রমজান মাসে ইফতারে ছোলা বা বুট কতটা উপকারি

আমাদের দেশে রমজান মাসে ইফতারে ৯৫% মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় ছোলা বা বুট খেয়ে থাকে। ছোলা বা বুট অত্যন্ত পুষ্টিকর ও উচ্চমানের প্রোটিনসমৃদ্ধ একটি খাবার। এটি কাঁচায় অথবা সিদ্ধ করে তরকারি হিসেবেও রান্না করেও খাওয়া যায় এই ছোলা বা বুট।

ছোলা আমিষের জন্য খুব ভাল একটি উৎস। শুধু তাই নয় শর্করা, আঁশ এবং প্রোটিন ছাড়াও, প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং মিনারেলের দিক দিয়ে ছোলার কোনো জুড়ি নেই। এটি খাবারের সময় পরিপূর্ণ খাবার হিসেবেও খেতে পারেন। তবে রমজান মাসে ইফতারের সময় এটি আমাদের দেশে সবার জনপ্রিয় খাবার হিসেবে অনেক পরিচিত।

রমজান মাসে ইফতারে ছোলা বা বুট কতটা উপকারি

এছাড়াও রমজান মাস ব্যতিত অনেকে নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাঁরাও ছোলাটি একটি নিয়মিত খাবার হিসেবে টেবিলে রাখতে পারেন। তবে জানা যাক ছোলা বা বুট খাওয়ার সকল প্রকার উপকারিতা সম্পর্কে-

(এক) রমজান: রমজান মাসে ইফতারে জনপ্রিয় খাবার হলো ছোলা বা বুট। তবে ছোলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ সমস্ত দিন রোজা রাখালে শরীরের ঘাটতি খুব সহজেই পূরণ করে ফেলে। তাছাড়াও ছোলা দেহকে অনেকটা শক্তিশালী এবং হাঁড়কে মজবুত করে। এমনকি রোগ  প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে যথেষ্ঠ সাহায্য করে।

(দুই) ডায়াবেটিস: ছোলাতে থাকা শর্করা কিংবা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স পরিমাণে কম থাকে। সে জন্য ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা অনেক ভাল।

(তিন) ওজন কমায়: অনেক স্বাস্থবান ব্যক্তি আছেন কোনভাবেই শরীরের ওজন কমাতে পারছেন না, সে সব ব্যক্তির জন্য ছোলা বা বুট খাওয়া বেশ কার্যকরী হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও ছোলার আঁশ শরীরের জন্য ওজন কমাতে যথেষ্ঠ সাহায্য করে। তবে শুধুমাত্র ছোলা খেলে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়।

(চার). উন্নত মানের ডাল: ছোলার ডাল অনেক উন্নতমানের হয় এবং পুষ্টিকর খাবার এর দিক দিয়ে বেশ কার্যকরী। এছাড়াও ছোলাতে রয়েছে ফলেট, আঁশ, আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রণ।

(পাঁচ) আঁশযুক্ত খাদ্য: ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশযুক্ত রয়েছে যা কিনা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য সাহায্য করে। যদিও গবেষণায় জানা গেছে ছোলা খাওয়ার পর পরেই রক্তে শর্করার মাত্রা খুব ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে। সে কারণেই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ছোলা খাওয়া ভাল।

(ছয়). কোলেস্টেরল কমাতে: ছোলাতে তেলের থেকে পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে, যা শরীরের জন্য খুব একটা ক্ষতিকারক নয়। এই তেল শরীরে থাকা অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল কমিয়ে ফেলে। শর্করা, আমিষ এবং তেল ব্যতিত ছোলাতে থাকা ভিটামিন ও খনিজ লবণ রয়েছে যা স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ কার্যকরী।

(সাত). হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: নিয়মিত সকাল বেলা ছোলা খাওয়ার ফলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে যায়। এছাড়াও ছোলাতে উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ রয়েছে যা হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। ছোলাতে থাকা  ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনেক সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি নিমিষেই কমে যায়।

(আট) কোষ্ঠকাঠিন্য: ছোলায় থাকা খাদ্য-আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। যা খাদ্য আঁশ খাবারে অবস্থিত পাতলা আঁশ যা কিনা পাকস্থলিতে খাদ্য হজম হয় না, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

(নয়) ক্যান্সার প্রতিরোধ: ছোলাতে রয়েছে ফলিক এসিড যা কিনা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়াও ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। সে জন্য নিয়মিত ছোলা খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।

(দশ) যৌনশক্তি বৃদ্ধি করতে: যৌনশক্তি বৃদ্ধি করার জন্য ছোলা বা বুটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আমিষ। শুধুমাত্র রমজান মাসে ইফতারে নয় ১২ মাসেই ছোলা খাদ্য তালিকায় থাকা প্রয়োজন।

সতর্কতাঃ

যে সব ব্যক্তিদের কিডনির সমস্যা রয়েছে সে সব রোগীদের ছোলা খাওয়া যাবে না। ছোলার তৈরি ভাজা-পোড়া খাবার কম খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে করে হজম শক্তির জন্য সমস্যা হতে পারে। সে জন্য হজমশক্তি হয় এমন কিছু পরিমাণ মত কাঁচা কিংবা সিদ্ধ ছোলা খাওয়া প্রয়োজন।

সূত্র:- Right News BD

en_USEnglish