জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ৪ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসাবে পুলিশ

বিএনপি এবং জামায়াতসহ বিরোধী দলগুলো সামনে রেখে বর্তমান একজোটে সরকারবিরোধী আন্দোলনে নামছে। ঠিক তখনই জাতীয় নির্বাচনকে পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রক্ষার জন্য মহানগরীতে ৪,০০০ হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর জন্য এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ ১২ তম সাধারণ জাতীয় নির্বাচনকে এর পূর্বে কোনও প্রকার অপ্রীতিকর পরিস্থিতি রোধ করার প্রচেষ্টায় অংশ হিসাবে সারা দেশে ১০টি মেট্রোপলিটন এলাকাগুলোতে প্রায় ৪,০০০ (চার হাজার) সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করার পরিকল্পনা করছে, উক্ত বিষয়টির সাথে সমস্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

নাইট ভিশন উন্নতমানের সিসিটিভি ক্যামেরা গিয়ার সিস্টেম জাপানী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এই আমদানি করা হবে।

পুলিশ সদর দফতরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক গাজী মোজাম্মেল হক বলেন, “প্রায় ছয় বছর পূর্বে, মেট্রোপলিটন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্পটি অনুমোদিত হয়নি।”

এমতবস্থায় সম্ভবত আমরা অধ্যয়নের সম্মুখে রয়েছি। যত তাড়াতাড়ী সম্ভব আমরা এই কাজের আদেশ পাওয়ার জন্য যাব,” তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেছেন এবং উল্লেখ করেছেন যে পুলিশ ইতিমধ্যে সরকার পরিচালিত বিভিন্ন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান সংস্থার সাথে আলোচনা করেছে ৷

সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন- জাতীয় নির্বাচন

সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন- জাতীয় নির্বাচনকে নিয়ে

কর্মরত পুলিশ টেলিকম এবং সকল প্রকার জাতীয় নির্বাচনকে পরিদর্শন অনুযায়ী গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী, বরিশাল ও খুলনা মেট্রোপলিটন এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরাগুলো স্থাপনের দেখা শোনা করবে।

তবে বিএনপি এবং জামায়াত ও বিরোধী দলগুলো একসাথে সরকার বিরোধী গণআন্দোলনে নামছে। ঠিক তখনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

এমতবাস্থায় পুলিশের ধারণা বিএনপি এবং জামাতসহ বিরোধী দলগুলো নির্বাচনের পূর্বে যেকোন প্রকারে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি ঘটাতে পারে। তাই বিরোধী দলে থাকা অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আনার জন্য কঠোর ব্যবস্থার প্রয়োজন হবে বলে মনে করছেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার টিবিএসকে বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে থাকা সকল তথ্য অনুসারে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই প্রধান বিরোধী দলগুলো বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করতে পারে। সে জন্য তাদের এসব অপর্কমগুলো বন্ধ করার জন্য আমাদের পুরোপুরীভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।

এ রকম পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য, সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা এসব অপরাধীদের সঠিকভাবে খুঁজে বের করার একমাত্র হাতিয়ার হবে। এছাড়া, তিনি আরো বলেন, জাপান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসব নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা ক্রয় করার বিষয়ে সকল প্রকার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

“তাদের এই নাইট-ভিশন ক্যামেরার বৈশিষ্ট্য এবং কার্যক্ষমতা ও উচ্চ মানের ভিডিও ফুটেজ থাকবে, যা থেকে আমরা যে কারও বা কোন অপরাধীর পরিচয় সহ গাড়ির নম্বর সহজে চিনতে পারি, এ বিষয়ে ” তিনি উল্লেখ করেছেন।

সম্প্রতি সময়ে অনেক শহরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেগুলোতে ক্যামেরা রয়েছে, সেগুলোর বেশিরভাগ ক্যামেরাই অকার্যকর হয়ে গেছে, এদিকে পুলিশ সদর দফতরের কর্তৃপক্ষও অনুযায়ী যতটুকু সম্ভব এসব অকার্যকর ক্যামেরাগুলি মেরামত করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বলে সদর দফতরের সূত্র জানিয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, “গাজীপুর শহরে কিছু ক্যামেরা স্থাপন করা আছে। সেক্ষেত্রে এসব অপরাধীদের অনায়াসে শনাক্ত করার জন্য প্রত্যেক মোড়ে মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ক্যামেরা বসিয়ে আমাদের সিসিটিভি সতর্কতা দ্বিগুণ বৃদ্ধি করতে হবে।”

জাতিয় নির্বাচন সামনে রেখে নতুন ক্যামেরা স্থাপন

জাতিয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন ক্যামেরা স্থাপন

“নতুন ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে উপেক্ষা করে যেকোনো প্রকার নাশকতামূলক কার্যক্রম বন্ধ করতে আমাদের যথেষ্ট সাহায্য করবে,” তিনি যোগ করেছেন।

এর পূর্বে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী সাধারণ নির্বাচনের সময় সকল প্রকার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে অর্থবছরে বাজেটের পাশাপাশি ১,২২৬ কোটি টাকা ব্লক বরাদ্দ চেয়েছিল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠি পুলিশ সদর দফতরে অর্থ সহ সকল প্রকার সরঞ্জাম এবং রসদ কেনার জন্য ব্যয় করা হবে। তালিকায় থাকবে অস্ত্র, গোলাবারুদ, দাঙ্গা গিয়ার, মোটর যান, তথ্য যোগাযোগের জন্য সকল প্রকার প্রযুক্তি সরঞ্জাম এবং কম্পিউটার। এছাড়াও অন্যান্য জিনিসপত্র সহায়ক হিসেবে রয়েছে।

বহু সূত্র জানা যায়, পুলিশ এই মহুর্তে সরঞ্জাম ক্রয় করার জন্য বেশ কয়েকটি টেন্ডার দিয়েছে।

জামায়াতের ওপর কড়া নজরদারি

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার সহ বিভিন্ন জেলার অনেক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানান যে তারা এ সময় বিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীর সকল প্রকার কার্যকলাপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছেন। সিলেট রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক বলেন, “রাজনৈতিক কার্যকলাপে সরাসরি কোনো ধরা বাধাঁর নিয়ম নেই। এমতবস্থায় সকল পুলিশদের জামায়াত ইসলামীর সকল প্রকার কার্যক্রমের ওপর নজরদারী রাখতে বলা হয়েছে।”

এছাড়াও চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত সুপার টিবিএসকে বলেন জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে আরও কঠোর হতে বলা হয়েছে।

পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন এটি কোনও প্রকার রাজনৈতিক দলর কার্যক্রম করতে কোন প্রকার বাধা দেবে না, তবে নিয়ম অনুযায়ী কর্মসূচি অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন সম্প্রতি সময়ে আরো বলেছেন, “আমরা তাদের বিরোধী জলদস্যুদের কোন প্রকার বাধার সৃষ্টি করব না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা সহিংস হয়ে কোন প্রকার রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষতি না করে বা জনগণকে ক্রমাগত আক্রমণ না করে।

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমরা দেখতে পাচ্ছি বিরোধীদল জামায়াত-শিবিরের লোকেরা বারবার জঘন্যভাবে পুলিশের উপর আক্রমণ করছে। এমতবস্থায় ৩০ ডিসেম্বর, ১১ সদস্য আহত হয়। এ রকম অবস্থাতে তাদের পূর্বের নিয়মে ফিরে না আসে, তাহলে আমরা কোন প্রকার ছাড় দেব না।”

সূত্র:- রাইট নিউজ বিডি

en_USEnglish