রংপুরের জয়ে, থেমে গেল সিলেট সমর্থকদের দাপট

২০২৩ বিপিএল খেলার খবর আপডেট -রংপুরের জয়ে, থেমে গেল সিলেট স্ট্রাইকার্স সমর্থকদের দাপট। এদিকে গ্যালারী ভর্তি সমর্থক হৈ চৈ করে কাঁপাচ্ছে পুরো স্টেডিয়াম।

কিছুক্ষণ পর বোঝা গেল, দর্শকদের হৈ চৈ শুধু গ্যালারীতে নয় অন্য জায়গা থেকেও আসছে। স্টেডিয়ামের সামনে ও পেছনের দুই গেট দিয়ে মাঠে প্রবেশ করা দর্শকদের হইচইয়ে যেন কাঁপছিল লাক্কাতুরা স্টেডিয়াম। মাঠে প্রবেশ করা দর্শকের ভিড় দেখে নিরাপত্তাকর্মীরাও সতর্ক হলো। ২০ মিনিটের মধ্যে সিলেট পুরো স্টেডিয়ামের গোলাপি রঙ্গে ভরে যায়। সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সির গোলাপী রং চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

বিপিএল খেলার সব দলগুলোর মধ্যে এরকম একতরফা সমর্থন শেষ কোথায় দেখা গিয়েছিল, সেটা আসলে চিন্তার বিষয়। কেননা রংপুর রাইডার্সের একটিমাত্র ব্যানার ছাড়া গ্যালারির প্রায় সব জায়গাতেই সিলেট সমর্থকদের দাপট! কিন্তু ব্যাপারটা হয়ে গেল উল্টো। নিজেদের মাঠ ভর্তি দর্শকদের সামনে একদম বাজে ব্যাটিং করল মাশরাফির দল।

রংপুরের দু’জন নতুন বোলার শেখ মেহেদী হাসান ও আজমতউল্লাহ ওমরজাইর বোলিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে গেল সিলেট। স্কোরবোর্ডে ১৮ রান হতেই ৭ উইকেট হারিয়ে বিপিএলের পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষ দলটির! এদিকে বিপিএলের সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড (৪৪) না হয়ে যায়। কিন্তু হলো না। সেখানে সিলেটের ছেলে তানজিম হাসানকে নিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি প্রতিরোধ করার ক্ষমতা গড়েন। ম্যাচটিতে ৪১ রান করেন তানজিম, মাশরাফি করেছেন ২১।

এতেই পুরো ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেট হারিয়ে ৯২ রান করে সিলেট। যা ১৫ ওভার ৪ বলে ৬ উইকেট নিজেদের ঝুঁলিতে রেখে টপকে গেল রংপুর।

রংপুরের জয়ে, থেমে গেল সিলেট সমর্থকদের দাপট

তবে গতকাল সিলেটের ম্যাচের উইকেট দেখে বড় স্কোর হওয়ার সম্ভাবনাটা উড়িয়ে দেন অধিনায়ক মাশরাফি। কিন্তু বল থেমে যাবে, বাঁক খাবে—এমন ধারণা ছিল অধিনায়ক মাশরাফির। মাত্র ১৮ রানে ৭ উইকেট হারার মতো নয়, রংপুরের রানের তাড়ায় বোঝা গেছে। সিলেটের এই ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রংপুরের ওপেনার ব্যাটসম্যান রনি তালুকদার খেলেছেন একদম সাধারণ গতিতে। তাঁর ৩৮ বলে ৪১ রানের ইনিংস শেষে সহজে জিতেছে দলটি। রনির এই ইনিংর্সে ২টি চার এবং ২টি ছক্কা ছিল। গ্যালারী ভর্তি সিলেট সমর্থকদের সামনে জয়ের পর রংপুরের ক্রিকেটার ম্যানেজমেন্টে সদস্যরা সিলেট স্টেডিয়ামে খেলা দেখতে আসা সমর্থকদের অভ্যর্থনার জবাব দিয়েছেন।

ক্ষতি যা হওয়ার সিলেটের প্রথম ৮ ওভারেই হয়েছে। রংপুরের আফগানি পেসার ওমরজাই নতুন বলটা সুইং করেন দুই দিকে। আর মেহেদী পেয়েছেন বাঁক ও বাউন্স। সিলেটের টপঅর্ডার সে সময় ধরে খেলেনি। দুই ওপেনার টম মুরস এবং নাজমুল হোসেন আক্রমণাত্মক ভাবে ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করেছেন। এ রকম অবস্থায় দুজনই উইকেট হারায়।

তৌহিদ হৃদয় ও ওমরজাইর বলে ভালো করে খেলতে গিয়ে এলবিডব্লু হন। এমতবস্থায় সিলেট ধাক্কাটা খায় মুশফিকের বিদায় হওয়াতে। ৪র্থ ওভারে হৃদয় আউট হওয়ার পরে গুড লেংথ থেকে ভেতরে আসা ওমরজাই এর চমৎকার ডেলিভারিতে মুশফিক বোল্ড হয় ।

অপরদিকে বিশাল অর্ডার ব্যাটসম্যান জাকির হাসানের ইনিংস লম্বা হয়নি। জাকির বিদায় হওয়ার পর পাওয়ার প্লেতে বিপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে সিলেট, তখন দলের রান হয় মাত্র ১৬।

রংপুরের জয়ে এই দু’জন ফাস্ট বোলার হারিস রউফ ও হাসান মাহমুদ এসে সিলেটের আঘাতটা ভিষণ গভীর করেন। দুজনই প্রথম ওভারে সিলেটের ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেরা ও ইমাদ ওয়াসিমকে আউট করেন। সিলেট তখন বিপিএলের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় । সেটি দূর করেন তানজিম। রউফের গতি ও বাউন্স সামলাতে হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের এই পেসারকে। রউফের একটি বল তানজিমের মাথায় আঘাত লাগে। তারপর রউফের পরের বলে বাউন্ডারি মারেন তানজিম।

সেটি দেখে বাহবাও পান রউফ। মাশরাফির সাথে ৪২ বলে ৪৮ রান যোগ করেন তিনি। হাসানের ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে তানজিমের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে ৪১ রান, ৫টি চার এবং ২টি ছক্কা ছিল তাঁর ইনিংসে। মাশরাফি করেন ২১ বলে ২১ রান। সিলেটের স্কোরকার্ডে এই দুজন রানটা দুই অঙ্কের ঘরে নিয়েছেন।

সূত্র:- রাইট নিউজ বিডি

bn_BDBengali