যাদের মাথায় চুল নেই শুধু তারাই সব সময় দুশ্চিন্তায় ভোগেন, কিভাবে মাথার পাতলা চুল ঘন করা যায়? চুল ঘন শুধু মাথা সহ পুরো শরীরের সৌন্দর্যের জন্যই নয়, আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।
আজ আমরা ৫টি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব কিভাবে মেয়েদের বা ছেলেদের পাতলা চুল ঘন করার উপায় সম্পর্কে-
মাথার পাতলা চুল ঘন করার উপায়
১. পেঁয়াজের রস
চুলের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদান: চুলের ঘনত্বে পেঁয়াজের রস একটি প্রাচীন কার্যকরী ঘরোয়া সমাধান। এটি প্রাকৃতিকভাবে চুল পড়া রোধ করা থেকে শুরু করে নতুন চুল গজানোর জন্য উপকারী।
অনেকেই জানেন না, পেঁয়াজের রস ব্যবহার করলে চুলের শিকড় মজবুত হয় এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত হয়।
পেঁয়াজের রস ব্যবহারের নানা উপায় এবং এর উপকারিতা এখানে-
পেঁয়াজের রসের উপকারিতা
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে সালফার রয়েছে, যা চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি চুলের ফলিকলগুলিকে জাগিয়ে তোলে পাশাপাশি নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, পেঁয়াজের রস রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের গঠনকে শক্তিশালী করে তোলে।
১. চুল পড়া বন্ধ করতে পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রসের সালফার উপাদান চুলের শিকড়কে মজবুত করে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহারে চুল পড়ার সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়।
ব্যবহারের উপায়:
একটি পেঁয়াজ ব্লেন্ড করে এর রস চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে চুল পড়ার সমস্যা অনেকটা কমে যাবে।
২. নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করে, যা নতুন চুল গজানোর প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানগুলি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ব্যবহারের উপায়:
পেঁয়াজের রস এবং নারকেল তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। ৩০-৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. চুলের খুশকি দূর করার উপায়
পেঁয়াজের রসের অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা মাথার ত্বকে জমে থাকা খুশকি এবং ব্যাকটেরিয়াকে দূর করতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
পেঁয়াজের রস এবং মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত ব্যবহারে খুশকির সমস্যা দূর হবে।
৪. চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়
পেঁয়াজের রস চুলকে মজবুত করার পাশাপাশি এর প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
ব্যবহারের উপায়:
পেঁয়াজের রসের সাথে একটি ডিম মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুলে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
৫. মাথার ত্বকের ইনফেকশন দূর করতে
পেঁয়াজের রসে থাকা অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান মাথার ত্বকের বিভিন্ন ইনফেকশন দূর করতে কার্যকরী। এটি চুলের শিকড়কে পরিষ্কার করে এবং চুল পড়ার সমস্যা কমায়।
ব্যবহারের উপায়:
পেঁয়াজের রস মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন এবং ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহারে ইনফেকশন দূর হবে।
অতিরিক্ত টিপস:
- সর্বদা তাজা পেঁয়াজের রস ব্যবহার করুন।
- চুলে পেঁয়াজের রস ব্যবহার করার পর স্নিগ্ধ এবং মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।
- ভালো ফলাফল পেতে পেঁয়াজের রসের সাথে অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নারকেল তেল, মধু বা ডিম মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
২. পাতলা চুল ঘন করতে অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা চুলের গঠন মজবুত করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে এনজাইম যা চুল পড়া কমাতে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক। পাতলা চুল অনেকের জন্যই একটি বড় সমস্যা, যা আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দিতে পারে। প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে অ্যালোভেরা জেল চুল ঘন এবং মজবুত করতে অসাধারণ ভূমিকা পালন করে। অ্যালোভেরা চুলের শিকড়কে পুষ্টি জোগায়, চুল পড়া কমায় এবং চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
কীভাবে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করে পাতলা চুলকে ঘন ও শক্তিশালী করা যায় এখানে-
১. অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল চুলের শিকড়কে পুষ্টি দেয় এবং চুল পড়া রোধ করে। অ্যালোভেরা জেল নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের ঘনত্ব দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
ব্যবহারের উপায়:
- অ্যালোভেরা জেল ২ টেবিল চামচে করে চুলের গোড়ায় ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন। ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
২. অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল চুলের জন্য একটি শক্তিশালী উপাদান যা চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। অ্যালোভেরা জেল এখানে থাকা সঠিক ব্যবহারের উপায় অনুসরণ করলে আপনি আপনার পাতলা চুলকে দ্রুত ঘন ও মজবুত করাতে পারেন।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাথার ত্বকে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যায়।
৩. অ্যালোভেরা জেল এবং ডিমের মাস্ক
ডিম চুলের প্রোটিনের অভাব পূরণ করে এবং চুলকে ঘন ও মজবুত করে তোলে। অ্যালোভেরা জেলের সাথে ডিম মিশিয়ে একটি পুষ্টিকর মাস্ক তৈরি করা যায়।
ব্যবহারের উপায়:
- ১টি ডিমের সাদা অংশের সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০-৪০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে চুলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে।
৪. অ্যালোভেরা জেল এবং মধু
মধু চুলে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা চুলকে নরম এবং মজবুত রাখে। অ্যালোভেরা এবং মধুর মিশ্রণ পাতলা চুলকে ঘন করতে সহায়ক।
ব্যবহারের উপায়:
- ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. অ্যালোভেরা জেল এবং মেথি
মেথি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়ক এবং চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করে। অ্যালোভেরা জেলের সাথে মেথির পেস্ট চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- মেথি বীজ সারারাত ভিজিয়ে রেখে সকালে পেস্ট তৈরি করুন এবং ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
চুলের যত্নে অতিরিক্ত টিপস:
অতিরিক্ত তাপ বা কেমিক্যাল প্রয়োগ থেকে চুলকে বিরত রাখুন।
চুলে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই চুল পরিষ্কার রাখুন।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করুন।
কীভাবে ব্যবহার করবেন:
- অ্যালোভেরা জেল সরাসরি মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করুন এবং ১ ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখবে এবং চুলের ঘনত্ব বাড়াবে।
৩. ডিমের হেয়ার মাস্ক
মাথার চুলের ঘনত্ব কমে গেলে অনেকেই সমস্যায় পড়েন।
ডিম থেকে কিছুটা হলেও গন্ধ আসতে পারে, তবে ডিম একটি প্রাকৃতিক প্রোটিন-সমৃদ্ধ উপাদান, যা চুলের বৃদ্ধির পাশাপাশি আপনার পাতলা চুলকে ঘন করতে কার্যকরী।
ডিমের হেয়ার মাস্ক নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের শিকড় মজবুত হয় এবং চুল ঘন হয়ে ওঠে।
কীভাবে ডিমের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করে পাতলা চুল ঘন করা যায় এখানে-
১. ডিম এবং অলিভ অয়েলের হেয়ার মাস্ক
অলিভ অয়েল চুলে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ডিমের প্রোটিন চুলের ঘনত্ব বাড়ায়। এই দুই উপাদানের মিশ্রণ চুলকে মজবুত করে এবং চুলের স্বাস্থ্য স্বাস্থ্য ফিরে পেতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
১টি ডিমের সাদা অংশের সাথে ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করলে চুল ঘন এবং মজবুত হবে।
২. ডিম এবং অ্যালোভেরা জেলের হেয়ার মাস্ক
অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক উপাদান আপনার চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক। ডিম এবং অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণ চুলের শিকড়কে পুষ্টি দেয় এবং চুলকে ঘন করে তোলে।
ব্যবহারের উপায়:
২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সাথে ১টি ডিম মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগান। ২০-৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করুন।
৩. ডিম এবং মধুর হেয়ার মাস্ক
মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ডিমের প্রোটিন চুলের ভঙ্গুরতা দূর করে। এই মাস্ক চুলকে নরম এবং ঘন করতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১টি ডিম ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে লাগান। ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
৪. ডিম এবং নারকেল তেলের হেয়ার মাস্ক
নারকেল তেল চুলের শিকড় মজবুত করে এবং চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক। ডিমের সাথে নারকেল তেল মিশিয়ে ব্যবহারে চুল আরও ঘন হয়।
ব্যবহারের উপায়:
- ১টি ডিম এবং ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে ভালোভাবে লাগান। ২০-৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. ডিম এবং লেবুর রসের হেয়ার মাস্ক
লেবুর রস চুলের খুশকি দূর করতে সহায়ক এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়ায়। ডিমের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহারে চুল ঘন এবং সুস্থ হয়।
ব্যবহারের উপায়:
১টি ডিম এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগান। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক।
চুলের যত্নে কিছু অতিরিক্ত টিপস:
- চুলে ডিমের মাস্ক ব্যবহারের পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন যাতে ডিমের গন্ধ না থাকে।
- চুলে অতিরিক্ত তাপ বা কেমিক্যাল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
৪. মেথি বীজের পেস্ট
পাতলা চুল ঘন করতে মেথী বীজ: কার্যকরী উপায় ও পদ্ধতি
পাতলা চুলের সমস্যা বর্তমানে অনেকের কাছে একটি সাধারণ বিষয়। মেথী বীজ একটি প্রাকৃতিক উপাদান, যা চুলের ঘনত্ব বাড়াতে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে অত্যন্ত কার্যকর। মেথী বীজে রয়েছে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল, যা চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে মেথী বীজ ব্যবহার করে পাতলা চুলকে ঘন ও মজবুত করা যায়।
১. মেথী বীজের পেস্ট
মেথী বীজের পেস্ট চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুলের শিকড়কে মজবুত করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ২-৩ টেবিল চামচ মেথী বীজ একটি বাটিতে ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।
- পরে এটি ব্লেন্ড করে পেস্ট তৈরি করুন।
- এই পেস্টটি চুলের গোড়ায় ভালোভাবে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রাখুন এবং শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করুন।
২. মেথী বীজ এবং নারকেল তেলের মিশ্রণ
নারকেল তেল চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। মেথী বীজের সাথে নারকেল তেলের মিশ্রণ চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ টেবিল চামচ মেথী বীজের পেস্ট মিশিয়ে নিন।
- এটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
- পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. মেথী বীজের রস
মেথী বীজের রস চুলের বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকর। এটি চুলের ক্ষতি রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ২-৩ টেবিল চামচ মেথী বীজ জল দিয়ে ফুটিয়ে নিন, পরে তা ছেঁকে নিন এবং রস বের করুন।
- এই রসটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।
৪. মেথী বীজ ও দইয়ের হেয়ার মাস্ক
দই চুলের জন্য একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার এবং এটি চুলকে নরম ও মসৃণ করে। মেথী বীজ ও দইয়ের মিশ্রণ চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ মেথী বীজের পেস্টের সাথে ৩ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন।
- এই মাস্কটি চুলে লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. মেথী বীজ এবং অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা চুলের জন্য একটি পুষ্টিকর উপাদান। মেথী বীজ ও অ্যালোভেরা জেলের মিশ্রণ চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ মেথী বীজের পেস্টের সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন।
- এটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
চুলের যত্নে কিছু অতিরিক্ত টিপস:
- মেথী বীজ ব্যবহার করার আগে অবশ্যই ভালভাবে ধুয়ে নিন।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন।
- অতিরিক্ত তাপ বা কেমিক্যাল প্রয়োগ থেকে চুলকে বিরত রাখুন।
৫. নারকেল তেল ম্যাসাজ
পাতলা চুল ঘন করতে নারকেল তেল: কার্যকরী উপায় ও পদ্ধতি
চুল ঘন করতে নারকেল তেলের কার্যকরী উপায় ও পদ্ধতি
পাতলা চুলের সমস্যা অনেকের জন্যই একটি সাধারণ বিষয়। নারকেল তেল প্রাকৃতিক একটি উপাদান, যা চুলের ঘনত্ব বাড়াতে এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে অত্যন্ত কার্যকর। এতে উপস্থিত স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন এবং মিনারেল চুলের শিকড়কে পুষ্টি দেয় এবং চুলকে মজবুত করে। আসুন জানি কীভাবে নারকেল তেল ব্যবহার করে পাতলা চুলকে ঘন ও স্বাস্থ্যবান করা যায়।
১. নারকেল তেল ম্যাসাজ
নারকেল তেল চুলের শিকড়ে পুষ্টি জোগায় এবং রক্তসঞ্চালন বাড়ায়। এটি চুল পড়া কমাতে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ৩-৪ টেবিল চামচ নারকেল তেল গরম করুন (অতি গরম না করে)।
- তেলটি হাতের সাহায্যে মাথার ত্বকে লাগিয়ে ভালোভাবে ম্যাসাজ করুন।
- ১ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এটি সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।
২. নারকেল তেল এবং অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা চুলের স্বাস্থ্য ও ঘনত্ব বাড়াতে সহায়ক। নারকেল তেলের সাথে অ্যালোভেরা মিশিয়ে ব্যবহারে চুল আরও মজবুত হয়।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে নিন।
- এই মিশ্রণটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০-৪০ মিনিট রাখুন এবং পরে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. নারকেল তেল এবং মেথী বীজ
মেথী বীজ চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নারকেল তেলের সাথে মেথী বীজের মিশ্রণ চুলের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ মেথী বীজ ৮-১০ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরে এটি পেস্টে পরিণত করুন।
- এই পেস্টের সাথে ৩ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগান।
- ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৪. নারকেল তেল এবং ডিমের মিশ্রণ
ডিম চুলের জন্য প্রোটিন সরবরাহ করে এবং নারকেল তেলের সাথে ব্যবহারে চুল আরও ঘন হয়।
ব্যবহারের উপায়:
- ১টি ডিমের সাদা অংশের সাথে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন।
- এই মাস্কটি চুলে লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. নারকেল তেল এবং মধুর হেয়ার মাস্ক
মধু প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে চুলকে আরও স্বাস্থ্যবান করে তোলে।
ব্যবহারের উপায়:
- ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন।
- এটি চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
চুলের যত্নে কিছু অতিরিক্ত পরামর্শ:
- নারকেল তেল ব্যবহারের আগে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
- নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন।
- অতিরিক্ত কেমিক্যাল এবং তাপ ব্যবহার থেকে চুলকে বিরত রাখুন।
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত চুলে স্টাইলিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করবেন না।
- পর্যাপ্ত পানি পান করুন এবং সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
- নিয়মিত চুল পরিষ্কার রাখুন এবং ময়েশ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।
পরিশেষে
উপরে থাকা চুল ঘন করার এই ঘরোয়া উপায়গুলো নিয়মিতভাবে প্রয়োগ করলে আপনি আপনার পাতলা চুলকে ঘন এবং মজবুত করতে পারবেন। প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো চুলের ক্ষতি না করে চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
এখানে থাকা চুলের যত্নের সমস্ত পরামর্শগুলি অনুযায়ী আপনার যেটি পচ্ছন্দ হয়, সেটি ধৈর্য সহকারে চেষ্টা করে দেখতে পারেন।
সূত্র: Right News BD