আবহাওয়ার পরিবর্তন বা ঠাণ্ডা লাগার কারণে আমাদের সর্দি-কাশি দেখা দেয়। সর্দি-কাশি দূর করতে অনেকেই বিভিন্ন ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করেন। আমার জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত সর্দি-কাশির দিনগুলো অসহনীয় হয়ে উঠেছে। কোনো কাজেই মন বসতো না, রাতের ঘুমও হারাম হয়ে যেত।
আমার দাদি আমাকে রসুন ও গোলমরিচ চা খাওয়া অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি শিখিয়েছিলেন।
আজ আমি সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই, যাতে আপনাদেরও উপকার হয়।
অতিরিক্ত সর্দি-কাশি দূর করার উপায়
রসুন
ছোটবেলায় রসুনের ঝাঁজালো গন্ধ আমার খুব অপছন্দ ছিল।
আমার দাদি সব সময় বলতেন, “রসুনই সর্দি-কাশির আসল ওষুধ।” আমি তখনও বিশ্বাস করতাম না, কিন্তু প্রথমবার যখন সর্দি-কাশি অনেক দিন ধরে ভালো হচ্ছিল না, তখন তার কথামতো রসুনের ব্যবহার শুরু করলাম।
সত্যি বলতে, ফলাফল দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
গোলমরিচ চা
গোলমরিচ দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়া দাদি আমাকে শিখিয়েছিলেন। প্রথমে এক কাপ পানিতে ২-৩টি গোলমরিচ এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে গরম করে চা বানানো হয়।
আমি প্রথমে এই চা খেতে রাজি হতাম না, কারণ এটির গন্ধ মোটেও ভালো লাগতো না। কিন্তু দাদির জোরাজুরিতে একবার খেয়ে দেখি, গলা অনেকটাই পরিষ্কার লাগছে।
কয়েকদিন খাওয়ার পর দেখলাম, আসলেই কাশি ও সর্দি বেশ কমে গেছে।
মধু
রসুন কুচি করে মধুর সঙ্গে খাওয়া আমার দাদির কাছ থেকে শিখেছিলাম। আমাকে একবার খুব ঠাণ্ডা লেগেছিল, আর দাদি বললেন, “এক চামচ মধুর সঙ্গে অল্প রসুন কুচি মিশিয়ে খাও।
মধু আর রসুন কুচি খেতে একটু অস্বস্তি হলেও বুঝলাম, এটি শরীরের ভেতর থেকে গরম করে তোলে এবং দ্রুত সর্দি-কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
রসুনের স্যুপ
যখন সর্দি-কাশিতে বেশি ক্লান্তি অনুভব করি, ঠিক তখন আমি রসুনের স্যুপ খাই।
গরম স্যুপে কয়েকটি রসুনের কোয়া কুচি করে মিশিয়ে খেলে শরীর অনেকটাই গরম হয়, আর শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া সহজ হয়ে যায়। এটি আমার জন্য খুবই আরামদায়ক হয়।
আমার ব্যক্তিগত সতর্কতা
তবে আমি একটি বিষয় খেয়াল রেখেছি, রসুন খাওয়ার সময় পরিমাণের দিকে সতর্ক থাকতে হয়।
একবার বেশি রসুন খাওয়াতে পেটে অস্বস্তি হয়েছিল। এরপর থেকে আমি বুঝে শুনে রসুন খাই।
সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন না খাওয়াই ভালো, কারণ এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হতে পারে।
আজ আমি যখন সর্দি-কাশি দূর করতে রসুনের ব্যবহার করি, তখন প্রতিবারই দাদির কথা মনে পড়ে। দাদির সহজ আর প্রাকৃতিক সমাধানগুলো আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।
আমি এখন নিজেও এই পদ্ধতিগুলো অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করি।
সর্দি-কাশি দূর করতে রসুন সত্যিই একটি কার্যকর প্রাকৃতিক উপাদান।
আপনি যদি সঠিক উপায়ে রসুন ব্যবহার করেন, তবে দ্রুত সেরে উঠবেন।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, এটি একটি প্রাকৃতিক পদ্ধতি, যা আপনাকে কেমিক্যালযুক্ত ওষুধের উপর নির্ভরশীল হতে দেয় না।
আপনার জন্য পরামর্শ
কখনো যদি আপনার সর্দি-কাশি হয়, তাহলে আমার মতো রসুন ও গোলমরিচের চা খাওয়া শুরু করতে পারেন।
আমি নিশ্চিত আমার দাদির শিখিয়ে দেওয়া পদ্ধতিগুলো আপনার জীবনেও কাজে লাগবে।
আর হ্যাঁ, রসুন খাওয়ার সময় মনে রাখবেন খুব বেশি না খাওয়াই ভালো।
দ্রুত সর্দি-কাশি দূর করার জন্য রসুন শুধু খাবার নয়, এটি এই সমস্যার জন্য মহৌষধ বলা যায়।
তাছাড়া আমাকে আমার দাদির স্নেহ ও ভালোবাসার কথা মনে করিয়ে দেয়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি একবার চেষ্টা করে দেখুন, হয়তো এটি আপনার জন্যও এমনই বিশেষ কিছু হয়ে উঠবে।
সূত্র: Right News BD