লিচু এমন একটি ফল এই ফল খেতে পচ্ছন্দ করেনা এমন কেউ নেই। তবে বিভিন্ন গবেষণায় লিচু খাওয়ার নিয়ম বলা হয়েছে। লিচু সিজনাল ফল। সেক্ষেত্রে বেশি পরিমাণে লিচু খাওয়া মস্তিষ্কে উত্তেজনা হওয়ার ঘটনা উঠে এসেছে। একিউট এনকেফালাইটিস সিনড্রম নামে জটিল সমস্যার কারণ হতে পারে। লিচু টক্সিসিটি অথবা একিউট হাইপোগ্লাইসেমিক টক্সিক এনকেফালোপ্যাথি।
তার মানে এই নয় যে, লিচু খেলেই শিশুরা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাবে, তা কিন্তু নয়। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন গল্পগুজব, বিভ্রান্তি আর ভুল ধারণার পরবর্তিতে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় সঠিক সমাধান জানাটাও জরুরি বিষয়। লিচুর বৈজ্ঞানিক নাম ‘Litchi Chinensis’
লিচুতে কিছু টক্সিনের পরিমাণ থাকে, যেমন হাইপোগ্লাইসন-এ এবং এমসিপিজি ইত্যাদি। এগুলি শরীরের গ্লুকোজ উৎপাদন এবং চর্বি ভাঙতে বাঁধার সৃষ্টি করে। শিশুরা রাতে না খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ার পর, সকালে খালি পেটে বেশি পরিমাণে লিচু খাওয়ার ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে যেসব শিশু রোগা পাতলা এবং অপুষ্টির শিকার। এছাড়াও ২-১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো রাসায়নিকের প্রভাবে শিশুদের শরীর হঠাৎ করে গ্লুকোজের অভাব দেখা দিতে পারে।
এসব টক্সিন দ্রুত মস্তিষ্কে চলে যাওয়ার ফলে মেটাবলিক এসিডোসিস দেখা দেয়। সে কারণে মাথাব্যথা, বমি, ঘাম, খিঁচুনি কিংবা অচেতন হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। এগুলো সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে আঁধা-পাঁকা এবং কাঁচা লিচু খাওয়ার ফলে।
প্রত্যেক বছরে লিচু খাওয়া বারণ নেই। তবে স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে লিচু খাওয়ার নিয়ম জেনে খাওয়াটা একান্ত জরুরী। মজাদার ফল লিচুতে বেশ পুষ্টি থাকে। তবে সকালে খালি পেটে বেশি লিচু খাওয়া একদম ঠিক নয়। এটি বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে। কারণ শিশুদের দেহের বিপাকক্রিয়া পরিপক্ব নয়। এছাড়াও কাঁচা কিংবা আঁধা-পাঁকা লিচু গাছ থেকে পেড়ে খাওয়া একদম উচিত নয়। কতগুলো লিচু খেলে শরীরে জন্য এ ধরণের বিষক্রিয়া হবে, এ পর্যন্ত জানা যায়নি। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন চিকিৎসকরা জানান, ভরা পেটে বা খাবারের পর ৫-৭টি লিচু খাওয়া শরীরের জন্য উপকার।
শিশুরা যেন লিচুর খোসা মুখে ধরে না চোষে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। কেননা, এতে করে অনেক সময় কীটনাশক সহ বাদুড়ের লালা লিচুর গায়ে থাকতে পারে। সে জন্য লিচুর খোসা ছাড়িয়ে বাটিতে পরিবেশন করুন।
সূত্র:- Right News BD