শিশুর স্বাস্থ্য টিপস: ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চাদের সর্দি-কাশি এবং জ্বর একটি সাধারণ সমস্যা। এমন অবস্থায় এই ধরনের সমস্যা প্রাকৃতিক এবং ঘরোয়া উপায়ে প্রতিরোধ করা যায়।
আমার বাচ্চার বর্তমান বয়স ৪ মাস ৯ দিন চলছে। হালকা শীতের আভাসের কারণে হঠাৎ করে সর্দি-কাশি এবং জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এমতবস্থায় আমার শিশুর এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য হোমিও কিছু ঔষধ সেবন করাই। কিন্তু সেই ঔষধে ভালো ফলাফল পাইনি। তারপর নিচে থাকা ৫টি ঘরোয়া উপায় গুলোর মধ্যে গুলোর মধ্যে ৩ নম্বর উপায় ব্যবহার করে মাত্র ২ দিনের মধ্যে আমার বাচ্চা অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে উঠেছে।
তাই আমি সাজেস্ট করব শীতের শুরুতে বা শীত চলাকালীন আপনার শিশুর সর্দি-কাশি এমনকি জ্বর গুরুত্বর না হলে প্রথমে কোন প্রকার ঔষধ সেবন না করে নিচে থাকা ঘরোয়া উপায়গুলো ব্যবহার করে নিশ্চিন্তে সুস্থ করতে পারেন।
বাচ্চাদের সর্দি-কাশি হলে করণীয়
১. তুলসী পাতা ও মধুর মিশ্রণ
তুলসী পাতা এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খাওয়ানোর মাধ্যমে শিশুর সর্দি-কাশি দূর করা সম্ভব। তুলসী পাতায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানগুলো রোগ প্রতিরোধে সহায়ক। মধু প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, যা সর্দি ও কাশির সংক্রমণ কমাতে সহায়তা করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন:
২-৩ টি তাজা তুলসী পাতা নিন।
পাতা কুঁচি করে এর সাথে আধা চামচ মধু মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ান।
দিনে ২ বার এই মিশ্রণটি খাওয়ানো যেতে পারে।
২. আদা এবং লবঙ্গের রস
আদা ও লবঙ্গ সর্দি-কাশি নিরাময়ে কার্যকরী। আদা ঠান্ডা এবং কাশির উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে এবং লবঙ্গ অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক।
কিভাবে ব্যবহার করবেন:
একটি ছোট আদার টুকরা এবং ২-৩ টি লবঙ্গ পানিতে ফুটিয়ে রস বের করুন।
মিশ্রণটি ঠান্ডা হলে এতে সামান্য মধু মিশিয়ে শিশুকে দিন।
দিনে একবার খাওয়ানো যেতে পারে।
৩. গরম পানির বাষ্প
গরম পানির বাষ্প গ্রহণ শিশুর শ্বাসনালী পরিষ্কার করে এবং কফ বের করতে সহায়তা করে। এটা শিশুর সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে খুবই কার্যকরী।
কিভাবে ব্যবহার করবেন:
একটি বড় পাত্রে গরম পানি নিন।
শিশুকে পাত্রের সামনে বসান এবং একটি তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে দিন।
বাষ্প গ্রহণ করতে দিন ৫-৭ মিনিটের জন্য।
সতর্ক থাকুন যেন শিশুটি খুব বেশি গরম বাষ্প গ্রহণ না করে।
৪. মধু এবং লেবুর মিশ্রণ
মধু এবং লেবুর মিশ্রণ একটি প্রাকৃতিক ঘরোয়া প্রতিকার যা শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং মধু সর্দি ও কাশি কমাতে সহায়তা করে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন:
একটি চামচ মধুর সাথে আধা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে শিশুকে খাওয়ান।
দিনে একবার এই মিশ্রণটি খাওয়ানো যেতে পারে, তবে এক বছরের কম বয়সী শিশুর জন্য মধু দেওয়া উচিত নয়।
৫. গরম তেল মালিশ
গরম তেল মালিশ শিশুর শরীর গরম রাখতে এবং ঠান্ডা থেকে রক্ষা করতে সহায়ক। সরিষার তেল, রসুন, এবং মেথি মিশিয়ে গরম করে মালিশ করলে সর্দি ও কাশির উপশম হয়।
কিভাবে ব্যবহার করবেন:
এক কাপ সরিষার তেলে ২-৩টি রসুনের কোয়া এবং সামান্য মেথি মিশিয়ে গরম করুন।
তেল ঠান্ডা হলে শিশুর বুক এবং পিঠে মালিশ করুন।
দিনে একবার রাতে ঘুমানোর আগে মালিশ করা সবচেয়ে ভালো।
পরিশেষে:
উপরে থাকা প্রতিকারগুলো আপনার বাচ্চাদের সর্দি-কাশি এবং জ্বর প্রতিরোধের জন্য এই ঘরোয়া উপায়গুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, শিশুর অবস্থা যদি গুরুতর হয় বা উপসর্গ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাছাড়া ঘরোয়া প্রতিকার উপশম করতে সহায়ক হলেও, সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও আপনার বাচ্চাদের এই ধরণের সমস্যা সমাধানের জন্য গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন।
শিশুর সর্দি-কাশি প্রতিরোধ করার উপায়
শিশুর জ্বর প্রতিরোধের উপায়
বাচ্চাদের জ্বর সর্দি কাশি হলে করণীয় এবং ঘরোয়া প্রতিকার
শিশুদের সর্দি-কাশির ঘরোয়া চিকিৎসা
সূত্র: Right News BD