পাকা চুল কালো করার তেলের নাম জানা আছে কি

আজকাল অনেকেই অনলাইন সহ অফলাইনেও পাকা চুল কালো করার সহজ উপায় খোঁজেন। তাছাড়া অনেকে প্রশ্ন করেন চুল কালো করার তেলের নাম কি? চুল কালো করার উপায় কি? পাকা চুল কালো করার কোন তেল আছে কি?

আজকের এই পোষ্টে পাকা চুল কালো করার কয়েকটি তেল সম্পর্কে জেনে দিয়েছি। আশাকরি এই তেলগুলো আপনি ব্যবহার করলে পাকা চুল কালো করার পাশাপাশি চুলের গোড়া অনেক মজবুতও হবে।

পাকা চুল কালো করার করার উপায় 

পাকা চুল কালো করতে নারকেল তেলের উপকারিতা

নারকেল তেল চুলের জন্য বেশ উপকারি। প্রতি ১০০ গ্রাম নারকেল তেলে ৮৯০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। মাপ অনুযায়ী এই তেলের চর্বির অর্ধেকটা লরিক এসিড। অন্যান্য স্যাচুরেটেড ফ্যাটের মধ্যে থাকে মাইরিস্টোলেইক এসিড ও পামিটোলেইক এসিড। এই তেলে থাকে-

  • ৮২% স্যাচুরেটেড ফ্যাট
  • ৬% মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট 
  • ২% পলস্যাচুরেটেড ফ্যাট

তাছাড়া নারকেল তেল মাথায় ব্যবহারের জন্য বেশি পরিচিত। নারকেল তেল ব্যবহারের ফলে মাথার চুলের এই সমস্ত ফ্যাটগুলি চুলকে শক্তিশালী এবং চকচকে করে তোলে।

অলিভ অয়েল পাকা চুল

অলিভ অয়েলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের মানসিক চাপ কমিয়ে পুরোনো রোগ দূর করে। অলিভ অয়েলে ভিটামিন ই ও পলিফেনল রয়েছে। এটি মূলত মানবদেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি শারীরিক প্রদাহ কমিয়ে ফেলে। এছাড়াও অন্যান্য ভোজ্য তেলের তুলনায় অলিভ অয়েলে খুবই হালকা হয়।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ অলিভ অয়েল আপনার চুলে আর্দ্রতা এবং চকচকে যোগ করতে পারে।

জোজোবা তেল

জোজোবা তেলে ভিটামিন সি, বি, ই এবং জিঙ্ক কপারের মতো খনিজ রয়েছে। আর এই পুষ্টি সমৃদ্ধ তেলটি আপনার চুল ও ত্বকের জন্য বিশেষ কাজে দেয়। জোজোবা তেল চুলের ময়েশ্চারাইজিং, ক্ষতি সাধান করে সুরক্ষা দেয়।

বিশেষ করে মাথার ত্বকে উত্পাদিত প্রাকৃতিক তেলগুলোর মতোই, জোজোবা তেল তেল উৎপাদনের ক্ষমতা বজায় রাখতে সহায়তা করতে পারে। এর পাশাপাশি অতিরিক্ত শুষ্কতা বা তৈলাক্ততাও প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

অকালে পাকা চুল কাঁচা করতে আরগান তেল

অরগান তেলে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। যা আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি হাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

অরগান তেল ত্বকের অতিরিক্ত সিবাম ক্ষরণকে দমন করতে পারে। অনেক মেয়ে ও ছেলেদের মুখের ব্রণের পরিমাণ কমিয়ে ত্বক কোমল ও মসৃণ করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন পুষ্টিগুণ তেলের মধ্যে অরগান তেল ত্বকের বার্ধক্যের ছাপ দূর করতে ভালো কাজ করে।

পুষ্টি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, আরগান তেল চুল উন্নত করার পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর চকচকে যোগ করতে পরিচিত।

ক্যাস্টর অয়েল

ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েলে পুষ্টিগুণ ভরপুর, যেমন – ভিটামিন ই, ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ওমেগা ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড। এটি চুলকে ময়েশ্চারাইজ করতে সহায়তা করে এবং খুশকিও কমাতে পারে। ব্ল্যাক ক্যাস্টর অয়েল মূলত একধরণের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার। এই অয়েল ব্যবহার করলে চুলকে নরম করতে সহায়তা করে। কালো ক্যাস্টর অয়েল চুলের মাথা ফাটা কমাতে পারে।

ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে যা চুলের বৃদ্ধি এবং পুরুত্বে সহায়তা করে। এটি খুশকি এবং মাথার ত্বকের স্বাস্থ্যেও সাহায্য করতে পারে।

বাদাম তেল

বাদাম তেল মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ভিটামিন ই এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে, হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে দেখানো হয়েছে। বাদাম তেল ওমেগা -৩ এবং ওমেগা -৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সহ স্বাস্থ্যকর অসম্পৃক্ত ফ্যাটি অ্যাসিডের একটি ভাল উত্স।

হালকা ওজনের এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ, বাদাম তেল চুলকে পুষ্ট করে, এটিকে নরম এবং আরও পরিচালনাযোগ্য করে তোলে।

কালোজিরার তেল

কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়। যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস। এছাড়াও কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে৷ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি সহ হৃদরোগের সমস্যা কমিয়েলে তাছাড়া ত্বকের স্বাস্থ বজায় রাখতে কালোজিরার তেল বেশ উপযোগী।

এটি সাদা চুল কালো করার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত না হলেও, কালোজিরার তেলের চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতি সহ অনেক উপকারিতা রয়েছে।

(ভারতীয় গুজবেরি) আমলা তেল 

৭৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রামের মধ্যে মানুষের জন্য প্রতিদিন আমলা তেল খাওয়ার সুপারিশ করা হয়। এর পুষ্টিগুণ দেওয়া হলো:

  • শক্তি: ৫৮,০০০ ক্যালোরি
  • প্রোটিন: ০.৫%
  • ফাইবার: ৩.৪%
  • চর্বি: ০.১%
  • কার্বোহাইড্রেট: ১৩.৭ গ্রাম
  • ক্যালসিয়াম: ৫০%
  • আয়রন: ১. মিঃগ্রাঃ
  • ক্যারোটিন: 9 মাইঃগ্রাঃ
  • রিবোফ্লাভিন: ০.০১ মিঃগ্রাঃ
  • থায়ামিন: ০.০৩ মিঃগ্রাঃ
  • নিয়াসিন: ০.২ মিঃগ্রাঃ
  • ভিটামিন: ৬০০ মিঃগ্রাঃ

আমলা ঐতিহ্যগতভাবে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য আয়ুর্বেদে ব্যবহৃত হয়। আমলা তেল চুলের পুষ্টি জোগায় এবং এর সামগ্রিক অবস্থার উন্নতি করে বলে বিশ্বাস করা হয়।

তিলের তেল

তিলের তেলে উচ্চমাত্রায় পুষ্টিকর থাকে। এই তেলে অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিন ই, বি কমপ্লেক্স ও ডি সমৃদ্ধ। তাছাড়া এই তেলে কপার, জিঙ্ক, ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। তিলের তেলের মধ্যে রয়েছে-

  • ৪১% লিনলিক এসিড
  • ৩৯% অলিক এসিড
  • ৮% পালমিটিক এসিড
  • ৫% স্টেরিক এসিড

ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ, তিলের তেল আপনার চুলের শক্তি এবং গঠন উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

আঙ্গুরের বীজ তেল

আঙুরের বীজের তেলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়। এছাড়াও এটি ভিটামিন ই এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এই পরিস্থিতিতে এটি সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব এবং ত্বকে দূষণের প্রভাব দূর করে। এটি ত্বককে ভেতর থেকে হাইড্রেট করে এবং ত্বকের রেখা কমাতে সাহায্য করে।

হালকা এবং সহজে শোষিত, আঙ্গুরের তেল চুলকে চর্বিযুক্ত না রেখে ময়শ্চারাইজ করতে পারে।

সূত্র:- Right News BD

bn_BDBengali