মৌমাছি বাসা বাঁধছে হিলির অনেক বাসাবাড়িতে

বর্তমান সময়ে ঝাঁকে ঝাঁকে চলে আসা মৌমাছি বাসা বাঁধছে হিলির অনেক বাসাবাড়িতে। বিভিন্ন চিকিৎসাবিজ্ঞানী মৌমাছির সংগ্রহকৃত মধু মানুষের অনেক উপকারে আসে বলে জানিয়েছেন। তবে এরকম মৌমাছি ঝাঁকে ঝাঁকে বাসা বাঁধার কারণে বাণিজ্যিকভাবে মধু সংগ্রের জন্য বক্স বসানো হয়েছে। বিভিন্ন প্রকারের মৌমাছি চাক দেখা যাচ্ছে আশে পাশের সীমান্তবর্তী হিলি এলাকায়। এখানে মৌমাছির চাষ হচ্ছে বলে মনে হতে পারে অনেকের।

সেক্ষেত্রে বাণিজ্যিকভাবে এগুলো মৌমাছির চাক চাষ করা হচ্ছে না। হিলির এই অঞ্চলগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই মৌচাক তৈরি করছে শুধুমাত্র মৌমাছিরা। এগুলো মৌমাছি বাসা বাঁধছে গ্রামের অনেক বাড়ির আঙ্গিনায়, ঘরের দুয়ারে এবং গাছের ডালে মৌচাক তৈরি করছে। সব সময় এসেব মৌমাছির গুণগুণ শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এবতবস্থায় দেখা যাচ্ছে হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর ও ছাতনী গ্রামসহ আশে পাশের বিভিন্ন গ্রাম গুলোতে।

এ সময় হিলি উপজেলার বৃহৎ মাঠগুলোতে চাষ হচ্ছে হলুদ সরিষা আবাদ। ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব হলুদ শরিষার চাষ। এসব ফসলের উপর ভিত্তি করে অনেক বাড়ি মৌচাকের বাড়ি নামে রূপ পেয়েছে।

মৌমাছি বাসা বাঁধছে হিলির অনেক বাসাবাড়িতে

বৃদ্ধ সামসুল রহমান নামে একজন ব্যক্তি হাকিমপুর উপজেলার জালালপুর গ্রামে বসবাস করেন। সেই ব্যক্তির বাড়িতে অনেক জায়গায় বিভিন্ন সাইজের মোট ৮টি মৌমাছি মৌচাক তৈরি হয়েছে। এছাড়াও পাশের বাড়ির আবুল কাশেম নামে তার বাড়ির ছাদে মোট ৬টি মৌমাছি বাসা বেঁধেছে। তবে এগুলো বাড়ি দেখলে মনে হচ্ছে যেন প্রকৃতপক্ষে মৌমাছির মৌচাকের বাড়ি।

এগুলো মৌমাছির মৌচাক দিনে দিনে বেড়ে যাওয়ায় বাড়ছে অনেক মানুষের জীবনের ঝুঁকি। মানুষের শরীরে যেকোনো সময় এসব মৌমাছি হুল ফোটাতে পারে। প্রাণহানি হতে পারে এসব মৌমাছির বিষের কারণে।

মধু চাষের চাহিদা

সেখানকার স্থানীয় জনসাধারণের দাবি, মৌমাছির চাষ করতে হলে সরিষা মৌসুমে সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। কেননা এসব মধু চাষের মাধ্যমে এদেশের চাহিদা মিটানোর পর অন্য দেশে রপ্তানিতে করলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হতে পারে। এতে নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমেও ঘুচতে পারে এ দেশের বেকারত্বের হার।

মৌমাছি বাসা বাঁধছে হিলির অনেক বাসাবাড়িতে

চলতি মৌসুমে হাকিমপুর উপজেলায় ২৪৭০ হেক্টর জমিতে হলুদ সরিষার চাষ হচ্ছে। এসব হলুদ সরিষার উপর ভিত্তি করে অনেক বাসা বাড়িতে হতে পারে শতাধিক মৌমাছির মৌচাক।

এছাড়াও এখানকার স্থানীয় বাড়ির মালিকেরা জানান, একাধিকবার মধু সংগ্রেহের জন্য এসব মৌমাছির মৌচাক গুলো থেকে মধু সংগ্রহ করা যায়। ৫ থেকে ৬ কেজি মধু আহরণ করা যায় প্রত্যেক মৌচাক থেকে। একএকটি মৌচাক নিম্নে ৪ থেকে ৫ বার পর্যন্ত কাটা যায়।

তবে যানা যায় এসব বাড়ির মালিক মধু সংগ্রহ করার পর কোন প্রকার মধু বিক্রি করেন না। মধু সংগ্রেহের পর বাড়ির মালিকরা সমস্ত মধু গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ করে দেন। এভাবে গ্রামের অনেক ধনী-গরীব মানুষরা খাটি মধুর স্বাদ গ্রহণ করতে পারে।

সামসুল রহমান জানান সরিষার মৌসুমের সময় এসব মৌমাছি এসে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে মৌচাক তৈরি করে। এতে বাড়ির মালিকরা কোনভাবেই বিরক্ত অনুভব করেন না। তিনি আরো জানান মৌমাছির চাকের ফাকে বেড়াতে অনেক ভালো লাগে।

এছাড়াও স্থানীয় গ্রামের কুদ্দুস মিয়া নামের একজন ব্যক্তি সচারচর এসব মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেন। তিনি আরো জানান সমস্ত হলুদ সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা মধু আহরণ করে। এগুলো মৌচাকের সৃষ্টি হয় হলুদ সরিষার চাষ থেকে।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক অবস্থায় কয়েকটি সেগুলো বাড়িতে মৌবক্স স্থাপন করেছেন।

স্থানীয় কৃষি বিভাগ সরকারি উদ্যোগে প্রাথমিক অবস্থায় কয়েকটি সেগুলো বাড়িতে মৌবক্স স্থাপন করেছেন।

হাকিমপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ড. মমতাজ সুলতানা বলেন, কর্মসংস্থান তৈরিতে আগামী দিনের জন্য সকল প্রকার মৌমাছির মৌচাষ করার সব ধরণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা প্রদান করা হবে। তিনি আরো বলেন, হলুদ সরিষার চাষ বিষয়ক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকদের সঠিক পরামর্শ এবং ও সহযোগিতাও করছেন।

সূত্র:- রাইট নিউজ বিডি

en_USEnglish