আমরা প্রতিদিন তিনবেলা যে সব খাবার খাই না কেন? খাবার হজম শক্তি কারণেও আমাদের শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। পেটে হজমপ্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হলে ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, স্থূলতা, অপুষ্টিজনিত রোগ সহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্বাস্থ্য রক্ষার্থে সঠিকভাবে পেটে খাবার হজম হওয়া অত্যন্ত জরুরী।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভ
সাধারণত হজম শক্তি ব্যক্তিভেদে ভিন্ন রকম হয়। যাদের পেটে খাবার হজম হয় না, তাদের সঠিক খাদ্যাভাস, নিয়মিত ব্যায়াম ও সঠিক কিছু নিয়ম অনুসরণ করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি করা সম্ভব হতে পারে। সে জন্য পেটে হজম শক্তি বৃদ্ধির কয়েকটি সহজ উপায়গুলো হলো:
খাবার চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
আপনি যেকোন খাবার খান না কেন? সেই খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে। কারণ আপনি যখন খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাবেন, এতে আপনার পাচকরস নিঃসরণ তত ভালো থাকবে। এসব পাচকরস পেটের খাবার সঠিকভাবে হজম করতে সাহায্য করে।
লেবু খাওয়ার উপকারিতা
নিয়মিত খাবার তালিকায় লেবু রাখতে পারেন। নিয়মিত খাবারের সঙ্গে লেবু খাওয়ার ফলে পেটে খাবার হজম করতে যথেষ্ট সাহায্য করে। খাবার শেষে লেবুপানি খেতে পারেন।
ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার
প্রতিদিন খাবারের সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খান। ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। অনেকে আছে ল্যাকটোজেন অসহিষ্ণুতার কারণে একেবারে দুধ খেতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে দুধ না খেলেও অল্প করে নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস করা উচিত। কিংবা ল্যাকটোজ ফ্রি দুধ খেতে পারেন।
দই খাওয়ার উপকারিতা
দুধ খাওয়ার পরিবর্তে দই খেতে পারেন। দই পেটে হজম শক্তি বাড়াতে খুব সহায়ক। এতে অন্ত্রের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। ক্যালসিয়াম ও প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি হজম করতেও সাহায্য করে।
গ্রিন টি ও পুদিনা পাতা
দিনে অন্তত দুইবার গ্রিন টি বা পুদিনাপাতার চা পান করতে পারেন। এতে থাকা বিদ্যামান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাবার হজম করতে সাহায্য করে।
আঁশযুক্ত খাবার
প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার রাখুন। আঁশযুক্ত খাবার খেলে সহজে পানি শোষণ করে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত খাবার টেবিলে শাকসবজি, ফল, সালাদ, চিয়া সিড, ইসবগুল রাখতে পারেন। পানির পরিমাণ বেশি রয়েছে, যেমন সবজি, তরমুজ, বাঙ্গি, শসা, টমেটো, লাউ ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় বেশি রাখুন।
পর্যাপ্ত পানি পান
পানি ছাড়া কোনো খাবার সঠিকভাবে হজম হয় না। প্রতিদিন অন্তত ১০ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন। তবে অবশ্যেই খাওয়ার আগে কিংবা খাওয়ার মধ্য সময় অতিরিক্ত পানি পান করা যাবে না। এতে পেটে বদহজম হতে পারে।
রাতের খাবারের সময়
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য রাতের খাবার সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ৮টার মধ্যে খেয়ে ফেলা ভালো। গভীর রাতে খাবার খাওয়া একদমই ঠিক নয়। রাতের খাবার খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে ঘুমানো যাবে না। ঘুমনোর ২ ঘণ্টা আগে অবশ্যই রাতের খাবার গ্রহণ করুন।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
নিয়মিত ব্যায়াম করলে খাবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। সমস্ত দিনে অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম, যেমন হাঁটাচলা করা, জগিং ও ধিরে ধিরে সাইক্লিং করার চেষ্টা করুন। সাধারণত পেটে চাপ পড়ার মত, এমন ব্যায়াম করলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও বরাবর শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়ামও জরুরি। এতে শরীরের অক্সিজেন সরবরাহ করে।
রাতে ঘুমানোর সময়
নিয়মিত ঘুমের সময় প্রতি রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ভালো ঘুমের প্রয়োজন। সে জন্য প্রতি রাতে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমের জন্য রাত ৮ থেকে ৯টা কাজের ক্ষেত্রে রাত ১০টার আগে ঘুমানো প্রয়োজন। রাতে অযথা মোবাইল বা টিভি দেখে রাতজাগা যাবে না। ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস তৈরি করতে হবে। এতে হজমপ্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে উন্নতি চিকিৎসা। নিঃশ্বাস
অযথা দুশ্চিন্তা করা
আগামী দিনের ফেলে রাখা কাজ অথবা অন্য সময় করার কথা ভেবে ফেলে রাখা বা যেকোন বিষয়ে অযথা সময় দুশ্চিন্তা থেকে বিরত থাকতে হবে।
তেলে ভাজা খাবার
অতিরিক্ত তেলে ভাজা, ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার সহ ভাজাপোড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
অতিরিক্ত ধুমপান
ধূমপান থেকে শুরু করে বিড়ি, সিগারেট, পানের সঙ্গে জর্দা ও গুলের নেশা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিশেষে বলা যায়, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য উপরে থাকা নিয়ম আপনার জন্য অনেকটা কার্যকর হতে পারে। :-ধন্যবাদ-:
সূত্র:- Right News BD