পিজ্জা এমন একটি খাবার, যা সবাই পছন্দ করে। বাইরে রেস্টুরেন্টে গিয়ে পিজ্জা খাওয়ার মজাই আলাদা। তাদের পিজ্জার মত যদি নিজের অভিজ্ঞতায় ঘরে বসে সুস্বাদু পিজ্জা তৈরি করা যায়, তাহলে আনন্দতটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। বিশেষত আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি প্রথমবার পিজ্জা বানাতে গিয়ে আমাকে বেশ ঝামেলা মনে হয়েছিল, কিন্তু পরপর চেষ্টা করার পর এখন খুব সহজেই রেস্তোরার মত পিজ্জা বানিয়ে ফেলতে পারি। আজ আপনাদের কাছে শেয়ার করব কিভাবে ঘরেই মজাদার পিজ্জা তৈরি করা যায় সেই ৫টি সহজ উপায় সম্পর্কে।
রেস্তোরার মত ঘরে বসে সুস্বাদু পিজ্জা তৈরির সহজ উপায়
১. ঠিকঠাক মত ডো তৈরি করা
পিজ্জার মূল মজাটা কিন্তু এর বেস বা ডো-তে। ডো যত নরম হবে, পিজ্জাও তত সুস্বাদু হবে। আমি নিজে ডো তৈরির জন্য সাধারণ ময়দা, ইস্ট, চিনি, লবণ, পানি ও অলিভ অয়েলের মিশ্রণ ব্যবহার করি। একবারের জন্য আপনিও চেষ্টা করতে পারেন:
উপকরণ:
- ২ কাপ ময়দা
- ১ চা চামচ ইস্ট
- ১ চা চামচ চিনি
- আধা চা চামচ লবণ
- ৩ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
- আধা কাপ গরম পানি
পদ্ধতি:
১. প্রথমে গরম পানিতে ইস্ট ও চিনি মিশিয়ে রাখুন। ৫-১০ মিনিট পর এটি ফুলে উঠবে।
২. এরপর ময়দার সঙ্গে ইস্টের মিশ্রণ, লবণ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে নরম ডো তৈরি করুন।
৩. ডো ঢেকে ১ ঘণ্টা রেখে দিন, যাতে এটি ফুলে ওঠে।
কিছু সময় ধৈর্য ধরুন, কারণ ভালো ডোই মজাদার পিজ্জার প্রথম ধাপ।
২. মজাদার সস তৈরি করা
সুস্বাদু পিজ্জার জন্য ভালো সস অপরিহার্য। আমি সাধারণত টমেটো বেসড সস বানাই, যা পিজ্জার স্বাদ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়।
উপকরণ:
- ২টি পাকা টমেটো (কুচি করে কাটা)
- ১ টেবিল চামচ টমেটো পেস্ট
- রসুন কুচি (১ চা চামচ)
- লবণ, চিনি, ওরেগানো ও বাসিল
পদ্ধতি:
১. প্যানে সামান্য তেল দিয়ে রসুন ভাজুন।
২. টমেটো কুচি দিয়ে নাড়ুন এবং টমেটো পেস্ট যোগ করুন।
৩. লবণ, চিনি ও মসলা দিয়ে সস ঘন করে রান্না করুন।
বিশেষত এই সস পিজ্জার প্রতিটি কামড়ে ভিন্নমাত্রা স্বাদ যোগ করবে।
৩. সঠিক টপিং বাছাই করা
পিজ্জার টপিংই মূলত এর বৈচিত্র্য তৈরি করে। আপনি পছন্দমতো যে কোনো টপিং দিতে পারেন।
আমার প্রিয় টপিংগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- চিকেন টুকরো
- পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম ও টমেটো
- মাশরুম ও জলপাই
- মোজারেলা চিজ
টপিংগুলোর মধ্যে ব্যালান্স রাখতে হবে। খুব বেশি বা কম টপিং দিলে পিজ্জার স্বাদ ঠিকভাবে প্রকাশ পায় না।
৪. চিজের সঠিক পরিমাণ ব্যবহার করা
পিজ্জা মানেই চিজের অতুলনীয় স্বাদ। মোজারেলা চিজ পিজ্জার জন্য সেরা। আমি সাধারণত গ্রেট করা মোজারেলা ব্যবহার করি। চিজের পরিমাণ আপনার পছন্দ অনুযায়ী কম-বেশি করতে পারেন। তবে বেশি চিজ দিলে পিজ্জার উপরে একটি সুন্দর গোল্ডেন ক্রাস্ট তৈরি হয়।
৫. উত্তমভাবে বেক করা
অবশেষে আসে পিজ্জা বেক করার ধাপ। আমি সাধারণত প্রি-হিট করা ওভেনে ১৮০°C তাপমাত্রায় ১৫-২০ মিনিট পিজ্জা বেক করি। তবে আপনার যদি ওভেন না থাকে, তাহলে চুলায় ঢাকনা দিয়ে বেক করতে পারেন।
পিজ্জা তৈরির ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
প্রথমবার পিজ্জা বানাতে গিয়ে ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে ধীরে ধীরে আপনি নিজেই বুঝে যাবেন, কীভাবে আপনার স্বাদমতো পিজ্জা তৈরি করবেন। ঘরে তৈরি পিজ্জার সবচেয়ে ভালো দিক হলো, আপনি নিজের ইচ্ছেমতো স্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহার করতে পারবেন। আজই চেষ্টা করুন এবং ঘরে বসে উপভোগ করুন একটি সুস্বাদু পিজ্জা।
আপনার পিজ্জা বানানোর অভিজ্ঞতা জানাতে ভুলবেন না!
সুত্র: Right News BD
এফএকিউস
পিজ্জা সাধারণত খামির মিশ্রণ থেকে তৈরি করা ডো দিয়ে শুরু হয়। এই ডো গোলাকৃতি করে নেয়া হয়। তারপরে টমেটো সস, চিজ এবং পছন্দের টপিংস যেমন চিকেন, পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, মাশরুম, অলিভ ইত্যাদি দিয়ে সাজিয়ে ওভেনে বেক করা হয়।
হোমমেড পিজ্জা সুস্বাদু করতে টাটকা চিজ ব্যবহার করুন। বাড়িতে তৈরি টমেটো সস বা নিজস্ব স্পাইস ব্লেন্ড যোগ করুন। পিজ্জার বেস পাতলা বা ঘন করার জন্য নিজের পছন্দমতো ডো প্রস্তুত করুন। বেকিং-এর সময় টপিংস সঠিকভাবে ব্যালেন্স করুন।
সবচেয়ে জনপ্রিয় পিজ্জা টপিংসের মধ্যে রয়েছে:
পেপারোনি
মাশরুম
মোজারেলা চিজ
গ্রিলড চিকেন
পেঁয়াজ ও ক্যাপসিকাম
অলিভ ও জালাপেনো
বারবিকিউ সস বা হট সস
সম্পূর্ণ গমের বেস স্বাস্থ্যকর। এটি ফাইবার ও পুষ্টিগুণ বেশি সমৃদ্ধ এবং কম ক্যালোরি যুক্ত। এছাড়াও, পাতলা ক্রাস্ট পিজ্জা অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট এড়াতে ভালো।
অতিরিক্ত পরিমাণে পিজ্জা খেলে ওজন বাড়ার সম্ভবনা থাকে। তার কারণ এতে চিজ, কার্বোহাইড্রেট এবং উচ্চ ক্যালোরি থাকে। তবে স্বাস্থ্যকর উপকরণ ও কম চিজ ব্যবহার করলে এটি তুলনামূলক কম ক্যালোরি যুক্ত হতে পারে।