সুস্থ থাকার ১০টি উপায় যা দৈনন্দিন শত ব্যস্ততার মধ্যেও সুস্বাস্থ্যের মূল চাবিকাঠি হল ‘লাইফস্টাইল’। যা খুবই সহজ। সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করে আপনি আপনার স্বাস্থ্যের পরিবর্তন করতে পারেন। সুস্থ থাকার টিপস গুলো ভালোভাবে প্রতিদিন মেনে চললে স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব, যা আজ আমরা আলোচনা করবো।
প্রতিদিন কীভাবে আপনি আপনার স্বাস্থ্য ভালো রাখবেন সেই পদ্ধতিটুকু বেছে নেয়াটাও জরুরি। আজকের এই পোষ্টটি কোনটি আপনার জন্য কার্যকরী হয় সেটি ভালোভাবে পড়ুন এবং দেখুন।
গোপন ১০টি সুস্থ থাকার টিপস যা জীবন বদলে দিতে পারে আপনার
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
জীবন বদলে দিতে প্রতিদিন আপনি অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন। সুস্থ থাকার ১০টি উপায় যা আপনার শরীরের প্রতিটি অংশ সক্রিয় রাখতে সাহায্য করবে। ব্যায়াম করলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকিও কমিয়ে ফেলতে পারবেন।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করে শরীর সুস্থ রাখতে হাইড্রেটেড থাকুন। পানি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয় এবং শরীরকে সতেজ রাখে।
৩. সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন
আপনার খাদ্য তালিকায় শাকসবজি, ফল, প্রোটিন এবং আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। ফাস্ট ফুড ও উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সুষম খাদ্য হলো এমন একটি খাদ্য যা শরীরের সমস্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে। এটি বিভিন্ন ধরনের খাবার থেকে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, ভিটামিন, খনিজ, এবং আঁশের সঠিক পরিমাণ ধারণ করে।
সুষম খাদ্য আপনার শরীরকে সুস্থ ও শক্তিশালী রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
কি কি সুষম খাদ্যের প্রধান উপাদানসমূহ:
- শর্করা (কার্বোহাইড্রেট): শর্করা আমাদের শরীরে শক্তি যোগায় যেমন- চাল, গম, রুটি, আলু, ওটস, মিষ্টি আলু।
- প্রোটিন: প্রোটিন শরীরের কোষ গঠনে সাহায্য করে এবং পেশি মজবুত রাখে যেমন- ডাল, ডিম, মাছ, মুরগির মাংস, মটরশুটি, সয়াবিন, বাদাম।
- চর্বি (ফ্যাট): চর্বি শরীর সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় এবং এটি শক্তি সরবরাহ করে, কিন্তু এটি সঠিক পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত যেমন- অলিভ অয়েল, বাদাম, অ্যাভোকাডো, মাছের তেল, চর্বিযুক্ত মাংস।
- ভিটামিন: শরীরের বিভিন্ন ক্রিয়ায় ভিটামিনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তা হলো, ভিটামিন A: গাজর, পালং শাক। ভিটামিন C: লেবু, কমলা, আম। ভিটামিন D: দুধ, ডিম, রোদ।
- খনিজ (মিনারেল): শরীরের সঠিক কার্যক্রমে খনিজ উপাদানগুলি প্রয়োজনীয় যেমন- ক্যালসিয়াম: দুধ, দই, পালং শাক। আয়রন: পালং শাক, লাল মাংস, মটরশুটি।
- আঁশ (ফাইবার): পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে এবং হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে আঁশ সহায়ক। যেমন- শাকসবজি, ফল, গোটা শস্য, ওটস, বাদাম।
সুষম খাদ্যের উদাহরণ:
- দুপুরের খাবার: ভাত বা রুটি, মুরগি/মাছ/ডাল, শাকসবজি, সালাদ।
- বিকেলের নাস্তা: বাদাম, ফল, দই।
- রাতের খাবার: হালকা রুটি বা ভাত, মাংস বা মাছ বা ডাল, শাকসবজি।
সুষম খাদ্য মানে হচ্ছে পুষ্টির ভারসাম্য বজায় রাখা এবং প্রতিটি খাবারের সাথে শরীরের সব ধরণের পুষ্টি পাওয়া নিশ্চিত করা।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
শরীর সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম আপনাকে মানসিক ও শারীরিক উন্নতি করতে সাহায্য করবে। তাছাড়া ঘুমের অভাবের প্রভাব আপনার শরীরের ক্লান্তি ও মানসিক চাপ বেড়ে দিতে পারে।
৫. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন
নিয়মিত সকাল বেলা যোগব্যায়াম মানসিক চাপ কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। শরীর সুস্থ রাখতে নিজেকে এই সমস্ত চর্চাগুলোর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।
৬. সঠিক ওজন বজায় রাখুন
আপনার উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত জরুরি। এটি ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অন্যান্য অসুখের ঝুঁকি কমায়।
৭. পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন
নিয়মিত হাত ধোয়া, দাঁত ব্রাশ করা এবং শরীর সুস্থ রাখতে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে জীবাণু থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
৮. ধূমপান থেকে দূরে থাকুন
স্বাস্থ্য রক্ষার্থে ধূমপান সেবন শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। নিয়মিত এগুলো থেকে দূরে থাকুন এবং সুস্থ জীবনযাপন করুন।
৯. রোদে সময় কাটান
ভিটামিন ডি শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোদে সময় কাটালে আপনার হাড় মজবুত করতে খেতে পারেন ‘কাজুবাদাম’ হয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
১০. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করলে আপনি আপনার শরীরের অবস্থা সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। এতে কোনো রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো ধরা পড়ে এবং দ্রুত চিকিৎসা সম্ভব হয়।
শেষকথাঃ ১০টি সুস্থ থাকার টিপস
আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনে সুস্থ থাকতে আমাদের এই ১০টি সহজ সুস্থ থাকার টিপস অনুসরণ করতে পারেন।
স্বাস্থ্য টিপস অনুযায়ী নিয়মিত এই অভ্যাসগুলো মেনে চললে আপনাকে দীর্ঘমেয়াদে রোগমুক্ত ও উজ্জ্বল জীবন যাপনে পরিবর্তন এনে দেবে।
সূত্র: Right News BD