ডেঙ্গু রোগ পরিচিতি: ডেঙ্গু কীটপতঙ্গ বাহিত একটি সংক্রামক রোগ। আমাদের দেশে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে এ রোগের প্রভাব দেখা যায়। যে কোন বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এডিস জাতীয় মশার কামড়েই ডেঙ্গু জ্বর হয়। প্রাথমিকভাবে শনাক্ত হলে এ রোগ সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং চিকিৎসায় সেরে যায়। কিন্তু মারাত্বক হেমোরেজিক হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা না হলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে ডেঙ্গু জ্বর এর লক্ষণ ও প্রতিরোধে করণীয়
এডিস মশা চেনার উপায়
এডিস মশা দেখতে অনেকটা কিউলেক্স (Culex) মশার মত তবে গায়ে ডোরা কাটা দাগ আছে। এ মশা স্বচ্ছ পানিতে থাকতে ভালোবাসে। ফুলের টব, ভাঙ্গা হাড়ি-পাতিল, কলস, গাড়ীর পরিত্যাক্ত টায়ার, কৌটা, নারিকেল বা ডাবের খোসা ইত্যাদি যেখানে স্বচ্ছ পানি থাকে সেখানে এডিস মশা বংশ বৃদ্ধি করে। এডিস মশা আলো-আধারিতে (সকাল-সন্ধ্যা) কামড়ায়।
ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ
শরীরে তাপমাত্রা হঠাৎ করে ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রী বৃদ্ধি পায়।
মাথা ব্যথা, মাংসপেশী, চোখের পেছনে, পেটে ব্যথা এবং হাড়ে বিশেষ করে মেরুদন্ডে ব্যথা।
অরুচি, বমি বমি ভাব ও বমি করা।
চামড়ার নিচে রক্তক্ষরণ, চোখে রক্তক্ষরণ, চোখে রক্ত জমাট বাঁধা।
লালচে/কালো রঙের পায়খানা, দাঁতের মাড়ি, নাক, মুখ ও পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্তপাত।
রক্তচাপ হ্রাস, নাড়ীর গতি দ্রুত হওয়া, ছটফট করা, শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট বা অজ্ঞান হয়ে পড়া।
শরীরে হামের মত দানা দেখা দিতে পারে।
মারাত্মক (হেমোরেজিক) ডেঙ্গু জ্বরের ক্ষেত্রে শরীরের অন্তঃস্থিত বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে রক্তক্ষরণ এবং পেটে ও ফুসফুসে পানি জমতে পারে।
ডেঙ্গ জ্বর হলে কি করবেন ?
ডেঙ্গ জ্বর হলে দেরি না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকর্মীকে খবর দিবেন বা ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করবেন।
জ্বর যাতে না বাড়ে সে জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শক্রমে খেতে পারেন।
রোগীর মাথায় পানি দিন বা ভিজা কাপড় দিয়ে তা মুছে দিন।
রোগীকে প্রচুর পরিমাণে তরল ও স্বাভাবিক খাবার খেতে দিন।
রোগ বৃদ্ধি পেলে রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়
ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, ভাঙ্গা হাড়ি-পাতিল, টিনের কৌটা, গাড়ীর পরিত্যাক্ত টায়ার, ভাঙ্গা কলস, ড্রাম, নারিকেল ও ডাবের খোসা, ফাস্টফুডের কন্টেইনার, এয়ারকন্ডিশনার ও রেফ্রিজারেটরের তলায় পানি জমতে দেবেন না। যে সব স্থানে মশা জন্মায়- সেইসব স্থানে পানি জমতে দিবেন না, বাড়ীর ভেতর, আশ-পাশ ও আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখুন ১৯ দিনে অথবা রাতে ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করুন।
সূত্র: Right News BD