অনেক নারী শ্রমিকরা তাদের স্বামীর অসুস্থতা কিংবা স্বামীর মৃত্যু বা অনুপস্থিতিতে নিজেদের পরিবারকে আগলে রাখছেন। এদের মধ্যে অনেক ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিশ্চিত করার জন্য খেটে যাচ্ছেন প্রতিদিন।
আবার নিজের বিয়ের টাকা জোগাড় করতেও নিয়মিত কাজ করতে হচ্ছে।
দেশের বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত পার্কসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন এমন হাজার হাজার নারী। সকাল থেকে সন্ধ্যা সড়ক ভরে যায় নারী শ্রমিকদের পদচারণায়।
বাস, সিএনজি, অটোরিকশা, জিপগাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে বাড়ি ফেরার বা কর্মস্থলে যাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।
বছর দশেক আগেও নারীরা নিজের ঘরের ভেতর থেকে কাঁথা সেলাই করা, টুপি বানানো, জাল তৈরি, বাঁশ আর পিতলের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করতেন।
কিন্তু এখন মেয়েরা কাজের জন্য ছুটছেন শিল্পকারখানা সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। বলা বাহুল্য, কাছাকাছি কাজের সুযোগ ও ভালো আয় এক্ষেত্রে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে।
বর্তমান সময়ে এমন পরিবার আছে যাদের পরিবারে স্ত্রীর রোজগার দিয়ে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ চলে। সংসারের তাড়নায় হাল ছাড়ছেননা বর্তমান প্রজন্মের নারী শ্রমিকরা।
দৈনন্দিন কর্মক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্য মেনে নিয়েই পুরুষের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে নারী শ্রমিকদেরও। ঘরের কাজ সেরে জীবিকার জন্য মাঠে কাজ করছেন নারী শ্রমিকরা।
অনেক নারী শ্রমিকরা জানান, কর্মক্ষেত্রে মজুরির বৈষম্য জেনেও জীবিকার তাগিদে কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
তাসলিমা নামের এক নারী শ্রমিক (৩৫) এর সাথে সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ২০১২ সালের দিকে আমার স্বামী মারা যান। তখন আমার কোলে আমার দুই মেয়ে আর এক ছেলে ছিল।
আমার বাপের বাড়ির লোকজন বলেছিল ছেলেমেয়েদের তাদের দাদির কাছে রেখে অন্য জায়গায় বিয়ে বসতে।
তবে তিনি এই বিয়েতে রাজি ছিল না। নিজের মধ্যে একটা জেদ কাজ করছিল তার। তার ছেলেমেয়েরে পড়াশোনা করিয়ে তাদের বাবার দায়িত্ব পালন করার প্রস্তুতি নেয়। সেই থেকে তিনি কেইপিজেডে কাজ করা শুরু করে।
এখন তার বড় মেয়ে ইন্টারমিডিয়েট ১ম বর্ষে, ছোট মেয়ে দশম শ্রেণিতে পড়ে আর ছেলেটা ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। এভাবে তিনি সংসার জীবনে কখনোই হাল ছাড়িননি।
সূত্র:- Right News BD