শীতকালের ঠান্ডা হাওয়া আর কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে মাশরুম স্যুপের বাটিটা সামনে পেলে আনন্দের কোনো তুলনা নেই। মাশরুম আমার কাছে শুধু খাবারই নয় এটা যেন একটা অনুভূতি। আমি মনে করি, রেস্টুরেন্টের মাশরুম এর স্বাদ আসলে সুস্বাদ নয় এটি শরীর ও মনকে প্রশান্তি দেয়।
কেন রেস্টুরেন্টের মাশরুম খেতে বেশি সুস্বাদু হয়
কিন্তু শুধু সুস্বাদু বলেই নয়, মাশরুমের প্রতি এই আকর্ষণের পেছনে আরও কিছু কারণ আছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো এর অসাধারণ পুষ্টিগুণ।
শীতে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো পর্যন্ত, মাশরুমের গুণাগুণ সত্যিই প্রশংসনীয়।
সর্দি-কাশি দূর করতে মাশরুমের কার্যকারিতা
আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে। শীতকালে প্রায়ই সর্দি-কাশি হতো। তখন মা বলতেন, “তোমার খাবারের তালিকায় মাশরুম রাখত।
মাশরুম ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করবে।” বড় হয়ে যখন রেস্টুরেন্টে প্রথম মাশরুম স্যুপ খেলাম, তখন সেই মায়ের কথাগুলো মনে পড়ল।
আমার সর্দি-কাশির সময় এই খাবার যেন একটা ছোট্ট আরামদায়ক ওষুধের মতো কাজ করে।
বিজ্ঞান শাস্ত্র বলছে, মাশরুমে রয়েছে বিটা-গ্লুকান নামক উপাদান, যা শরীরে শ্বেত রক্তকণিকা বাড়িয়ে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
এছাড়াও এতে থাকা ভিটামিন ডি ও সেলেনিয়াম ঠান্ডা ও সর্দি প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকর।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতায়, এক প্লেট মাশরুম কারি কিংবা গরম স্যুপ সর্দি-কাশির সময় একেবারে আশীর্বাদের মতো।
রেস্টুরেন্টে মাশরুম কেন বেশি ভালো লাগে?
আমার মতে, বাড়িতে রান্না করা মাশরুম আর রেস্টুরেন্টে খাওয়া মাশরুমের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। বাড়িতে যতই ভালো করে রান্না করি না কেন, সেখানকার মাশরুমের মতো স্বাদ আনতে পারি না।
রেস্টুরেন্টে মাশরুম প্রস্তুতের সময় উন্নত মশলা ব্যবহার করা হয় যা এই প্রক্রিয়া বাড়িতে আনা খুব কঠিন। তেল-ঘি বা সঠিক তাপমাত্রায় রান্না করা মাশরুম তার স্বাদ এবং টেক্সচারকে উন্নত করে।
বিশেষ করে রেস্টুরেন্টের সঠিক পরিবেশনা এমনই হয় যে, না খেয়ে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই এই পরিবেশে খাওয়ার আনন্দ আরও বেড়ে যায়।
আমার প্রিয় এই পদ্ধতিগুলোর মধ্যে রয়েছে গ্রিলড মাশরুম এবং মাশরুম টিক্কা।
এগুলো আমি কখনো বাড়িতে তৈরি করার কথা ভাবতেই পারি না। রেস্টুরেন্টে খেলে সেই বিশেষ স্বাদের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়।
শীতকালের আদর্শ খাবার
গত শীতে আমার খুব বেশি সর্দি-কাশি হয়েছিল। ওষুধ খাওয়ার পরও এই সমস্যা থেকে পুরোপুরি সারিয়ে উঠতে পাচ্ছিলাম না।
পরের দিন সন্ধ্যায় রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখলাম “হট অ্যান্ড সাওয়ার মাশরুম স্যুপ”-এর দিকে। মনে হলো একবার হলেও খেয়ে দেখি।
সত্যি কথা বলতে কি, ১ বাটি নিয়ে প্রথম চুমুকেই যেন শীতের ঠান্ডা, ক্লান্তি আর অসুস্থতা দূর হয়ে গেল।
গরম স্যুপ, মাশরুমের নরম টেক্সচার আর মশলার ঝাঁঝালো স্বাদ আমার শরীর ও মনকে প্রশান্তি এনে দিয়েছিল।
কেন সবারই রেস্টুরেন্টের মাশরুম খাওয়া উচিত?
রেস্টুরেন্টে মাশরুম এর একমাত্র গুণাগুণ হলো, এখানে এটি রান্নার সময় এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয় না।
বিশেষত যাদের শরীর দুর্বল বা ঠান্ডা লেগে যায়, তাদের ক্ষেত্রে এটি একটি আদর্শ খাবার।
মাশরুম এতটাই বহুমুখী যে, স্যুপ, কারি, পিজ্জা বা পাস্তা সহ যেকোনো ধরণের খাবারই অসাধারণ স্বাদ এনে দেয়।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
রেস্টুরেন্টে মাশরুম খাওয়ার অভিজ্ঞতা আমার কাছে শুধু খাবারই মনে হয় না, এটি আমার কাছে একটি আরামের মুহূর্ত মনে হয়।
মাশরুমের পুষ্টিগুণ সর্দি-কাশি দূর করতে সাহায্য করে পাশাপাশি এটি সবার জনপ্রিয় খাবার। তাই দিনে যখনই আমি বাইরে যাই, অন্তত্য একটি মাশরুমের পদ অর্ডার করি।
শরীরের এ সব সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আমার মত আপনারাও মাশরুম খেতে পারেন। এটি শুধু আপনার রসনাকে তৃপ্ত করবে না পাশাপাশি শরীরকেও সুস্থ রাখবে।
সূত্র: Right News BD