নিয়মিত আপনার তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ হওয়াটা একমাত্র ব্ল্যাকহেডসের কারণ হতে পারে। কিন্তু কিছু সহজ ঘরোয়া উপায়ে আপনার তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করবে।
যে ৫টি কার্যকরী উপায় তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করবে
১. লেবুর রস এবং মধুর মিশ্রণ
ত্বকের ব্রণ দূর করতে লেবুর রস এবং মধুর মিশ্রণ একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী উপায় হতে পারে।
নিচে এই মিশ্রণটি তৈরির প্রক্রিয়া, এর উপকারিতা এবং প্রয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
লেবুর রস এবং মধুর উপকারিতা
লেবুতে প্রাকৃতিকভাবে ভিটামিন সি এবং সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। এটি:
- ব্রণ দূর করে: লেবুর রস ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে এবং ব্রণর জীবাণু ধ্বংস করে।
- ত্বক উজ্জ্বল করে: এটি ত্বকের দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: ভিটামিন সি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে, যা ত্বকের কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয়।
অন্যদিকে, মধু:
- প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার: মধু ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকের শুষ্কতা কমাতে সাহায্য করে।
- ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী: এতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ আছে, যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে প্রতিরোধ করে।
- সজীবতা আনয়ন: মধু ত্বকের প্রাকৃতিক জেল্লা ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সজীব রাখে।
লেবু এবং মধুর মিশ্রণ তৈরির পদ্ধতি
১. একটি পাত্রে এক চামচ লেবুর রস এবং এক চামচ খাঁটি মধু নিন।
২. এই দুটি উপাদান ভালোভাবে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
৩. পেস্টটি তৈরি হয়ে গেলে ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে সরাসরি প্রয়োগ করুন।
৪. ১০-১৫ মিনিট রেখে দিন, এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এই মিশ্রণ ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
- প্রথমবার ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করুন, কারণ লেবুর রস ত্বকের সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।
- যদি ত্বকে জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি হয়, তাহলে অবিলম্বে মিশ্রণটি ধুয়ে ফেলুন।
- সংবেদনশীল ত্বকে সরাসরি লেবুর রস ব্যবহারের পরিবর্তে এটি পানির সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
লেবুর রস এবং মধু ব্যবহারের অন্যান্য টিপস
- সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
- বাইরে যাওয়ার আগে এই মিশ্রণ ব্যবহার না করা উত্তম, কারণ লেবুর রস সূর্যালোকের সংস্পর্শে এসে ত্বকে সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে।
এই সহজ এবং প্রাকৃতিক উপায়টি তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী।
নিয়মিত ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে আরও উজ্জ্বল ও মসৃণ।
২. অ্যালোভেরা জেল (তৈলাক্ত ত্বক ও ব্রণের সমস্যায় কার্যকরী সমাধান)
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে অ্যালোভেরা জেল একটি প্রাকৃতিক এবং কার্যকরী সমাধান। অ্যালোভেরা ত্বকের যত্নে বহুবিধ উপকারী, বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বক ও ব্রণের সমস্যার জন্য এটি খুবই কার্যকর।
নিচে অ্যালোভেরা জেলের উপকারিতা, এর প্রয়োগ পদ্ধতি এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অ্যালোভেরা জেলের উপকারিতা
ত্বকের জন্য অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক এবং ভেষজ উপাদান যা ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। এর কয়েকটি উপকারিতা হলো:
- প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি: অ্যালোভেরা ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে ব্রণর লালচে ভাব এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
- ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধী: এতে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সহায়ক।
- ত্বক আর্দ্র রাখে: অ্যালোভেরা ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে, যা ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং তৈলাক্ত ভাব কমায়।
- ত্বক পুনরুজ্জীবিত করে: এতে ভিটামিন ই এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা ত্বকের কোষ পুনর্গঠনে সহায়তা করে এবং ত্বককে সজীব রাখে।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের পদ্ধতি
১. প্রথমে একটি তাজা অ্যালোভেরা পাতা নিন এবং এটি কেটে ভেতরের স্বচ্ছ জেলটি সংগ্রহ করুন। যদি তাজা অ্যালোভেরা পাওয়া না যায়, তাহলে খাঁটি এবং প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
২. ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে সরাসরি অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করুন।
৩. ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন যাতে জেলটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করতে পারে।
৪. কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের কিছু টিপস
- প্রতিদিন ২ বার (সকালে এবং রাতে) অ্যালোভেরা জেল প্রয়োগ করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ দ্রুত শুকিয়ে যাবে এবং ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমবে।
- রাতে ঘুমানোর আগে মুখ পরিষ্কার করে অ্যালোভেরা জেল লাগিয়ে রাখলে তা আরও কার্যকর হতে পারে।
- সংবেদনশীল ত্বকে ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করুন। যদি কোনো অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া হয়, তাহলে ব্যবহার বন্ধ করুন।
ব্যবহার সতর্কতা
- অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের পরপরই সূর্যের আলোতে বের না হওয়া উত্তম, কারণ ত্বক তখন সূর্যের সংবেদনশীলতায় ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
- বাজারের অনেক অ্যালোভেরা জেলে কেমিক্যাল এবং সংরক্ষণকারী উপাদান থাকতে পারে, তাই খাঁটি অ্যালোভেরা জেল বা ঘরে তৈরি তাজা অ্যালোভেরা ব্যবহার করা নিরাপদ।
অ্যালোভেরা জেলের অন্যান্য সুবিধা
- দাগ দূর করে: নিয়মিত অ্যালোভেরা ব্যবহার ত্বকের কালো দাগ ও ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়: এটি ত্বকের প্রাকৃতিক জেল্লা বৃদ্ধি করে এবং ত্বককে মসৃণ রাখে।
অ্যালোভেরা জেল একটি সহজলভ্য এবং প্রাকৃতিক সমাধান, যা তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত এবং সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে আরও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
৩. টমেটোর রস ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক
ত্বকের ব্রণ দূর করতে টমেটোর রস একটি প্রাকৃতিক এবং প্রমাণিত উপায়।
টমেটোতে রয়েছে ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ব্রণ দূর করার পাশাপাশি ত্বককে উজ্জ্বল এবং মসৃণ করতে সহায়ক।
নিচে টমেটোর রসের উপকারিতা, এর ব্যবহার পদ্ধতি এবং সতর্কতা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
টমেটোর রসের উপকারিতা
ত্বকের জন্য টমেটোর রস বিশেষভাবে উপকারী কারণ এতে উপস্থিত থাকে:
- ভিটামিন সি: টমেটো ভিটামিন সি-তে সমৃদ্ধ, যা ত্বকের ব্রণ দূর করতে এবং ত্বকের দাগ দূর করতে সহায়ক।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট: এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের কোষগুলিকে সুরক্ষা দেয় এবং নতুন কোষ গঠনে সহায়তা করে।
- অ্যাস্ট্রিনজেন্ট প্রপার্টিজ: টমেটোর প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদান ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে, যা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।
- পিএইচ ব্যালেন্স: টমেটোর রস ত্বকের পিএইচ লেভেল নিয়ন্ত্রণে রেখে ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমাতে সাহায্য করে।
টমেটোর রস ব্যবহারের পদ্ধতি
১. একটি পাকা টমেটো নিন এবং এর রস বের করে নিন। তাজা টমেটোর রস ব্যবহার করা সবসময় ভালো।
২. একটি কটন প্যাড ব্যবহার করে টমেটোর রসটি ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে লাগান।
৩. ১০-১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন যাতে রসটি ত্বকে ভালোভাবে শোষিত হয়।
৪. এরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন এবং শুকিয়ে নিন।
টমেটোর রস ব্যবহারের টিপস
- সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করতে পারেন, তবে যদি ত্বকে অতিরিক্ত শুষ্কতা বা অস্বস্তি হয়, তবে ব্যবহারের ফ্রিকোয়েন্সি কমিয়ে ফেলুন।
- রাতে ঘুমানোর আগে টমেটোর রস লাগিয়ে রাখতে পারেন, এটি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী এবং রাত্রিকালে ত্বকের পুনরুজ্জীবন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।
- টমেটোর রসের সাথে মধু বা অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে ব্যবহার করলে আরও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
- টমেটোর রস ত্বকে সরাসরি ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করুন, কারণ এটি ত্বকের সংবেদনশীলতায় প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
- টমেটোর রস ব্যবহার করার পরপরই সূর্যালোকের সংস্পর্শে না যাওয়াই ভালো, কারণ এটি ত্বককে সংবেদনশীল করতে পারে।
- ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক মনে হলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
টমেটোর রসের অন্যান্য সুবিধা
- ত্বক উজ্জ্বল করে: টমেটোর রস নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক আরও মসৃণ হয়।
- দাগ ও পিগমেন্টেশন কমায়: এতে থাকা প্রাকৃতিক অ্যাসিড ত্বকের দাগ ও পিগমেন্টেশন কমাতে সহায়ক।
- ত্বকের ছিদ্র সংকুচিত করে: টমেটোর রস ত্বকের বড় ছিদ্রগুলো সংকুচিত করতে সাহায্য করে, যা ব্রণ প্রতিরোধে কার্যকর।
টমেটোর রসের প্রাকৃতিক মাস্ক তৈরি
১. একটি টমেটো কেটে রস বের করে নিন।
২. এতে এক চামচ মধু মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।
৩. এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন।
৪. শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
টমেটোর রস একটি সহজলভ্য এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত এবং সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে আরও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
৪. শসার প্যাক ত্বকে ব্রণের সমস্যা কমাতে সহায়ক
এক্সট্রা গ্লোয়িং ত্বকের জন্য শসার প্যাক একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী পদ্ধতি। শসার ফেসপ্যাক ত্বককে স্বস্তি দেয়।
শসা ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বক এবং ব্রণ সমস্যার সমাধানে। শসায় থাকা প্রাকৃতিক উপাদান ত্বককে ঠান্ডা রাখে এবং ব্রণের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
শসার উপকারিতা
কার্যকরী শসার পুষ্টি উপাদান ত্বকের ব্রণ দূর করতে সাহায্য করে। যেমন
- ত্বক ঠান্ডা রাখে: শসা ত্বকের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং প্রদাহ কমিয়ে দেয়, যা ব্রণের ফোলাভাব কমাতে সহায়ক।
- প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট: শসায় থাকা প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট উপাদান ত্বকের ছিদ্র সংকুচিত করে, যা তৈলাক্ততা কমাতে এবং ব্রণ প্রতিরোধে সহায়ক।
- ভিটামিন সমৃদ্ধ: এতে ভিটামিন এ, সি, এবং ই থাকে, যা ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে।
- হাইড্রেটিং প্রপার্টি: শসা ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করে, যা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।
শসার প্যাক তৈরির পদ্ধতি
১. প্রথমে একটি শসা ভালো করে ধুয়ে নিন এবং খোসা ছাড়িয়ে পাতলা করে কেটে নিন।
২. শসার টুকরোগুলো একটি ব্লেন্ডারে দিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
৩. এই পেস্টের সাথে এক চামচ লেবুর রস অথবা মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন (লেবু অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে, আর মধু ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে)।
৪. প্যাকটি ত্বকের ব্রণ আক্রান্ত স্থানে বা পুরো মুখে লাগিয়ে নিন।
৫. ১৫-২০ মিনিট রেখে দিন, যাতে প্যাকটি ত্বকের সাথে ভালোভাবে মিশে যায়।
৬. প্যাকটি শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
শসার ৩টি সহজ ফেসপ্যাক পদ্ধতি
- সপ্তাহে ৩-৪ বার শসার প্যাক ব্যবহার করতে পারেন, এটি ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে এবং ব্রণ দূর করতে সহায়ক।
- চোখের চারপাশে শসার পাতলা টুকরো লাগিয়ে রাখতে পারেন, এটি চোখের ক্লান্তি দূর করে এবং ত্বককে সজীব রাখে।
- লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন, কারণ লেবু সংবেদনশীল ত্বকে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
শসার প্যাক ব্যবহারে সতর্কতা
- সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র শসার পেস্ট ব্যবহার করুন, লেবুর রস যোগ না করাই ভালো।
- শসার প্যাক ব্যবহার করার পরপরই সূর্যের আলোতে না যাওয়াই ভালো, কারণ এতে ত্বক সংবেদনশীল হয়ে যেতে পারে।
- যদি ত্বকে কোনো অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়, তবে প্যাকটি অবিলম্বে ধুয়ে ফেলুন।
অন্যান্য সুবিধা
- ত্বক উজ্জ্বল করে: নিয়মিত শসার প্যাক ব্যবহারে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক আরও মসৃণ হয়।
- ব্রণের দাগ কমায়: শসার প্যাক ত্বকের দাগ ও পিগমেন্টেশন কমাতে সহায়ক।
- ত্বক হাইড্রেট করে: শসার প্রাকৃতিক হাইড্রেটিং প্রপার্টি ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং শুষ্কতা প্রতিরোধ করে।
শসার প্যাক একটি সহজলভ্য এবং প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বকের ব্রণ দূর করতে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত এবং সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে আরও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
৫. চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জল
তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ দূর করতে চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জল একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী সমাধান।
চন্দন পাউডার ত্বকের জন্য অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং ঠান্ডা রাখার উপাদান হিসেবে পরিচিত, যা ব্রণ এবং ত্বকের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অন্যদিকে, গোলাপ জল ত্বককে শীতল এবং সতেজ রাখে।
চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জলের উপকারিতা
গোলাপ জল ও চন্দন পাউডার ত্বকের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এর কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো:
- অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ: চন্দন পাউডারে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিজ, যা ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করতে সহায়ক।
- প্রদাহ কমায়: এটি ত্বককে ঠান্ডা রাখে পাশাপাশি ব্রণের ফোলাভাব কমিয়ে লালচে ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
- প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিনজেন্ট: গোলাপ জল ত্বকের ছিদ্র সংকুচিত করে এবং ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করে, যা তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী।
- ত্বক উজ্জ্বল করে: চন্দন পাউডার ত্বকের কালো দাগ এবং ব্রণের দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে সহায়ক।
- প্রাকৃতিক হাইড্রেশন: গোলাপ জল ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ত্বককে সতেজ ও মসৃণ করে।
চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জলের প্যাক তৈরির পদ্ধতি
১. একটি পাত্রে দুই চামচ চন্দন পাউডার নিন।
২. এতে প্রয়োজনমতো গোলাপ জল যোগ করুন এবং একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন।
৩. প্যাকটি ব্রণ আক্রান্ত স্থানে বা পুরো মুখে সমানভাবে লাগান।
৪. ১৫-২০ মিনিট প্যাকটি শুকাতে দিন।
৫. কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং শুকিয়ে নিন।
চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জলের প্যাক ব্যবহার পদ্ধতি
- সপ্তাহে ২-৩ বার এই প্যাক ব্যবহার করতে পারেন, এটি ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণে এবং ব্রণ দূর করতে সহায়ক।
- রাতে ঘুমানোর আগে এই প্যাক ব্যবহার করা আরও কার্যকর হতে পারে, কারণ এটি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে এবং ত্বকের কোষগুলিকে পুনর্জীবিত করে।
- ত্বকের কালো দাগ এবং ব্রণের দাগ কমাতে নিয়মিত ব্যবহার করুন।
প্যাক ব্যবহারে কিছু সতর্কতা
- যদি আপনার ত্বক খুব সংবেদনশীল হয়, তবে প্রথমবার ব্যবহার করার আগে প্যাচ টেস্ট করে নিন। যদি কোনো অস্বস্তি বা জ্বালাপোড়া হয়, তবে ব্যবহার বন্ধ করুন।
- বাজারে অনেক ধরনের চন্দন পাউডার পাওয়া যায়। খাঁটি এবং প্রাকৃতিক চন্দন পাউডার ব্যবহার করা উত্তম, কারণ কেমিক্যালযুক্ত পাউডার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
- গোলাপ জল ব্যবহারের সময় নিশ্চিত করুন যে এটি খাঁটি এবং অ্যালকোহল মুক্ত, যাতে ত্বক শুকিয়ে না যায়।
চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জলের অন্যান্য সুবিধা
- ত্বক উজ্জ্বল করে: নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল হয় এবং প্রাকৃতিক জেল্লা ফিরে আসে।
- ব্রণের দাগ কমায়: এই প্যাকটি ব্রণের দাগ এবং পিগমেন্টেশন কমাতে সহায়ক।
- ত্বকের ছিদ্র সংকুচিত করে: গোলাপ জল ত্বকের বড় ছিদ্র সংকুচিত করে, যা তৈলাক্ত ত্বক এবং ব্রণ প্রতিরোধে কার্যকর।
চন্দন পাউডার এবং গোলাপ জলের এই প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বকের ব্রণ কমাতে অত্যন্ত কার্যকরী। নিয়মিত এবং সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে ত্বকের সমস্যা দূর হবে এবং ত্বক হবে আরও উজ্জ্বল ও স্বাস্থ্যকর।
পরিশেষে
নিয়মিত এই উপায়গুলো অনুসরণ করলে আপনার তৈলাক্ত ত্বক সহ ব্রণের সমস্যা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব।
সূত্র: Right News BD