ঘাড়ের ব্যথা (Neck Pain) দৈনন্দিন জীবন যাপনে এই ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যা জীবনের যেকোন বয়সের মানুষের মধ্যে দেখা দিতে পারে। এটি মূলত কাজের চাপ, অনিয়মিত জীবনযাপনের ক্ষেত্রে শারীরিক কারণ হতে পারে। ঘাড় ব্যথা নিত্যদিনের কার্যক্রমের মধ্যে দিয়ে কখনো কখনো এটি তীব্র আকার ধারণ করতে পারে।
এই পোস্টে আমরা ঘাড় ব্যথার কারণ, লক্ষণ এবং এর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করব।
নিয়মিত ঘাড়ের ব্যথা হওয়ার কারণসমূহ:
পেশীর টান (muscle tension): সঠিক ভঙ্গিতে না বসা, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার কারণে ঘাড়ে অতিরিক্ত চাপে পেশীগুলোতে টান পড়ে।
বয়সজনিত পরিবর্তন (Age-related changes): বয়সের সাথে সাথে ঘাড়ের হাড় দুর্বল হয়ে যায়, যা ব্যথার কারণ হতে পারে।
আঘাত বা দুর্ঘটনা (injury or accident): হঠাৎ আঘাত, গাড়ি দুর্ঘটনা বা ঘাড়ে আঘাতের ফলে পেশীর ক্ষতি হতে পারে।
অস্টিওআর্থ্রাইটিস (Osteoarthritis): ঘাড়ের জয়েন্টের স্থায়ীভাবে ঘাড়ের ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।
ডিস্কের সমস্যা (Disk problem): ঘাড়ের ডিস্ক সরে যাওয়া বা হারনিয়েটেড ডিস্ক (Herniated disc) থেকেও ঘাড় ব্যথার কারণ হতে পারে।
ঘাড়ের ব্যথার লক্ষণসমূহ: Symptoms of neck pain
ঘাড়ে তীব্র ব্যথা।
ঘাড় ঘোরাতে বা নড়াতে অসুবিধা।
মাথাব্যথা বা মাথা ঘোরা।
ঘাড় থেকে কাঁধ ও হাতে ব্যথার বিস্তার।
ঝিমঝিম ভাব বা দুর্বলতা।
ঘাড়ের ব্যথা প্রতিকার: Neck pain remedy
সঠিক ভঙ্গিমা বজায় রাখা (Maintain proper posture): কাজের সময় সঠিক ভঙ্গিতে বসা অত্যন্ত জরুরি। মাথা সোজা রেখে ঘাড়ে অতিরিক্ত চাপ কমাতে হবে।
স্ট্রেচিং এবং হালকা ব্যায়াম (Stretching and light exercise): ঘাড়ের পেশী শিথিল করতে নিয়মিত হালকা স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। তবে ব্যথা বাড়লে অতিরিক্ত চাপ দেওয়া ঠিক নয়।
ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক (Bake cold or hot): ব্যথা কমাতে গরম বা ঠাণ্ডা পানির সেঁক দেওয়া কার্যকর হতে পারে।
ম্যাসাজ থেরাপি (Massage therapy): প্রফেশনাল ম্যাসাজ থেরাপিস্টের সাহায্যে ঘাড়ের ব্যথা লাঘব করা যেতে পারে।
ওষুধ সেবন (taking medication): ব্যথানাশক ওষুধ যেমন আইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল খেলে ব্যথা সাময়িকভাবে কমতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
ঘাড়ের সাপোর্ট (Neck support): ঘুমানোর সময় ঘাড়ে সাপোর্ট দিতে আরামদায়ক বালিশ ব্যবহার করা উচিত।
কখন ডাক্তার দেখাবেন: When to see a doctor?
ঘাড় ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে।
হাত বা পায়ের দুর্বলতা বা ঝিমঝিম ভাব দেখা দিলে।
ঘাড় ঘোরাতে তীব্র অসুবিধা হলে।
মাথা ঘোরা, বমি ভাব বা চোখের দৃষ্টি সমস্যা দেখা দিলে।
পরিশেষে:
ঘাড়ের ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা হলেও সঠিকভাবে প্রতিকার না করলে এটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই প্রতিদিন সঠিক ভঙ্গিতে বসা, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘাড় ব্যথা কমানোর জন্য ঘরোয়া পদ্ধতি যেমন স্ট্রেচিং, গরম সেঁক ইত্যাদি চেষ্টা করতে পারেন। তবে যদি ব্যথা তীব্র হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সূত্র: Right News BD