বিগত মাসের তুলনায় রমজান মাসে খেজুরের দাম চট্টগ্রাম নগরীর স্টেশন রোড এলাকার ফলমন্ডির সবগুলো দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এদিকে কার্টুনে কার্টুনে ভরে আছে গুদামগুলো। এছাড়াও দোকানগুলোর সামনে খেজুরে পরিপূর্ণ ।
এছাড়াও লক্ষ্য করা যাচ্ছে ছোট ছোট পিকআপে করে আনা হচ্ছে আমদানিকৃত শত শত মেট্রিকটন খেজুর। বাজারে খেজুরে কোন রকম ঘাটতি না থাকলেও বিগত বছরের তুলনায় কয়েকগুন বেশি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
সেখানকার একজন খেজুর ব্যবসায়ী বলেন, যেগুলো খেজুর গত বছর তিনশ সাড়ে তিনশো টাকা করে কিনছেন এগুলো এবছর পাঁচশো টাকা পাঁচশো ৬০০ টাকায় পাইকারী ক্রয় করছেন। এছাড়াও সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে খেজুরের দাম বাড়তি বলেন তারা।
এছাড়াও চট্টাগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্য অনুযায়ী চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৮ মাসে বাংলাদেশে আমদানি হয়েছে ৫০ হাজার ২৫৭ মেট্রিকটন খেজুর। এতে দাম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফেব্রুয়ারি মাসেই রেকর্ড ১৫৪ কোটি টাকা মূল্যের ১৮ হাজার ৮৭১ মেট্টিক টন খেজুর আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে রমজান উপলক্ষে অন্তত ২৬ রকমের খেজুর আমদানি করা হয়। এর মাঝে ১৪ রকমের খেজুরতলা মানসম্মত।
আরো খেজুরগুলোর দাম এখন লাগামহীন প্রতিদিনই বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এদিকে গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে আমদানি থেকে শুরু করে খেজুরের ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছানো পর্যন্ত কারসাজি অনুসন্ধান করছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন। কারসাজির মাধ্যমে আমদানিকারক থেকে শুরু করে মধ্যস্বত্বভোগীরা এই খেজুরের বাজার থেকে কয়েকশত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে অনুসন্ধানকারী দল। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে চারজন আমদানিকারকের এনেছেন ২২ হাজার মেট্রিকটন খেজুর।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বলেন, ১০০ টাকার উপরে কোন খেজুরের আমদানি মূল্য তারা পাইনি। কিন্তু রিটেইলারে যখন খেজুর কিনতে যাচ্ছেন তখন দেখছেন যেটির বাজার মূল্য ৩০০, ৪০০, ৫০০ টাকা এবং এক হাজার বারোশো চৌদ্দশ টাকা পর্যন্ত তারা দাম হাকিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ মনে করছেন।
কিন্তু বর্তমান দেশের বাজারে অভিজাত খেজুর হিসেবে পরিচিত মিশরের মেডজুল খেজুর প্রতিকেজি পাইকারি পর্যায়ে ১৩০০ টাকা, ইরানের মরিয়ম খেজুর ১২০০ টাকা, মেহেরুজ মাবরুম ৮৫০ টাকা, মেহেরাজ আজুয়া ৭০০ টাকা, মায়াবী আজুয়া ৭৫০ টাকা এবং দাব্বাস ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ডলার সংকটে আমদানি তুলনামূলক কম হওয়ার পাশাপাশি সৌদি আরব থেকে অন্যান্য দেশের খেজুর আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছে খেজুরের দাম বাড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। এছাড়াও রমজান মাসে ইফতারের জন্য বাংলাদেশ ২৭ থেকে ৩০ হাজার মেট্রিকটন খেজুরের চাহিদা রয়েছে যার পুরোটাই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে করা হয়।
সূত্র:- Right News BD