প্রতিদিন মটরশুটি সকালের খাবারে যোগ করা আমার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ছিল। প্রথমে ভাবতাম, এত সোজা একটা জিনিস কীভাবে আমার জীবনকে বদলে দিতে পারে? কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, এই ছোট্ট প্রাকৃতিক উপাদানটির প্রভাব কতটা বড়।
প্রতিদিন মটরশুটি সকালের খাবারে কেন খাবেন?
একদিন সকালে প্রচণ্ড ক্লান্তি নিয়ে অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। আগের রাতের অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়ার জন্য সকালটা আরও খারাপ লাগছিল। মা বললেন, “আজ একটু ভিন্ন কিছু চেষ্টা কর। তোমার পছন্দের ওই পরোটা নয়, বরং খাও মটরশুটি দিয়ে বানানো হালকা কিছু।” মায়ের কথা শুনে একগ্লাস দুধের সাথে একটু মটরশুটির খিচুড়ি খেয়ে অফিসে গেলাম। দিনটা ছিল ব্যস্ত, কিন্তু শরীরটা একদম হালকা আর এনার্জেটিক লাগছিল।
সেই থেকে প্রতিদিন সকালের খাবারে মটরশুটি যোগ করার সিদ্ধান্ত নিই।
মটরশুটি আমার দিন বদলানোর গল্প
প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে শক্তি ধরে রাখার জন্য পুষ্টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সকালে ভারী কিছু খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও সময়ের অভাবে অনেক সময় তা সম্ভব হয় না।
মটরশুটি এমন একটি উপাদান, যা সহজেই রান্না করা যায় এবং পুষ্টিগুণেও ভরপুর।
আমার প্রিয় রেসিপিগুলো
১. মটরশুটির ডিমভাজি: একটি ডিমের সাথে কিছু মটরশুটি আর পেঁয়াজ মিশিয়ে ভাজা। এটি শুধু সহজ নয়, বরং প্রোটিনের দারুণ উৎস।
২. মটরশুটির স্মুদি: হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। প্রথমে ভাবিনি এটি ভালো লাগবে, কিন্তু দুধ, মধু আর মটরশুটি মিশিয়ে যখন স্মুদি বানালাম, তখন স্বাদে মুগ্ধ হলাম।
৩. মটরশুটির হালকা সালাদ: শসা, টমেটো, লেবুর রস আর মটরশুটি মিশিয়ে একটি সালাদ তৈরি করি। এটি হালকা খাবার, যা পেট ভরিয়ে রাখে।
কীভাবে মটরশুটি আমার শরীরে কাজ করেছে
সকালের খাবারে মটরশুটি যোগ করার পর, কিছু বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করেছি:
- দিনভর এনার্জি বজায় থাকা: মটরশুটির প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট আমার শরীরকে সারাদিন কর্মক্ষম রেখেছে।
- হজমের সমস্যা দূর: ফাইবারসমৃদ্ধ মটরশুটি আমার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে অনেক উন্নত করেছে।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ: এটি কম ক্যালোরিযুক্ত হওয়ায় আমার ওজনও নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করেছে।
ব্যস্ত জীবনে সহজ সমাধান
সকালের খাবার বানানোর জন্য আমাদের কাছে সময় থাকে সীমিত। কিন্তু মটরশুটি দিয়ে এমন কিছু রেসিপি তৈরি করা যায়, যা সময় বাঁচায় এবং শরীরের জন্য পুষ্টিকর।
একটি ছোট্ট কনটেইনারে মটরশুটি সেদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দিলে কয়েকদিন ব্যবহার করা যায়।
মায়ের উপদেশ
আজ যখন সকালের খাবারে মটরশুটি খাই, তখন মায়ের সেই উপদেশের কথা মনে পড়ে। মা হয়তো জানতেন, জীবনে এনার্জি ধরে রাখতে কী প্রয়োজন।
আমিও মনে করি, মায়ের কথা শুনে যদি এই অভ্যাস না গড়তাম, তবে হয়তো দিনটাকে এভাবে উপভোগ করতে পারতাম না।
সবশেষে মটরশুটি খাওয়ার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বলছে, সকালের খাবারে মটরশুটি যোগ করা শুধু একটি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়, বরং এটি জীবনের একটি ইতিবাচক পরিবর্তন।
আপনার জীবনে হয়তো কোনো ছোট পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে, যা আপনাকে আরও সক্রিয় এবং সুখী করবে।
আজই চেষ্টা করুন। হয়তো মটরশুটি আপনার সকালকেও বদলে দেবে, যেমনটি আমার দিয়েছে।
সূত্র: Right News BD