সাতমসজিদ সড়কে এখনও গভীর রাতের আঁধারে গাছ কাটায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের সমাবেশ করতে দেখা যায়। গত ৬ মে (শনিবার) রাতেও সেখানে রাতের আঁধারে গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কাটা প্রতিবাদে আজ রোববার বিকেলে জোরালো মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী যুব সংগঠন গ্রিন ভয়েস। এই আন্দোলনে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাও অংশগ্রহণ করেন।
সাতমসজিদ সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে রাতের আঁধারে গাছ কেটে ফেলে নতুন করে সড়ক বিভাজক তৈরি করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। সে কারণে গত জানুয়ারি মাসেও সাতমসজিদ সড়কে গাছ কেটে ফেলেছিল সংস্থাটি। তখন এ বিষয়টি নিয়ে অনেকের মুখে সমালোচনা উঠলে গাছ কাটা বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে পরিবেশবাদীরা বলছেন, প্রচণ্ড গরমের দিনে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এরপরও রাতের আঁধারে গাছ কাটে ফেলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন উন্নয়নমূলক কাজ করছে। সামাজিক পরিবেশ ধ্বংস করে এমন উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করার আহ্বান জানান নগরবাসীরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির প্রধান নির্বাহী ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলছেন, গাছ কেটে ফেলে সড়কের সৌন্দর্যবধন অমানবিক ও বিবেকবুদ্ধিহীন কাজ হচ্ছে। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও প্রচণ্ড গরমের দিনেও সিটি করপোরেশন গাছ কেটে উন্নয়নমূলক কাজ করেছে। কি কারণে গাছ কাটতে হবে? এছাড়াও সড়ক বিভাজকে সৌন্দর্যবর্ধন করার জন্য গাছ রেখেই কীভাবে কাজটি করা যায়। কাজটি করার জন্য অবশ্যই সিটি করপোরেশনকে কোন না কোন পথ খুঁজে বের করতে হবে।
সেখানে রাতের আঁধারে গাছ কাটায় নগরবাসীর প্রতিবাদে আজ রাত ১০টায় আবারও তাঁরা সাতমসজিদ সড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন বলে জানিয়েছেন রিজওয়ানা হাসান।
এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্র বলছে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনে ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার একটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন চলছে। কর্মসূচি বাস্তবায়ন হিসেবে ধানমন্ডি এলাকার সাতমসজিদ সড়কেও উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন কাজ করতে গিয়ে রাস্তার সাইটে লাগানো সব পুরোনো গাছগুলো কেটে ফেলা হচ্ছে।
এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষে গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে এই অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী মিঠুন চন্দ্র শীল কোনভাবেই কথা বলতে রাজি হননি। এছাড়াও দক্ষিণ সিটির প্রকৌশল বিভাগে থাকা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নাম প্রকাশ না করে বলেন, রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজ শেষ হলে তাঁরা সেখানে উন্নত জাতের গাছ লাগিয়ে দেবেন। সাতমসজিদ সড়কের দুই পাশের রাস্তা সমান করার জন্য বিভাজকে থাকা রাস্তার গাছগুলো কাটার প্রয়োজনে পড়ছে বলে তিনি দাবি করেন।
সূত্র:- Right News BD