এলপিজি নির্ধারিত দামে বিক্রি না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা

বর্তামন বাজারে এলপিজি নির্ধারিত দামে বিক্রি না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেক গ্রাহকরা। এমতবস্থায় সরকার এলপিজি নির্ধারিত দামে করলেও বাজারে তা কোনভাবেই মানা হচ্ছে না। গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত ১৭৫০ টাকা পরিশোধ করছেন প্রতি ১২ কেজি এলপিজির গ্যাসের জন্য ।

তবে ফেব্রুয়ারী মাসের জন্য সরকারী মূল্য ১৪৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। অপরপক্ষে, বিইআরসি জানুয়ারি মাসের ক্ষেত্রে প্রত্যেক ১২ কেজি এলপিজির দাম ১২৩২ টাকা নির্ধারণ করেছে। তারপরও এলপিজি নির্ধারিত দামে প্রত্যেক ১২ কেজি বোতল ১৫৫০ টাকার কম দামে বিক্রি হচ্ছিল। ফেব্রুয়ারিতে দাম নির্দিষ্টকরণ করার পরও এখনও বাজারে বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত।

রাজধানীর রামপুরার ভাড়াটে মিলি জানান, গত মাসের শুরুর দিকে তিনি ১২ কেজির একটি এলপিজি ১ হাজার ৪০০ টাকায় ক্রয় করেছিলেন। মাস শেষে দাম বেড়ে হয়েছে ১৭৫০ টাকা। সরকারী নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত দাম কখনোই মানা হচ্ছে না।

এলপিজি নির্ধারিত দামে বিক্রি না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা

এদিকে ডিলারদের থেকে এক হাজার ৪’শ ৫০ টাকা বেশি দামে এলপিজি ক্রয় করছেন, এ বিষয়ে রাজধানীর একজন এলপিজি খুচরা ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। এর মধ্যে প্রতিটি বোতলের শিপিং খরচ সহায়ক রয়েছে। সেটি সংযুক্ত করলে এলপিজির ক্রয়মূল্য দাড়াবে ১৪৮০ টাকা। কিন্তু তখন তিনি বিপরীত প্রশ্ন করে বলেন, দোকানের ভাড়া, কর্মচারী, আমার নিজের পরিবার, কত টাকায় বিক্রি করব?

বিইআরসি সরকারিভাবে প্রত্যেক মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করেছে। এর পূর্বে এলপিজি চালানকারীরা প্রকাশ করেছিলেন যে এই দাম পর্যাপ্ত নয়। পরে, বিইআরসি অপারেটরদের বোঝাতে আরও এক দফা শুনানি করে। অপারেটররা তখন মূল্য নির্ধারণের জন্য সম্মত হয়। কিন্তু সেই দামে এলপিজি পাচ্ছেন না গ্রাহক।

বিইআরসি অনুসারে, ডিসেম্বর মাসে সৌদি আরামকো ঘোষিত প্রোপেন এবং বিউটেনের সৌদি সিপি (চুক্তি মূল্য) ছিল যথাক্রমে ৬৫০ মার্কিন ডলার এবং ৬৫০ মার্কিন ডলার প্রতি মেট্রিক টন। জানুয়ারিতে এটি যথাক্রমে ৬৯০ মার্কিন ডলার এবং ৬০৯ মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। এবারই তা আবার বেড়েছে ঘোষিত সৌদি সিপি (চুক্তি মূল্য) প্রোপেন ও বিউটেনের দাম ৭৯০ মার্কিন ডলারে। দেশে এলপিজির ব্যবহার যোগ্য হিসেবে প্রোপেন ও বিউটেনের অনুপাত ৩৫:৬৫।

রাজধানীর মালিবাগের হেনা মমতাজ নামে একজন বাসিন্দা জানান, প্রত্যেকমাসে এলপিজির বেশি দাম দিয়ে ক্রয় করতে হয়। মাস শেষ হলেই আরেক মাসেই দাম বাড়ছে। আমাদের অল্প আয়ের মানুষের পক্ষে এই চাপ অনেক কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে।

যথাযথ এলপিজির চাহিদা এখন মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টন। সে অনুপাতে এলপিজির বার্ষিক চাহিদা ২৪০ হাজার মেট্রিক টন দাড়িয়েছে।

১২ কেজি এলপিজির দাম ১৪৯৮ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত রাখার কারণ জানতে চাইলে পার্শ্ববর্তী ডিলাররা বলেন, এর দায় কি কোম্পানির। এমন কি ১৮টি কোম্পানি বর্তমানে ডিলারদের কাছে বাণিজ্যিকভাবে এলপিজি গ্যাস বিক্রি করছে, কোম্পানিটি জানিয়েছে।

অভিযোগ ছিল এলপিজি সিলিন্ডার কোন সময়ে সরকারি দামে বিক্রি হয় না। ক্রেতাদের পাশাপাশি নির্ধারিত দামের বেশি দামে কিনতে হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ‘গলাকাটা’ দামে। ক্রেতাদের কোন উপায় নেই কিন্তু বাধ্য হয়ে কিনতে হচ্ছে এলপিজি সিলিন্ডার।

বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের প্রধান সেলস ইঞ্জিনিয়ার জাকারিয়া জালাল বলেন, “এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধি হওয়াটা কোম্পানির কোন ত্রুটি নয়। আমাদের গ্যাস বিক্রি ব্যবস্থায় কিছু ত্রুটি রয়েছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরেই বিইআরসিকে বলে আসছি। এ সমস্যা সমাধান করা হলে এলপিজি নির্ধারিত দামে বিক্রি করা সহনসাধ্য হবে।

সূত্র:- Right News BD

en_USEnglish