মাথার উকুন থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায় কি?

মাথার উকুন হচ্ছে একধরণের বিরক্তিকর সমস্যা। মাথায় উকুন বাসা বেঁধেছে তখন অস্বস্তি লাগে তার সাথে দুই হাত কিছুতেই নিচে রাখা যায় না শুধু মাথায় চুলকোতেই হয়। তাছাড়া পুরুষদের তুলনায় মেয়েদের মাথায় বেশি চুল থাকায় সহজেই উকুন বাসা বাধতে পারে।

উকুনের যন্ত্রণায় ঘন ঘন উকুন নাশক সাবান, শ্যাম্পু ব্যবহার করেও চুলের যত্ন নিলেও কিছুদিন পর আবার আগের মত উকুন এর সমস্যা দেখা দেয়। তাহলে উকুন এর সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় কি?

মাথার উকুন থেকে রক্ষা পাওয়ার স্থায়ী কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। যেগুলো আপনি ব্যবহার করলে সাত দিনের মধ্যেই মাথার উকুন নিমিষেই দূর করতে পারবেন। তাহলে আসুন জেনে নেই উকুন দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে-

লেবুর রস ও রসুন

লেবু একটি প্রাকৃতিক ফল। লেবুতে ক্যালসিয়াম ৯০ মিলি, ভিটামিন এ ১৫ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি ০.১৫ মিলি, ফসফরাস ২০ মিলি, লৌহ ০.৩ মিলিগ্রাম উপাদান রয়েছে। যা কিনা মাথার উকুনের মত জীবাণুনাশক সহজে দূর করে। লেবুর রস ও রসুন মিশ্রণ করে মাথার উকুন তাড়ানো যায়। যদি রসুন না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে শুধু লেবুর রস চিবিয়ে বের করে তা সরাসরি মাথায় ব্যবহার করা যায়। এতে করে ফলাফল খুব ভালো নাও পেতে পারেন।

তবে লেবুর রস ও রসুন এক সঙ্গে ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। এই দু’টি উপাদান তৈরির জন্য দেখে নিন।

প্রথমে চার কোয়া রসুন ভালোভাবে পিষে নিন। তারপর লেবুর রস, রসুনের রস এক সঙ্গে মিশিয়ে মাথায় লাগান। লাগানো শেষ হলে ভালোমানের শ্যাম্পু করে সুতি কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট জড়িয়ে রাখুন। নির্ধারিত সময় শেষ হলে চিরুনি দিয়ে সহজে উকুন দূর করুন। এই উপাদানটি বিশেষ করে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।

মাথার উকুন দূর করতে নিমপাতা উপকারিতা

নিমপাতা বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত ঘরোয়া উপায়ের মাধ্যমে ব্যবহার করেও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। নিমে অ্যান্টিপাইরেটিক, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, এনালেজিক, অ্যান্টিভাইরাস, অ্যান্টিডায়াবেটিক, অ্যান্টিসেপ্টিক, অ্যান্টিমাইক্রবাল, অ্যান্টিফাঙ্গাল রয়েছে যা কি না রক্ত বিশুদ্ধ করতে খুবই কার্যকরী একটি উপাদান। আপনি নিমপাতা পিষে মাথার চুলে ব্যবহার করেও উকুন তাড়াতে পারেন।

এছাড়াও যাদের দাঁতের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে মুখের দূরগন্ধ, পোঁকা সহ দাঁতের মাড়ির ক্ষয় রোধ ও মজবুত করতে দারুন কাজ করে।

পেঁয়াজের রস

উকুন তাড়াতে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করতে পারেন। পেঁয়াজে থাকা সালফার উকুন তাড়াতে দারুন কাজ করে। ৫ থেকে ৬টা মাঝারী সাইজের পেঁয়াজ নিয়ে ভালোভাবে পিষে মাথায় লাগিয়ে মাথার ত্বকে বা চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট সুতি কাপড় দিয়ে চুল ঢেকে রেখে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

পরে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়িয়ে উকুন চিরতরে বিদায় করে ফেলুন। এই পেঁয়াজের রসের উপাদানটি সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।

লবণের সঙ্গে ভিনেগারের পেস্ট ব্যবহার করুন

১ কাপের ৪ ভাগের ১ ভাগ লবণ ও ভিনেগার নিন। তারপর লবণ ও ভিনেগার পেস্ট তৈরি করে মাথার ত্বকে ও চুলে লাগিয়ে ফেলুন। লাগানো শেষ হলে শাওয়ার ক্যাপ বা সুতি কাপড় (তোয়ালে) দিয়ে দেড় থেকে দুই ঘন্টা এভাবেই মাথা ঢেকে রাখুন। এরপর মাথার চুলে গুণগতমানের শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

নিয়মিত দিনে ২ বার চুল আঁচড়ান, তাহলে দেখবেন খুব তাড়াতাড়ি আপনার মাথা থেকে উকুন দূর হয়ে গেছে।

টি ট্রি অয়েল

অলিভ অয়েলের সঙ্গে ২০ ফোঁটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে তুলো দিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। তারপর রাতে মাথায় নরম কাপড় পেচিয়ে ঘুমতে যাবেন। পরে দিন সকালে শ্যাম্পু করে নিন।

প্রতিদিন এটি ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই সপ্তাহে ২ থেকে ৩ দিন করুন। এটি ব্যবহারের ফলে দ্রুত উকুন দূর করার উপায় হবে।

অ্যালকোহল

মাথায় অ্যালকোহল মালিশ করলেও উকুন থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। চুলে অ্যালকোহল লাগানোর পরেই কয়েক মিনিটের মধ্যে জ্বালা করতে পারে তার আগেই শ্যাম্পু করে নিন। অ্যালকোহল লাগালে উকুন কিছুক্ষণের মধ্যেই দম বন্ধ হয়ে মারা যাবে। তাছাড়া এটা কন্ডিশনারেরস মত কাজও করে। সপ্তাহে অন্তত ২ বার এবং একই নিয়মে ২ মাস ব্যবহার করতে থাকুন। এটি ব্যবহারের ফলে আপনার মাথা থেকে অবশ্যই উকুন পালাবে এর সাথে অনেক উপকারও পাবেন।

সূত্র:- Right News BD

en_USEnglish