গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার জীবনের প্রতিটি সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই সময়ে মায়ের খাদ্যাভ্যাস সরাসরি শিশুর বৃদ্ধির ওপর প্রভাব ফেলে। সুতরাং এই সময় পুষ্টিকর ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। জেনে নিই গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর ফল খাওয়ার উপকারিতা।
গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর ফল কেন গুরুত্বপূর্ণ?
একজন মহিলার ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় শরীরের পুষ্টি চাহিদা বৃদ্ধি পায়, আর ফল হচ্ছে প্রাকৃতিক পুষ্টির একটি দুর্দান্ত উৎস। এতে থাকা ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মায়ের ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
পুষ্টিকর ফলের উপকারিতা:
ভিটামিন ও মিনারেল
ফল যেমন আপেল, কমলা, কলা, এবং আম গর্ভবতী মায়েদের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড, এবং আয়রন থাকে যা শিশুর মস্তিষ্ক ও শারীরিক গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। পেঁপে, নাশপাতি, এবং আমলকীর মতো ফল হজম শক্তি সহজ করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
শিশুর সঠিক ওজন নিশ্চিত
ফলের মধ্যে থাকা প্রাকৃতিক শর্করা ও ক্যালোরি শিশুর বৃদ্ধির জন্য অপরিহার্য। তাই প্রতিদিন পুষ্টিকর ফল খাওয়া গর্ভবতী মায়ের জন্য অত্যন্ত জরুরি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
গর্ভাবস্থায় মা এবং শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ফল বিশেষ ভূমিকা রাখে। কমলা ও মাল্টার মতো ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল সর্দি-কাশি ও অন্যান্য সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ
গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা বৃদ্ধি পায়। আঙুর, আপেল, এবং খেজুর আয়রনের ভালো উৎস যা রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় নিরাপদে কোন ফল খাবেন?
যেসব ফল গর্ভাবস্থায় খাওয়া নিরাপদ এবং উপকারী:
- আপেল: ভিটামিন সি ও ফাইবার সমৃদ্ধ।
- কমলা: হাইড্রেশন ধরে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
- কলা: শক্তি বাড়ায় ও বমি ভাব কমায়।
- পেয়ারা: ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
- আঙুর: আয়রন ও ভিটামিন কে এর ভালো উৎস।
পরিশেষে
গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে পুষ্টিকর ফল খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। তাই সেই সময় নিয়মিত খাদ্যতালিকায় পুষ্টিকর ফল রাখুন এবং সুস্থ মা ও শিশু সুস্থ্যতা নিশ্চিত করুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
উত্তর: এই সময় একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য কমলা, আপেল, কলা, আঙুর এবং আমলকী খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী।
উত্তর: অনেক ক্ষেত্রে এ সময় আনারস ও পেঁপে এড়িয়ে চলা ভালো কারণ এগুলো জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে।
উত্তর: গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ২-৩ বাটি ফল খাওয়া উচিত যাতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত হয়।
উত্তর: খালি পেটে ফল খাওয়া যেতে পারে তবে অতি অ্যাসিডিক ফল যেমন, কমলা বা আনারস সকালে খেলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
উত্তর: ডায়াবেটিস থাকলে আপেল, নাশপাতি, এবং বেরি খাওয়া ভালো কারণ এগুলোতে প্রাকৃতিক চিনি কম থাকে।
সুত্র: Right News BD