী আজ মূলত দোকান খুলে বসে আছেন। ক্রেতা পাবেননা জেনেও সে সব ব্যবসায়ী বিক্রয়ের আশায় দোকান খুলে বসে আছেন। ক্রেতা না থাকায় এতে করে অনেকরই আশা পূরণ হলেও অনেক বিক্রেতারই আশা পূরণ হয়নি হয়নি বলে জানা যায়।
কারওয়ান বাজারের একজন ফল ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রত্যেক বছরের ঈদের ছুটিতে বেশির ভাগেই কারওয়ান বাজারে ক্রেতা অনেকটাই কম থাকে। তারপরও বিক্রি করার আশায় দোকান খুলে বসে আছি। তবে স্বাভাবিক দিনের মতো বেচাকেনা করার জন্য বসেছি তা কিন্তু নয়। ঈদের ছুটি কাটানোর জন্য গ্রামে যাইনি, বিধায় বাসায় কোন কাজ না থাকায় সে জন্য দোকান খুলে কিছুটা সময় কাটাচ্ছি বলে জানান তিনি।
সূত্র:- Right News BD