কক্সবাজারে সুগন্ধা পয়েন্টে সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে পর্যটকদের। আজ শুক্রবার সকাল ১১টার সময় প্রায় ২৫ হাজারেরও বেশি পর্যটকরা সাগরে নেমেছিলেন। আকাশ পরিস্কার থাকার কারণে বাতাস বা বৃষ্টি হওয়ার কোন রকম প্রভাব ছিল না। সে সময় সমুদ্র অনেকটা ছিল শান্ত। বেলা আড়াইটার কিছুক্ষণ পরে হঠাৎ করে আকাশে কালো মেঘ জমতে শুরু করে। তারপর কিছুক্ষণের মধ্যেই সূর্যের গায়ে কালো মেঘ এসে ঢেকে যায়। বইতে থাকে প্রবল ঝোড়ো হাওয়া। তারপর বিকাল তিনটার সময় অতি বৃষ্টি শুরু হয়। পরে বিকাল সাড়ে তিনটার সময় সেখানে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেওয়া হয়। তারপর ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের বিচ কর্মীরা কক্সবাজারে আসা সমস্ত পর্যটকদের পানিতে গোসল করার জন্য সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা করছেন।
আবহাওয়া অফিসের সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজারের উপকূলে প্রায় ৯৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। এই প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কেন্দ্রের প্রায় ৭৪ কিলোমিটার বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার নির্ণয় করা হয়। এটি দমকা হাওয়া অথবা ঝোড়ো হাওয়ায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বেড়েই চলেছে। অতিমাত্রায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কেন্দ্র থেকে আশপাশের এলাকায় সাগর খুবই ক্ষুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চট্টগ্রাম সহ কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরের দূরবর্তী ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেতের পরিবর্তে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এচাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগরে থাকা সব জেলেদের মাছ ধরার নৌকাগুলো এবং ট্রলারগুলোকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।
কক্সবাজারে সমূদ্র সৈকতের নিখোঁজ উদ্ধার তৎপরতায় দায়িত্বরত বেসরকারি লাইফ গার্ড প্রতিষ্ঠান সি সেফ-এর সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, আজ শুক্রবার সকাল থেকে বেলা প্রায় আড়াইটা পর্যন্ত সমূদ্র সৈকতের আবহাওয়া পরিবেশ অনেক শান্ত ও স্বাভাবিক ছিল। তারপর বেলা আড়াইটার কিছুক্ষণ পরেই হঠাৎ করে আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যায়। আকাশে কালো মেঘ জমতে থাকে, তারপর ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই বৃষ্টি হয়, এ সময় দমকা হাওয়া বইতে থাকে। এছাড়াও সমুদ্রের পানির ঢেউয়ের উচ্চতা কিছুটা হলেও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও সাগর ধীর গতিতে উত্তাল হচ্ছে।
সেখানে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিকাল ৫টার আগেই পর্যটকদের গোসলে নামতে কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর আগেও সমুদ্রের পানিতে থাকা কয়েক হাজার পর্যটককে মোখা ঘূর্ণিঝড়ের কথা বলে বুঝিয়ে সমূদ্র থেকে তুলে আনা হয়েছে। এমতবস্থায় এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে কোনো পর্যটক কিংবা কোনো ব্যক্তি যেন কোন ভাবেই সমুদ্রে গোসল করতে না পারেন সে জন্য সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে। এরকম পরিস্থিতি মোবাবেলা করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ, জেলা প্রশাসনের বিচকর্মী সহ লাইফ গার্ডের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সর্তক করার জন্য সমূদ্র সৈকতজুড়ে একাধিক লাল পতাকা ওড়ানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ আরও বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অন্তত ২৫ হাজার পর্যটক সমুদ্র সৈকতে এসেছেন। তাদের মধ্যে প্রায় ১২ হাজার পর্যটক সমুদ্রের পানিতে নেমে গোসল সেরেছেন। তবে বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে পর্যটকদের সমুদ্রের পানিতে গোসল করতে না নামার জন্য নিষেধ করা হচ্ছে।
সূত্র:- Right News BD