তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বর্তমান ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ভূমিকম্পে ৫ হাজার ৭’শ জনের বেশি মানুষ মারা গেছে বলে জানা গেছে। তুরস্কে নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৩১ হাজার ছাড়িয়েছে।
এদিকে সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে সিরিয়ায় এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, তুরস্কে ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে। উভয় দেশের উদ্ধারকারী দল এখন পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকায় উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে। কারণ কাউকে জীবিত বাঁচানোর সম্ভব্য ক্ষীণ হয়ে আসছে।
জাতিসংঘ বলেছে, যে সিরিয়া সরকার গত সপ্তাহের মারাত্মক ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়ার পর দেশটিতে সাহায্য পৌঁছানোর জন্য আরও দুটি সীমান্ত ক্রসিং খোলার সম্মত হয়েছে।
বিবিসিকে বলেছেন, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের একজন মুখপাত্র, “এটি বড় ধরণের পরিবর্তন হতে চলেছে। আমরা এখন পর্যন্ত সীমান্ত ক্রসিং ব্যবহার করে আসছি।”
বহুসংখ্যক সিরিয়ান নাগরিক তাদের যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে ত্রাণ পৌঁছে না যাওয়ায় মতপ্রকাশ করেছেন।
দেশটির ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করেছে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকার উদ্ধার তৎপরতা প্রতিবদ্ধ করার জন্য।
তবে তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা গোষ্ঠীগুলো বলেছে, আসাদ সরকারের অব্যবস্থাপনা আর দেশের সব অংশে উদ্ধার অভিযানে সংযোগ স্থাপনে ব্যর্থতায় প্রধান বাঁধা।
দামেস্কের প্রেসিডেন্ট আসাদের সাথে সোমবার উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার পর দুটি নতুন সীমান্ত ক্রসিং খোলার বার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। এগুলি হল তুরস্কের সীমান্তে বাব আল-সালাম এবং আল রাই সীমান্ত ক্রসিং।
সেই সাথে বলেছে, যে বিদ্রোহী শাসিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় সীমান্ত ক্রসিং মুখ্যভাবে ৩ মাসের জন্যই শুধমাত্র খোলা থাকবে।
মিঃ গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিক, বিবিসি রেডিও ফোরের ওয়ার্ল্ড টুনাইট প্রোগ্রামে বলেছেন “খুব শীঘ্রই আমরা অন্য দুটি ক্রসিং চালু করব।
তিনি আরো বলেন, “আমরা আশা করছি চুক্তিটি যতদিন আমাদের ব্যবহার করতে হবে ততদিন দীর্ঘস্থায়ী হবে। আমরা যত দ্রুতবেগে এটি ব্যবহার শুরু করব আর আমি এটি ব্যতীত দ্বিতীয় বিষয় নিয়ে ভাবতে চাই না।”
এছাড়াও মিঃ দুজারিক আরো বলেছেন, “আমি শুধু ধারণা করতে চাই যে এই সংঘাতে লোকেরা যে পক্ষকেই সহায়তা করুক না কেন, তারা এখন রাজনীতিকে একদিকে রাখবে।”
তবে কখন এই দুটি সীমান্ত খুলে দেওয়া হবে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেননি তিনি। যাইহোক, মিঃ ডুজারিক সিরিয়ান ক্রসিং খোলার অনুমতি দিতে বিলম্বের জন্য দোষী সাব্যস্ত করেছেন।
“আমরা বুঝতে পারি যে বিভিন্ন সাহায্য সংস্থাগুলি যেগুলি জাতিসংঘের সাথে অধিভুক্ত নয় তারা ইতিমধ্যে এই সীমান্ত ক্রসিংগুলিতে সুবিধাভোগ করছে। জাতিসংঘের বৈশিষ্ট্য আমাদের নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে কাজ করতে হবে,” তিনি বলেছিলেন।
এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট আসাদ প্রকাশ্যে কোনো ব্যাখ্যা করেননি।
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ১ম কয়েক দিন বেশ কিছু ত্রাণ সরবরাহ সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছেছে। এই সাহায্যগুলি মূলত রাশিয়া, ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলি থেকে আসে।
তবে সিরিয়ার বিধ্বস্ত উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের বিদ্রোহী সীমাবদ্ধ এলাকাগুলো কার্যত বিচ্ছিন্ন রয়ে গেছে।
এর কারণ হল আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা শুধুমাত্র তুরস্কের ভিতর দিয়ে সীমান্ত গমন করে এই অংশগুলিতে পৌঁছাতে পারে। অথবা সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকা দিয়ে তাদের কাছে আগমন করতে পারে।
সূত্র:- Right News BD