মুক্তি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে ‘সমাবেশ’

আজ নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার স্কুলছাত্রীর মুক্তি ‘হত্যার বিচারের দাবীতে’ রাজধানীর শাহবাগে ‘সাংস্কৃতিক সমাবেশে’ অনুষ্ঠিত হয়। সেই স্কুলছাত্রীর নাম মুক্তি রাণী বর্মণ (১৬)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দেশের বিভিন্ন ‘সামাজিক সাংস্কৃতিক’ ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা ‘হত্যাকারীর ফাঁসি চাই’ দাবি জানিয়ে শাহবাগে ‘সমাবেশ অনুষ্ঠিত’ হয়।

মুক্তি হত্যার বিচারের জোরালো দাবি নিয়ে সাংস্কৃতিক সমাবেশটি আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী’। এ ঘটনায় সেখানকার বক্তারা বলেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি পরিবর্তনের কারণে দিনের পর দিন মানুষ খুন হচ্ছে। ক্ষমতার সূত্র মতে সমাজে এ ধরনের ‘সমাজে মানুষ’ তৈরি হচ্ছে। সমাজে এসব খুনি যাতে তৈরি না হয় ‘কঠোর হাতে দমন’ করার জন্য রাষ্ট্রকে ঠিকঠাক নজর দিতে হবে।

মুক্তি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে ‘সমাবেশ’

গত ২ মে (মঙ্গলবার) বারহাট্টায় মুক্তি রাণী স্কুল থেকে ফেরার পথে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে নাম উঠেছে কাওছার মিয়া (১৮) তরুণের বিরুদ্ধে। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুক্তি রাণী বর্মণ বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগর ছালিপুরা গ্রামের নিখিল বর্মণের মেয়ে। সে উদীচী বারহাট্টা শাখার নারী প্রগতি সংঘের ইয়ুথ গ্রুপ ও কংস থিয়েটারের সদস্য ছিলেন। হত্যাকারি কাওছার একই গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে।

শাহবাগের সমাবেশে চলাকালে মুক্তি রাণী বর্মণের হত্যাকারীর জোরালো বিচার ও ফাঁসির দাবি করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘরের চেয়ারপারসন ও ডাকসু’র সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজা খানম। তিনি বলেন, ‘আগে গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ছিল। কিন্তু আজ গ্রামে আছে দৈহিক ও অর্থের ক্ষমতায় বলীয়ান শিক্ষা-যোগ্যতাহীন অমানুষেরা। এমন সমাজ ব্যবস্থা পরিবর্তনের ফলে ‘নারীর প্রতি সহিংসতার কারণ’ ঘটতেই থাকবে। আমরা দুঃখের জানাতে চাই যে ‘বাংলাদেশে আইনের শাসন ব্যবস্থা’ যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না, আর হবে বলেও তা মনে হয় না।

প্রত্যেক বছরে ৩ হাজারের বেশি নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছে, এমন তথ্য জানিয়ে মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম জানান, বর্তমান সমাজে ‘সহিংসতাকারী ও সহিংসতার শিকার—দু’জনই তরুণ। তাদের বয়স বিশ বছরের মধ্যে। আমাদের সমাজে ‘নারী নির্যাতনের মূল কারণ’, বর্তমান যুগে নারীর অবস্থান, নারী-পুরুষ সম্পর্কের ভিত্তিতে অসমতা ও সম্পদের অসমতা। আর এই সামাজিক অসমতাকে ধারণ করে সমাজে শিক্ষা, সাংস্কৃতিক অবস্থা, মননসহ সবকিছুই।

মুক্তি হত্যার বিচারের দাবিতে শাহবাগে ‘সমাবেশ’

বিচারহীনতার অপসংস্কৃতির কারণেই বর্তমান সারা দেশে এ ধরনের ‘অপরাধের কারণ’ দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। এ ঘটনা অভিযোগে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সাধারণ সম্পাদক ইকবালুল হক খান বলেন, ‘মুক্তি রাণী বর্মণের হত্যাকারী কাওছারের বিরুদ্ধে ‘মামলার ধারা সমূহ’ দেখে দ্রুত বিচারকার্য ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হোক। যতদ্রুত সম্ভব বিচারের মাধ্যমে তাঁর সর্বোচ্চ শাস্তি ‘ফাঁসির দাবি’ করছি। 

মুক্তি রাণী বর্মণের হত্যাকারী গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী করেন যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান। এ ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রকাঠামোতে এমন পরিস্থিতির কারণে সমাজে একজন ‘শিশু শিক্ষার গুরুত্ব’ নেই। আজ আমাদের দেশে বিচারব্যবস্থা, রাষ্ট্রকাঠামো সবকিছু ভেঙে পড়েছে। আমাদের ‘দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে’।

সূত্র:- Right News BD

bn_BDBengali