ডিজিটাল যুগে যা হারাতে বসেছি

বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমরা যা কিছু নিমিষের মধ্যে হারাতে বসেছি তা হলো। সবুজ-শ্যামল এই বাংলার মেঠো পথে চলার সময় চোখে পাড়তো গরুর গাড়ী, মহিষের গাড়ী, বিয়ে বাড়ীর পালকিতে চড়ে বর যেত কণের বাড়ি। আর পালকি বহনকারীগণ ঘুংগুর পায়ে নেচে নেচে গান গাইতো। কিন্তু এখন আর পালকি, গরুর গাড়ী চোখে পড়ে না। তেমনই ঘোড়ার গাড়ী টমটম এখন আর দেখা যায় না।

বর্তমান ডিজিটাল যুগের প্রভাবে ঢেকি আর চোখে পড়ে না। শীত মৌসুমে মেয়ে-জামাই আটার পিঠা খাওয়ানোর জন্য ভোর বেলায় ঢেকির পাড়ের শব্দ শুনা যেত।

কিন্তু এখন আর ঢেকি চোখে পড়েনা। ভোর রাতে কৃষক লাঙ্গল-জোয়াল ঘাড়ে নিয়ে জমিতে চলে যায় শীত কি বর্ষায়। জমিতে গিয়ে গরু মহিষ দিয়ে হালজুড়ে জমি চাষতো সকাল বেলা। পান্তাভাত কাঁচা মরিচ আর পেয়াজ দিয়ে পেট পুরে খেয়ে হুক্কার টান মেরে কৃষক আবার গরুর পিঠে চাবুক মেরে তারা জমিতে চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়ত। তবে ডিজিটাল যুগে এখন নতুন কৃষি প্রযুক্তি পাওয়ার ট্রিলার, ট্রাক্টর দিয়ে জমি চাষের ফলে এখন আর কৃষককে গরু-মহিষ দিয়ে হাল বইতে দেখা যায় না।

ডিজিটাল যুগে যা হারাতে বসেছি

ডিজিটাল যুগে হুক্কার ছেড়ে বিড়ি, বিড়ি ছেড়ে সিগারেট একই ভাবে ডিজাটাল যুগে গরুর গাড়ী, পালকী ছেড়ে বিয়ে বাড়ীতে। এখন বর ও বরযাত্রী মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার নিয়ে বিয়ে করে নিয়ে আসে। এখন একতারা দোতারা চোখে পড়ে না ব্যান্ড-শো আসায় এগুলো বিলুপ্তির পথে। এক সময় কাঠের খরমের খুব কদর ছিল, কিন্তু এখন তা আর কাঠের খরম ব্যবহার করতে কাউকে দেখা যায় না। এক সময় গ্রামগঞ্জে একতারা দোতারা কবিদের জারী গান গাইতে দেখা যেত।

কিন্তু এখন আর একতারা দোতারা চোখে পড়ে না। তাই কবি গানের শুরে বলেছেন: ‘‘একতারা বাজায়োনা দোতারা বাজায়োনা, একতারা বাজাইলে মনে পড়ে যায় একদিন বাঙ্গালী ছিলাম রে।’’।

এই কথাগুলোর মাধ্যমে আগের যুগের মানুষের কথাগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়। অনেকেই হাতে লিখে ডাক যোগে চিঠি পাঠাতেন। কিন্তু ডিজিটাল যুগে ঘটনা ঘটার সাথে সাথে ফেসবুক সহ সকল প্রকার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে মহুর্তে সারা পৃথিবীতে এসব ঘটনার বিবরণ প্রকাশ করে দিচ্ছে।

আবার খবরটি লিখে ই-মেইল করার সাথে সাথে পত্রিকার ডেক্সে পৌছে যাচ্ছে। এমতবস্থায় ডিজিটাল যুগ আসার ফলে আমরা পুরোনো দিনের কথা নিমিষেই ভুলে যেতে বসেছি।

সূত্র:- Right News BD

en_USEnglish