আমি ছোটবেলা থেকেই ফাস্ট ফুড খেতে খুব ভালোবাসতাম। তবে মা বলতেন, “বাইরের খাবার শরীরের জন্য ভালো না!” কিন্তু কে শোনে কার কথা? বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পিৎজা—এসব না হলে যেন দিনটাই ভালো কাটতো না! একদিন মায়ের কথায় স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে বুঝলাম—ঘরে ফাস্ট ফুড তৈরি করাই সবচেয়ে ভালো সমাধান হতে পারে।
ঘরে ফাস্ট ফুড তৈরি করার জন্য সেরা উপকরণ
বাইরের খাবার খেতে মজা লাগলেও, ওজন বৃদ্ধি, হজমের সমস্যা এবং নানা রকম অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। তাই আমি ঠিক করলাম, প্রিয় ফাস্ট ফুডগুলো ঘরে তৈরি করবো, তবে একটু স্বাস্থ্যকর উপায়ে!
গমের আটা বা ওটস
আগে বার্গার বান, পরোটা বা নুডলস বানাতে সাদা ময়দা ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন বুঝেছি, গমের আটা বা ওটস অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। আমার বানানো হোমমেড নুডলস খেয়ে আমার ছোট ভাই পর্যন্ত বলেছে, “আপু, এটা তো রেস্টুরেন্টের চেয়ে বেশি টেস্টি!”
মুরগির মাংস ও মাছ
আগে বাইরে ফাস্ট ফুডে রেসিপি খেতে গেলে, ডিপ ফ্রায়েড চিকেন বা প্রক্রিয়াজাত মাংস বেশি খেতাম। কিন্তু ঘরে বানাতে গেলে গ্রিলড বা বেকড চিকেন ব্যবহার করি। এতে ফ্যাট কম থাকে, আবার স্বাদও দারুণ হয়!
অলিভ অয়েল
মা সব সময় বলতেন, “তেল বেশি খাবি না, রোগা হয়ে যাবি!” এখন বুঝি, তেলের ধরনটাই আসল ব্যাপার। অলিভ অয়েল বা নারকেল তেল দিয়ে ফাস্ট ফুড রান্না করলে খাবারের স্বাদ অটুট থাকে, আবার অপ্রয়োজনীয় ফ্যাটও কমে যায়।
শাক-সবজি ও ফল
বার্গার বা স্যান্ডউইচ বানানোর সময় যখন আমি ক্যাপসিকাম, লেটুস, টমেটো, গাজর যোগ করি, তখন সেটার স্বাদ একেবারে রেস্টুরেন্টের মতো হয়ে যায়। আর এটা খেতেও অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর!
চিজ এবং দই
আগে পিৎজার জন্য প্রচুর প্রক্রিয়াজাত চিজ ব্যবহার করতাম, কিন্তু এখন আমি হোমমেড দই বা গ্রিক ইয়োগার্ট ব্যবহার করি। এতে পিৎজার ক্রীমি স্বাদ ঠিক থাকে, আবার ক্যালোরিও কম হয়।
ডিম
ডিম ছাড়া আমার কোনো ফাস্ট ফুড রেসিপিই যেন পূর্ণ হয় না! একদিন সকালে হুট করেই নুডলস বানানোর ইচ্ছে হলো, কিন্তু বাড়িতে মাংস নেই। তখন ডিম দিয়েই বানালাম, আর কী স্বাদ হয়েছিল!
মধু
আগে সস বা মিষ্টি খাবারে প্রচুর চিনি ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন মধু বা গুড় ব্যবহার করি। এতে স্বাদ ভালো হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার হয়।
কেন ঘরে ফাস্ট ফুড তৈরি করা উচিত?
আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—
বাইরের খাবারের প্রতি আসক্তি কমানো সম্ভব, যদি আমরা ঘরেই স্বাস্থ্যকরভাবে ফাস্ট ফুড তৈরি করি।
- কম ক্যালোরি: বাইরের খাবারের তুলনায় ঘরের খাবারে কম চর্বি থাকে।
- স্বাস্থ্যকর উপকরণ: নিজের পছন্দমতো স্বাস্থ্যকর উপাদান ব্যবহার করা যায়।
- কম খরচে বেশি স্বাস্থ্যকর খাবার: ঘরে তৈরি করলে অনেক কম খরচে বেশি পরিমাণ খাবার তৈরি করা সম্ভব।
- নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন: বাইরের খাবারের তুলনায় ঘরের খাবার অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
উত্তর: এটি তৈরি করার সময় যদি স্বাস্থ্যকর উপকরণ ব্যবহার করা হয় এবং কম তেলে রান্না করা হয়, তবে এটি সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যকর হতে পারে।
উত্তর: ভাজার পরিবর্তে গ্রিল, বেক বা এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে কম তেল ব্যবহার করেও সুস্বাদু ফাস্ট ফুড বানানো যায়।
উত্তর: অল্প সময়ের মধ্যে স্যান্ডউইচ, পাস্তা, বার্গার, নুডলস, পিৎজা, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়।
উত্তর: ফাস্ট ফুড তৈরির ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল, নারকেল তেল, সরিষার তেল, কিংবা ঘি ব্যবহার করলে বেশি স্বাস্থ্যকর হয়।
উত্তর: মুরগির মাংস, ডিম, মাছ, দই—এসব উপকরণ ফাস্ট ফুডের জন্য সবচেয়ে ভালো প্রোটিন উৎস।
সূত্র: Right News BD