মানুষের শরীরের কোনো স্থানের সাদা রং হয়ে যাওয়াকে সাধারণত শ্বেতী রোগ বলে ধরা হয়। এই রোগটি কোনো প্রকার ছোঁয়াচে রোগ বা প্রানঘাতি নয়। রোগটি হওয়ার একমাত্র মূল কারণ হচ্ছে ত্বকের কোষের জটিলতা।
আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে জেনে নেওয়া যাক শ্বেতী রোগ থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কিত সকল তথ্য নিয়ে-
শ্বেতী রোগ এর প্রাথমিক লক্ষণ
মনে রাখবেন, কারও ত্বকে যদি সাদা দাগের লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে তা নিশ্চিতভাবে শ্বেতী রোগ নাও হতে পারে। চলুন তাহলে ভুল চিকিৎসার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য জেনে নেই শ্বেতী রোগের প্রাথমিক লক্ষ্যসমূহ সম্পর্কে:
- দেহের বিভিন্ন অংশে ছোট ছোট বিক্ষিপ্ত দাগ দেখা দেয়া
- দাঁড়ি ও চুল ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া
- মুখ ও নাকের প্রলেপ উঠে যাওয়া
- শরীরের যেকোন অংশে একটি দাগ সীমাবদব্ধ হওয়া
- শ্বেতী রোগ নিয়ে কিছু ভূল ধারণা
অনেকেই মনে করেন এই রোগ কখনোই সারা যায় না। এটি একেবারেই ভুল ধারণা। সেগ্মেমেন্টাল শ্বেতী রোগ সাধারণত ১ বা ২ বছর স্থায়িত্ব লাভ করে।
যদিও এই রোগ খুব অল্প বয়স থেকে শুরু হয়। তাছাড়া এই রোগের ধরণ, স্থায়িত্ব এবং তীব্রতার ওপর নির্ভর করে রোগীর চিকিৎসা করাতে হয়।
সুতরাং সকল রোগীকে একই ধরনের চিকিৎসার আওতায় আনা যাবে না। সুতরাং কেবলমাত্র ট্যাবলেট, মলম, এবং থেরাপির নাম শুনে চিকিৎসা গ্রহণ করাতে ইতস্তত করা যাবে না।
আশা করি, এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পেরেছি। তবে বর্তমান রিসার্চ অনুসারে বলা হয়ে থাকে এই রোগ সারাতে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।
যদিও এই রোগ ঠোঁট ও নখের গোড়াতে দেখা দিলে রোগটিকে বেশ গুরুতর রোগ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা দরকার।
শ্বেতী রোগের কারণ কি?
মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অংশ মেলানোসাইড রোগাক্রান্ত হলে সাধারণত এই রোগের সৃষ্টি হয়। আমাদের দেহের মেলানোসাইড হলো রং উৎপাদনকারী কোষ।
এই কোষ রোগাক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি সংখ্যায় কমে গেলেও শ্বেতী রোগ দেখা দুতে পারে। এই রোগের লক্ষ্মণ হলো দেহের নির্দিষ্ট অংশ সাদা হয়ে যাওয়া। আপনি জেনে অবাক হবেন, পৃথিবীর প্রায় ১০ কোটি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত।
সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলো এই রোগ পুরোপুরি নাও সারতে পারে। এছাড়াও দেহের যেসব অংশে অনেক বেশি লোম থাকে সেসব অংশে এই রোগের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হয়ে থাকে।
শ্বেতী রোগ থেকে মুক্তির উপায়
সাধারণত ফটোথেরাপি বা লেজার চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ নির্মুল করা হয়। এছাড়াও এই রোগ সারাতে বিভিন্ন মলম এবং ওষুধ ব্যবহার করা হয়। চলুন শ্বেতী রোগ সারানোর বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস সম্পর্কে জেনে নেই:
- যারা এই রোগ সারাতে চান তারা ভিটামিন বি জাতীয় খাবার বেশি খান
- বলা যায় এই রোগ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া জন্য বিট জাতীয় খাবার খাওয়ার খাওয়া উচিৎ
- তাছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কর্টিকোস্টেরয়েড জাতীয় মলম, টেক্রলিমাস ইত্যাদি মলম ব্যবহার করুন
- লিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট ব্যবহার করতে পারেন
- বিশেষ করে লেজার বা পুভা থেরাপি নিতে পারেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কসমেটিক সার্জারিও করাতে পারেন
শ্বেতী রোগের ওষুধের নাম কি?
- বিভিন্ন মাত্রার কর্টিকোস্টেরয়েড জাতীয় মলম
- কেলসিপট্রিন মলম
- মুখে খাবার স্টেরয়েড (প্রেডনিসলন) ট্যাবলেট
- রিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট
- ক্লোভেট
- মেলাডিনিন
- ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাদ্য
- ছোলা বুট
- টেক্রলিমাস অথবা পাইমেক্রলিমাস মলম
সূত্র:- Right News BD