আমাদের অনেকেরই ধারণা, খাবার ফ্রিজে রাখলে সব সময় সতেজ থাকে। তবে এই কথাটি সত্য নয়। কিছু খাবার ফ্রিজে রাখলে তাদের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায় বা স্বাদ ও গঠন পরিবর্তিত হয়। আজ আমার অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার করছি এমন যে ১০টি খাবার কখনোই ফ্রিজে রাখা উচিত নয়।
ভুলেও যে ১০টি খাবার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়
আলু
আলু ফ্রিজে রাখলে মূলত এটি চিনিতে রূপান্তরিত হয়, যা স্বাদকে মিষ্টি ও অদ্ভুত করে তোলে। এছাড়া ঠাণ্ডা তাপমাত্রায় আলুর গঠন নষ্ট হয়।
আমি একবার আলু ফ্রিজে রেখেছিলাম, পরে রান্না করার সময় দেখি সেটি নরম হয়েছে এবং স্বাদও ভালো লাগছিল না। তাই আলু সবসময় ঠাণ্ডা, শুকনো স্থানে রাখা উচিত।
টমেটো
ফ্রিজে রাখলে টমেটোর বাইরের খোসা কুঁচকে যেতে পারে এবং এর প্রাকৃতিক স্বাদ নষ্ট হয়। আমি ফ্রিজে রাখা টমেটো দিয়ে সালাদ বানিয়েছিলাম, কিন্তু টমেটোর স্বাদ এবং টেক্সচার ছিল সম্পূর্ণ অখাদ্য। টমেটো সবসময় ঘরের তাপমাত্রায় রাখা উচিত।
পেঁয়াজ
পেঁয়াজ ফ্রিজে রাখলে তা নরম হয়ে যায় এবং আর্দ্রতায় নষ্ট হতে শুরু করে।
ফ্রিজে রাখা পেঁয়াজ থেকে একটা গন্ধও ছড়ায়, যা অন্যান্য খাবারে চলে যেতে পারে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলি, পেঁয়াজ সবসময় শুকনো এবং বায়ুচলাচলযুক্ত স্থানে রাখাই ভালো।
রসুন
ফ্রিজে রাখলে রসুন দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং এর খোসা ফাঙ্গাসের আকারে জমে যেতে পারে।
মনের অজান্তে আমি রসুন ফ্রিজে রেখেছিলাম, পরে দেখলাম খোসার ভেতরে নরম ও ভেজা হয়ে গেছে। তাই রসুন ঘরের তাপমাত্রায় রাখা উচিত।
পাউরুটি
ফ্রিজে পাউরুটি রাখলে তা শুকনো এবং শক্ত হয়ে যায়। আমার পরিবার পাউরুটি ফ্রিজে রাখার পর দেখেছে যে এটি খুব দ্রুত বাসি হয়ে গেছে।
পাউরুটি ঘরের তাপমাত্রায় রেখে কয়েক দিনের মধ্যে খেয়ে ফেলা উচিত।
তরমুজ বা যেকোন ফলের টুকরো
ফ্রিজে তরমুজ রাখলে এর প্রাকৃতিক স্বাদ নষ্ট হয়। একইভাবে, কাটা ফল ফ্রিজে রাখলে তা দ্রুত পচে যেতে পারে।
তরমুজ ফ্রিজে রাখার পর লক্ষ্য করেছি, এটি মিষ্টি স্বাদ হারিয়েছে এবং জলের মতো হয়ে গেছে।
অ্যাভোকাডো
যদি অ্যাভোকাডো পাকা না হয়, তাহলে ফ্রিজে না রাখায় ভালো। ঠাণ্ডা তাপমাত্রা পাকার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দেয়।
আমি একবার ফ্রিজে অ্যাভোকাডো রাখার পর দেখলাম, এটি পাকার আগেই কালো হয়ে গেছে।
মধু
মধু ফ্রিজে রাখলে তা জমে যায় এবং প্রাকৃতিক গুণাবলী হারায়।
ভুলে আমি একবার মধু ফ্রিজে রেখে দেখি, তারপরে তা শক্ত হয়ে যায় এবং খেতে অনেক সমস্যা হলো। মধু সবসময় ঘরের তাপমাত্রায় রাখুন।
তেল (বিশেষ করে জলপাই তেল)
ফ্রিজে তেল রাখলে তা জমাট বেঁধে যায় এবং ব্যবহারে অসুবিধা হয়। আমি ফ্রিজে জলপাই তেল রেখেছিলাম, পরে দেখলাম তা দানাদার হয়ে গেছে।
কফি
ফ্রিজে কফি রাখলে এর স্বাদ নষ্ট হয় এবং কফি অন্য খাবারের গন্ধ শুষে নিতে পারে।
ভুল করে একবার আমি ফ্রিজে কফি রেখেছিলাম পরে লক্ষ্য করলাম, এর স্বাদ আর আগের মতো নেই। কফি সবসময় শীতল, শুকনো স্থানে রাখা উচিত।
নিজস্ব অভিজ্ঞতা
আমি যখন ফ্রিজ ব্যবহার শুরু করি, তখন ভেবেছিলাম ফ্রিজ সব খাবার সতেজ রাখে।
সময়ের সঙ্গে সঠিক জায়গায় খাবার সংরক্ষণ করলে তা স্বাদ, পুষ্টি এবং গুণগত মান ধরে রাখে।
আপনি যদি উপরের টিপসগুলো মেনে চলেন, তবে খাবারের অপচয়ও কমবে।
সব খাবার ফ্রিজে রাখা উচিত নয়। উপযুক্ত জায়গায় সংরক্ষণ করলে খাবারের গুণাগুণ ও স্বাদ বজায় থাকে। আশা করি এই পোস্ট আপনার দৈনন্দিন জীবনে সহায়ক হবে।
এখনই এই টিপসগুলো মেনে চলুন এবং আপনার খাবার আরও সতেজ রাখুন।
প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন
উত্তর: রান্না করা খাবার ৩-৪ দিন, কাঁচা মাংস ১-২ দিন, ফল-সবজি ৫-৭ দিন।
উত্তর: না, ৫°C এর নিচে রাখলে ব্যাকটেরিয়া বাড়ে না।
উত্তর: না, ঠান্ডা করে তারপর রাখুন।
উত্তর: আলু, পেঁয়াজ, টমেটো, মধু, পাউরুটি।
উত্তর: ভিনেগার-মিশ্রিত পানি দিয়ে মাসে ১ বার মুছুন।
সূত্র: Right News BD