হতাশা বা দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়

একজন মানুষের জীবনে হতাশা বা দুশ্চিন্তা কতখানি ক্ষতি করে তা যদি আপনি জানতেন, তাহলে অহেতুক দুশ্চিন্তা করে মূল্যবান জীবনটাকে নষ্ট করতে চাইতেন না।

নিজেকে হতাশা বা দুশ্চিন্তা থেকে যেভাবে গড়ে তুলবেন

দৈনন্দিন জীবনে মানুষ বিভিন্ন কাজের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ডুবে থাকে। আর এই সমস্যা সমাধানের উপায়ও কোন না কোন মানুষের মাঝেই হয়ে থাকে। তাই কোন সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ সময় দুশ্চিন্তা না করে সমস্যা কোথা থেকে হচ্ছে সেটি খোঁজার চেষ্টা করুন। তারপর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।

দুশ্চিন্তার প্রধান কারণ

আমরা অধিকাংশ ব্যক্তিই চিন্তার কোন কারণই খুঁজি না এবং সেই চিন্তা সমাধানের চেস্টাও করি না। আমাদের ব্যক্তিগত ইচ্ছা অনিচ্ছার সঙ্গে যা মিলে আমরা সাধারণত তাই বিশ্বাস করে থাকি। কিন্তু যা মেলে না তার জন্য আমাদের অনেকটাই রাগ হয়।

আমাদের মাঝে এমনও আছেন যারা সমস্যা সমাধাকে অনেকটাই কঠিন করে দেখেন। এ ধরণের ব্যক্তি আবেগ দিয়েই যেকোন বিষয় ভেবে থাকেন। এমনও অনেকে আছেন যারা সমস্যার সঠিক সমাধান করার কথা চিন্তা না করেই আগেই সমাধান করার কথা ভেবে বসে থাকেন। এতে করে সেই ব্যক্তি নিজের জীবন অল্পতেই অতিষ্ট তো করেন, পাশাপাশি অন্যের জীবনকেও অতিষ্ট করে তোলেন।

আজকের এই আলোচনায় দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য কিছু টিপস অনুসরণ করা হয়েছে। আপনার যদি অহেতুক দুশ্চিন্তা মাথায় আসে তাহলে দূর করার জন্য নিচে থাকা কয়েকটি টিপস আপনার জন্য হতে পারে।

প্রথমেই আপনি কি কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হচ্ছেন সে বিষয়ে ভালোভাবে খতিয়ে বের করুন।

আন্তরিকতার সাথে বিষয়টি চিন্তা করুন।

বিষয়টি ভাবনা চিন্তার সময় আবেগকে চিন্তার বাইরে রাখুন। যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করুন।

আপনি যদি নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে চান তাহলে কাজে ব্যস্ত থাকুন। তাছাড়া যেকোন কাজে ব্যস্ত থাকলে অন্য খাতে চিন্তা যাওয়ার কোন রকম সম্ভবনা থাকে না। কারণ আপনি যতই বুদ্ধিমান হোন না কেন যেকোন বিষয়ে একাধিকবার ভাববেন না।

আমরা যদি যেকোন কাজ উৎসাহ বা আনন্দের সাথে করি তবে আমরা দুশ্চিন্তা গ্রস্থ হই না। তাছাড়া কাজের ফাকে একটা আবেগ অন্য এক আবেগকে দূরে সরিয়ে রাখে।

মানুষ যদি কাজে ব্যস্ত না থাকে তবে মানুষের মন শূন্যতায় ভোগে। আর তখনই মনে ভয়, ঘৃণা বা ঈর্ষা ভরে যায়। এসব আবোল তাবোল চিন্তার কারণেই মানুষের সুখ-শান্তি হারিয়ে যায়।

বিশেষ করে সব সময় নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। সেই সাথে আপনি সুখী না দুখী বিশেষ করে এই দুশ্চিন্তা কখনোই মাথায় আনবেন না। এতে করে দেখবেন আপনার মন থেকে এমনিতেই এসব দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে।

অহেতুক দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়

ছোটখাটো বিষয় নিয়ে কখনও দীর্ঘ সময় ধরে দুশ্চিন্তা করবেন না। বড় কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকুন এতে দুশ্চিন্তা থাকবে না। অহেতুক দুশ্চিন্তা করে সময় কাটানোর চেয়ে জীবনের এই ছোট্ট সুন্দর সময়টুকুকে কাজে লাগাতে পারেন।

যে কোন বিষয় নিয়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না।

যা আগে ঘটে গেছে তা নিয়ে অযথা দুঃখ প্রকাশ করবেন না। অতীত নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তা করাও ঠিক নয়।

অযথা দুশ্চিন্তা না করে কঠিন বাস্তবকে মেনে নিন। স্বপ্ন জগতে বাস করবেন না। মানুষের জীবনের গতানুগতিক সত্যকে মেনে নিন। মনে রাখবেন, যা ঘটার তাই ঘটবেই। যা সত্য ও বাস্তব তা যদি আপনাকে শুনতে খুব খারাপ লাগে তবুও সহজেই ভাববেন এটিই সুন্দর।

যা ঘটে থাকে তাকে মেনে নিন। নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী অপরকে নিয়ন্ত্রণ করার অভ্যাস ত্যাগ করুন।

অবশ্যই মনে রাখবেন, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের চেহারার গঠন ভিন্ন। কিন্তু প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিত্বও ভিন্ন। প্রতিটি মানুষই তার নিজের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। তাই অপরের ভুল সরাসরি ধরিয়ে না দিয়ে তার মতামতের মূল্য দিন। স্মরণ রাখবেন, অনেকে সরাসরি হুকুম করাটা পচ্ছন্দ করেন না। তাই কারো ভুল ধরিয়ে দিতে চাইলে যক্তি দিয়ে তাকে বোঝার চেষ্টা করবেন।

আপনার সারা জীবনের সমস্যা নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দুশ্চিন্তা করবেন না। বর্তমানকে নিয়ে সুখী থাকার চেষ্টা করবেন।

প্রতিদিন প্রতিটি কাজের জন্য একটি রুটিন তৈরি করবেন। রাতে ঘুমানোর আগে আগামী দিনের রুটিন ছক তৈরি করে ফেলুন।

কথা বলার সময় ধীর স্থিরভাবে বলুন। অপরের প্রশংসা করুন এবং কখনো কারো সমালোচনা করবেন না।

অপরের দোষ বা খারাপ কিছু বিষয় নিয়ে না ভেবে, তার ভালো দিকটা নিয়ে চিন্তা করুন।

সব রকম দুশ্চিন্তা এড়িয়ে গিয়ে ফ্রেস ঘুম দিন। অহেতুক দুশ্চিন্তা আপনাকে ক্রমেই অসুস্থ করে তুলবে।

পরিশেষে:

জীবনে অযথা হতাশা বা দুশ্চিন্তা না করে প্রাণ খুলো হাসুন। হাসি বা আনন্দের মধ্যে থাকলে দেহের বিভিন্ন রক্ত নালীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই ঠোঁটের এক কোণে সব সময় হাসি হাসি ভাব রাখুন কিংবা মন খুলে হাসুন।

One thought on “হতাশা বা দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়

Comments are closed.

bn_BDBengali