বর্তমান আধুনিক যুগে অনেকে আছেন স্থায়ীভাবে নিজের ত্বক ফর্সা করার বিভিন্ন উপায় খোঁজেন? স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার জন্য অনেক নারী পুরুষের ইচ্ছা থাকে। কিন্তু ত্বক ফর্সা করার জন্য বাজারে অনেক ক্রীম কিনতে পাওয়া যায়। এসব ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বক ফর্সা হওয়ার থেকে উল্টো আরো খারাপ হওয়ার সম্ভবনা হতে পারে।
অনেকেই আছেন এসব ক্রিম ব্যবহারের বদলে ঘরোয়া উপায়ে ত্বক ফর্সা করার উপায় খুঁজেন।
বর্তমান সময়ে সমাজের এ সকল শ্রেণীর নারী-পুরুষেরাই স্থায়ীভাবে ঘরোয়া উপায়ে ত্বক ফর্সা করার আগ্রহ করতে বেশি দেখা যায়। এছাড়াও ফর্সা ত্বক সৌন্দর্যের দিক দিয়ে পচ্ছন্দনীয় হিসেবে ধরা হয়।
যেহেতু সৃষ্টিকর্তার শ্রেষ্ট জীব হচ্ছে মানুষ। তাই প্রত্যেকটি জীবের সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির জায়গা থেকে সৌন্দর্যের দিক দিয়ে অনন্য।
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি অনুযায়ী গায়ের রঙ শ্যামলা হোক বা ফর্সা হোক ২টি হতে পারে একমাত্র সৌন্দর্যের একমাত্র উজ্জ্বলতা। আর দাগহীন ত্বক থেকে উজ্জ্বলতা এবং ফর্সা ভাব ফিরিয়ে আনার জন্য অনেক নারী বা পুরুষের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তোলে।
আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে বা ঘরোয়াভাবে আপনার ত্বক স্থায়ীভাবে ফর্সা করার কথা ভাবেন। তাহলে নিচের ৫টি ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে পারেন।
পেঁপে এবং ডিমের মাস্ক
পেঁপে এবং ডিম একসাথে মিশিয়ে নিয়মিত আপনার মুখের দাগ বা শ্যামবরণ ত্বক-এ ব্যবহার করলে আপনার ত্বক ফর্সা আর হালকা হয়ে যাবে। পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে আর ক্যারোটিনয়েড ত্বক-এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিমে থাকা ভিটামিন বি ১২, বায়োটিন, থায়ামিন, সেলেনিয়াম অ্যামিনো অ্যাসিড, ভিটামিন এ, বি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাসের মতো উপাদান ত্বকের সুন্দর উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সহয়তা করে। ডিমের প্রোটিন ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে টানটান রাখবে। এছাড়াও এর সাথে দই যোগ করলে আপনার ত্বক-এর ভিতর থেকে পরিষ্কার করবে।
প্রথমে ৩ চা চামচ পেপের রসের সাথে ২ চা চামচ দই, ৪ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার আর ৩ চামচ আমন্ড অয়েল, গ্লিসারিনের সাথে একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। তবে গ্লিসারিন আর ডিম ছাড়া সবকটি উপকরণ নির্দিষ্ট একটি পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এগুলো উপাদান মিশিয়ে ফেললে একটি ঘন পেস্ট মতো তৈরি হয়ে যাবে। সেটি তৈরি হওয়ার পর ফ্রিজে রেখে দিন দেড় থেকে দুই ঘণ্টা রেখে দিন।
সময় শেষ হওয়ার পর বের করে গ্লিসারিন আর ডিমের সাদা অংশ ভালোভাবে মেশান। এবার এই পেস্ট মুখে লাগিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
অ্যালোভেরা দিয়ে স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার উপায়
ত্বক ফর্সা করার জন্য অ্যালোভেরার উপকারিতা সবচেয়ে সেরা উপাদান হতে পারে। সে জন্য অ্যালোভেরা জেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক নিয়মিত ১৫ থেকে ২০ মিনিট মুখের ত্বকে ও গলায় লাগিয়ে রাখুন, এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি ব্যবহার করলে ত্বকের উপর রোদের পোড়া দাগ দূর হয়ে যায়।
ত্বক ফর্সা করতে বেসন ও লেবু রসের প্যাক
স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করার জন্য বেসন দারুণ কার্যকরী। তাছাড়া এটির পাশাপাশি লেবু খুব ভালোভাবে ত্বককে পরিষ্কার করে। এ দুটি উপাদান দিয়ে প্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে ৩ চামচ বেসন, ২ চামচ লেবুর রস, ১ চামচ হলুদ গুঁড়া ও পরিমানমত গোলাপ জল নিন। সবকটি উপকরণ একটি পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মেশানো হয়ে গেলে তারপর তা মুখে লাগান। মুখে লাগানোর পর ২০ থেকে ২৫ মিনিট শুকোতে দিন। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
আপনি এই প্যাকটি সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করতে পারেন। হলুদ ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে আর এর অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান কালো দাগ করতে সাহায্য করে।
ত্বকের যত্নে কাজু বাদামের উপকারিতা
কাজু বাদামে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা আপনার ত্বকে নতুন কোষ তৈরি করতে সাহায্য করে। এটি সঠিকভাবে মুখে ব্যবহার করলে মুখের ব্রণ এবং কালো দাগ দূর করে। এই ফেসপ্যাকের মাধ্যকমে ত্বকের ট্যানিং, মুখের বলিরেখা করে ও অকাল বার্ধক্যজনিত লক্ষণ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
ফেসপ্যাক তৈরির জন্য কাজুবাদাম, দুধ ও বেসন। দুধের মধ্যে কাজবাদামগুলি ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। এবার একটি মিক্সারে দুধ-সহ কাজুবাদামগুলি পেস্ট করে একটি মসৃণ প্যাক তৈরি করে নিন। তারপর একটি পাত্রের মধ্যে ঢেলে বেসন দিয়ে মিশিয়ে একটি ফেসপ্যাক তৈরি করুন। ফেস প্যাক তৈরি হয়ে গেলে এটি ব্যবহার করার আগে, আপনার মুখ ফেসওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে পরিস্কার করে নিন। কাজুবাদামের পেস্টটি মুখের ত্বকে, ঘাড়ে ভালোভাবে লাগান। লাগানোর ১৫ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩ বার এই ফেসপ্যাকটি ব্যবহার করুন। এই প্যাক ব্যবহার করলে আপনার ত্বক ধীরে ধীরে কালো দাগ সহ বার্ধক্যের লক্ষণগুলি দূর হয়ে উজ্জ্বলতা ও তারুণ্যের মত ফর্সা ভাব দেখাবে।
স্থায়ীভাবে ত্বক ফর্সা করতে মধু
আপনার ত্বকের যত্নে মধু মাখা একমাত্র সঠিক উপায় হতে পারে। এছাড়াও স্থায়ীভাবে আপনার ত্বক ফর্সা করার জন্য প্রতিদিন মধু খেতে পারেন। এটি দিয়ে ত্বক ফর্সা করার জন্য ব্যবহারের প্রথমে ১ গ্লাস গরম দুধের সাথে ২ চা-চামচ মধু আর ৩ থেকে ৪ টি জাফরান মিমিয়ে খেয়ে নিন। নিয়মিত খাওয়ার ফলে তিন মাসের মধ্যে ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা হয়ে ওঠবে ।
এই প্যাকটি তৈরির জন্য ১ চামচ মধুর সাথে পরিমাণ অনুযায়ী লেবুর রস মিশিয়ে নিন। পানি না মিশিয়েই খেয়ে নিন। এই মিশ্রণটি নিয়মিত সকালে নাশতার পর খেতে পারেন।
সবশেষে, বলা যায় এই পাঁচটি প্যাক ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক ফর্সা করার একমাত্র উপায় হতে পারে। এছাড়াও যদি আপনার মুখে খুব বেশি সমস্যা হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে পারেন।
সূত্র:- Right News BD