মোবাইল আসক্তির কুফল থেকে বাঁচার উপায় কি

মোবাইল আসক্তির কুফল কি: বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল ডিভাইস আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। মোবাইল ফোন আমাদের জরুরী ভিত্তিক তথ্য সহ বিভিন্ন ধরণের বিনোদন প্রদান করতে সাহায্য করে৷

এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহারের যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধাও রয়েছে। যাইহোক, অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহারের কারণে সুবিধাগুলি আমাদের মানসিক সুস্থতার উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। 

শুধু তাই নয় নেটওয়ার্ক আর বিল থাকলেই আপনি যে দেশে বসবাস করেন সেখান থেকে দেশ ও দেশের বাইরের যেকোন স্থানের অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারবেন।

মোবাইল ফোন কে আবিস্কার করেন: আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে প্রথম মোবাইল ফোন তৈরি হয়েছিল ৩ এপ্রিল ১৯৭৩ সালে। এই ডিভাইসটি তৈরি করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মার্টিন কুপার। আর সে কারণেই তাকে মোবাইল ফোনের জনক বলা হয়।

আজকের এই পোস্টে মোবাইল আসক্তির কুফল থেকে কিভাবে বাঁচতে পারবেন সেই বিষয়ে একটি সচেতনতামূলক প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে।

মোবাইল আসক্তির কুফল থেকে বাঁচার উপায়

বিশেষ করে মোবাইল আসক্তি কাটিয়ে ওঠার প্রথম ধাপ হল সচেতনতা। তার কারণ আপনি যদি ঘন্টার পর ঘন্টা অর্থাৎ দীর্ঘ সময় ফোনের দিকে তাকিয়ে ফেসবুক কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখেন, তাহলে আপনার চোখ, মস্তিক সহ মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

মোবাইল আসক্তির লক্ষণগুলি চিনুন, ব্যাটারির চার্জ ফুরালেই আতঙ্ক, ভিডিও গান দেখা, ফেসবুক সহ খবর দেখার জন্য বিভিন্ন সাইট ঘাটা কিংবা সময় কাটাতে মোবাইল ফোনে গেমস খেলা। এই আসক্তির কারণে অনেকেই আছেন যারা রাতে ঘুমানের সময় সমস্ত রাত জেগে জেগে মোবাইলে সময় নষ্ট করেন।

মোবাইল ফোন ব্যবহারের সঠিক সময় নির্ধারণ করুন

প্রত্যেক দিন আপনার মোবাইল ফোন ব্যবহারের উপর স্পষ্টভাবে একটি সঠিক সময় নির্ধারণ করুন৷ যেমন খাবারের সময়, রাতে শোবার আগে। প্রত্যেক দিন প্রয়োজনীয় কাজে মনোযোগ দেওয়ার সঠিক সময় নির্ধারণ করুন। তাছাড়া নিশ্চিত করুন যে আপনার স্মার্টফোনটি আপনার দৈনন্দিন জীবন যাপনের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ, সম্পর্ক এবং স্ব-যত্নকে সীমাবদ্ধ করে না।

ইলেকট্রনিক ডিভাইস (digital detox)

নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী আপনার মোবাইল ফোন, ট্যাব বা ইলেকট্রনিক ডিভাইস থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখাকে ডিজিটাল ডিটক্স বলা হয়। তাছাড়া ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তির সাথে আপনার সম্পর্ক পুনরায় সেট করতে নিয়মিত ডিজিটাল ডিটক্স প্রয়োগ করার কথা বিবেচনা করুন।

বিশেষ করে এই ডিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট সময়কাল নির্ধারণ করুন: যেমন দিনের মধ্যে আপনার মোবাইল প্রয়োজন মনে হলে অন্তত্য ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মত ব্যবহারের পর থেকে পরে সম্পূর্ণরূপে ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। এই বিরতি আপনার মনকে রিচার্জ করবে পাশাপাশি ব্যক্তিগত কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে তুলবে। প্রতিদিন এই নিয়মটি আপনার মোবাইল ডিভাইসের উপর অযথা সময় করা ভাঙতে সাহায্য করবে।

প্রযুক্তির ব্যবহার

ইচ্ছাকৃতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার বন্ধ করুন। যেমন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মোবাইল ফোন স্ক্রোল করার পরিবর্তে, অ্যাপ ব্যবহারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সীমা সেট করুন। এতে দেখা যাবে আপনার প্রয়োজনীয় কাজের কোন রকম বিভ্রান্তি হবে না। তাছাড়া আপনার অ-প্রয়োজনীয় বিজ্ঞপ্তিগুলি বন্ধ করুন।

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়

মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অনলাইনে সময় না দিয়ে অফলাইনে যেসব কাজগুলো আপনাকে আনন্দ দেবে এমন কিছু কাজে জড়িত হোন। যেগুলো কাজে মোবাইল ফোন জড়িত নয়৷ যেমন, বই পড়া, সন্তানদের সময় দেওয়া, বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা ব্যক্তিগত কাজে জড়িত।

বিশেষ করে আপনি অফলাইনে এগুলো অভ্যাস তৈরি করলে নিয়মিত মানসিক স্বাস্থ্য ‍উন্নতি প্রদান করবে৷ এগুলি শুধু মোবাইল আসক্তির অভ্যাস কমাবেনা পাশাপাশি আপনার দৈনন্দিন জীবন যাপনকে সঠিক কাজে অগ্রসহ করে তুলবে।

মোবাইল ফোন আসক্তির থেকে ব্যক্তিগত যোগাযোগ তৈরি

ব্যক্তিগত যোগাযোগের জন্য ভার্চুয়াল অর্থাৎ বাস্তব নয় এমন কিছু ব্যবহার না করে পরিবারের সদস্য বা আশে পাশের লোকজনের সাথে কথা বলুন। এতে আপনার মানসিক স্বাস্থ ভালো থাকবে।

ডাক্তারের পরামর্শ

যদি মোবাইল আসক্তি আপনার দৈনন্দিন জীবনে পুরোপুরীভাবে প্রভাবিত করে। তাহলে সমাধানের জন্য একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া একটি মূল্যবান পদক্ষেপ হতে পারে। তাছাড়া আপনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে সঠিক কৌশলগুলি প্রদান করতে পারে।

বিশেষ করে আপনাকে আপনার মোবাইল ডিভাইসের উপর সমস্যাগুলি সমাধান করতে সহায়তা করবে।

উপসংহারে মোবাইল আসক্তির কুফল সম্পর্কে কিছু শেষ কথা

মোবাইল আসক্তি কাটিয়ে উঠতে আপনার সচেতনতা, ইচ্ছাকৃত আচরনই পারে একটি সঠিক জীবন যাপনের সঠিক রাস্তা। তাছাড়া অফলাইন অভিজ্ঞতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে, যে কেউ মোবাইল আসক্তির কবল থেকে মুক্ত হতে পারে এবং ডিজিটাল যুগে একটি মানসম্পন্ন জীবন তৈরি করতে পারে।

সূত্র:- Right News BD

bn_BDBengali