ঠাকুরগাঁওয়ে বাল্যবিবাহ থেকে মুক্তি পেল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী

ঠাকুরগাঁওয়ে পৌর শহরে একজন সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী বাল্যবিবাহ থেকে মুক্তি পেয়েছে। গতকাল ২১ মে (রবিবার) রাতে উপজেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হস্তক্ষেপে এই বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়।

এদিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার তথ্যে অনুযায়ী জানা যায়, গতকাল রবিবার ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের একটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির একজন ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন করার খবর পাওয়া যায়।



বাল্যবিবাহের এ বিষয়টি মো: মাহবুবুর রহমান ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক বাল্যবিবাহ বন্ধ করার উদ্যোগ হাতে নিতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামানকে জরুরী ভিত্তিতে নির্দেশ দেন। তখন ইউএনও রাত প্রায় ১১:৪৫ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কর্মকর্তাদের নিয়ে সেখানে দ্রুত হাজির হন। কর্মকর্তাগণ হাজির হওয়া মাত্র কনের বাড়িতে গিয়ে কনের জন্মসনদ দেখতে চান। বিষয়টি নিয়ে কনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কর্মকর্তাদের বিতর্ক হয়। কিছুক্ষণ পর কনের বাবা নিজেই স্বীকার করেন যে তাঁদের মেয়ের বয়স ১৫ বছর।

মেয়টির বিয়ের বয়স না হওয়ায় ইউএনও সেই বিয়ের কার্যক্রম নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। তারপর মেয়েটিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হেপাজতে রেখে কনের বাবাকে দশ দিনের জন্য বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন সেখানকার ভ্রাম্যমাণ আদালত। এমতবস্থায় বরপক্ষ বিয়ে করতে আসার কথা থাকলেও পরে তারা আর আসেনি।

ঠাকুরগাঁও জেলার বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুচরিতা সেনগুপ্ত বাল্যবিবাহ নিয়ে বলেন, সমাজে বাল্যবিবাহের কারণেই দেশের অসংখ্য মেধাবী শিশুদের জীবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। খবর পাওয়া মাত্র তাঁরা বাল্যবিবাহ থেকে মুক্তির দেওয়ার জন্য ওই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে রক্ষা করতে পেরেছেন। মেয়েটি যাতে ভালোভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য তাঁরাও পাশে থাকবেন।

এ বিষয়টি নিয়ে ইউএনও আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান বলেন, বাল্যবিবাহ একধরণের বেআইনি কিংবা বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। বাল্যবিবাহের খবর পাওয়া মাত্র বাল্যবিবাহ থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সেখানে অভিযান চালানো হয়। তারপর বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সপ্তম শ্রেণির মেয়েটিকে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হেপাজতে রাখা হয়েছে। মেয়েটির বিয়ের জন্য তার বাবাই দায়ী। বাল্যবিবাহ বেআইনি কাজ করার কারণে তার বাবাকে ১০ দিনের জন্য বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত দেওয়া হয়েছে।

সূত্র:- Right News BD

bn_BDBengali