ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার প্রেমীদের জন্য সহজ রেসিপি, যা বাড়িতেই বানাতে পারবেন।
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবারের তালিকা এবং তাদের রেসিপি সম্পর্কে আলোচনা করব। ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকা শুধু তার ইতিহাসের জন্য পরিচিত নয়, এই অঞ্চলের খাবারও মুগ্ধ করে খাবার প্রেমীদের। পুরান ঢাকার খাবারে রয়েছে এক ধরনের স্বাদ ও বৈচিত্র্য যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। এখানে পরিবেশিত হয় মজাদার, সুস্বাদু, এবং বৈচিত্র্যময় খাবারগুলো যা ঐতিহ্যবাহী এবং একে অপরের সাথে সুন্দরভাবে মিশে আছে।
১. পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাচ্চি বিরিয়ানি
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার কাচ্চি বিরিয়ানি একটি অনন্য স্বাদের খাবার, যা খাসির মাংস, ঘি এবং মসলার মিশ্রণ দিয়ে ধীরে ধীরে রান্না করা হয়। এর মাংস এবং চালের সুগন্ধি মিশ্রণ প্রতিটি লোকমায় স্বাদ ছড়িয়ে দেয়, যা একটি খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, লবণ এবং অর্ধেক ঘি দিয়ে ভালো করে মেখে ২-৩ ঘণ্টা রেখে দিন।
- চাল প্রস্তুত: বাসমতী চাল ধুয়ে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- স্তর তৈরি: একটি বড় পাত্রে প্রথমে ম্যারিনেট করা মাংসের স্তর দিন। এর উপর ভাজা আলু এবং পেঁয়াজ বেরেস্তা ছড়িয়ে দিন। এরপর ভিজিয়ে রাখা চালের স্তর দিন।
- মশলা যোগ: গোলমরিচ, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, জয়ফল ও জয়ত্রী গুঁড়া, এবং জাফরান দুধ চালের উপর ছড়িয়ে দিন।
- দম দেওয়া: বাকি ঘি এবং তেল চালের উপর ছড়িয়ে দিন। পাত্রের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করে দমে রান্না করুন। প্রথমে ১৫ মিনিট মাঝারি আঁচে এবং পরে ১ ঘণ্টা কম আঁচে রান্না করুন।
- পরিবেশন: গরম গরম কাচ্চি বিরিয়ানি রায়তা বা সালাদের সাথে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করতে পারবেন।
২. পুরান ঢাকার ইলিশ পোলাও
ইলিশ পোলাও একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার, যা বিশেষ করে বর্ষাকালে খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- মাছ ম্যারিনেট: ইলিশ মাছের টুকরোগুলোর সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল প্রস্তুত: বাসমতী চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাছ রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাছ দিন। মাছ ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল যোগ: মাছ সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: পোলাও হয়ে গেলে বেরেস্তা, কিসমিস এবং বাদাম দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু ইলিশ পোলাও তৈরি করতে পারবেন।
৩. পুরান ঢাকার মোরগ পোলাও
পুরান ঢাকার মোরগ পোলাও একটি জনপ্রিয় বাঙালি রেসিপি, যা সুগন্ধি বাসমতী চাল, মোরগের মাংস, মশলা, পেঁয়াজ, রসুন এবং ঘি দিয়ে তৈরি হয়। এই বিশেষ খাবারটি সাধারণত উৎসব, বিবাহ বা বিশেষ উপলক্ষে রান্না করা হয়। মোরগ পোলাও পুরান ঢাকার খাবার সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মুরগির মাংসের সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল প্রস্তুত: কালিজিরা চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: পোলাও হয়ে গেলে বেরেস্তা, কিসমিস এবং বাদাম দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে পুরান ঢাকার সুস্বাদু মোরগ পোলাও তৈরি করতে পারবেন।

৪. ঢাকার হাড়ি বিরিয়ানী
ঢাকার হাড়ি বিরিয়ানী এক ধরনের বিখ্যাত মাংস ও চালের খাবার, যা বিশেষভাবে গরুর মাংস, মসলার মিশ্রণ, বাসমতী চাল এবং ঘি দিয়ে তৈরি হয়। এটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম, এবং হাজী বিরিয়ানি হাউস এর জন্য বিশেষভাবে জনপ্রিয়। সঠিক মসলার পরিমাণ এবং রান্নার পদ্ধতিতে এর স্বাদ অনন্য।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল প্রস্তুত: বাসমতী চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস রান্না: একটি বড় মাটির হাড়িতে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ১ ঘণ্টা দমে রাখুন।
- পরিবেশন: বিরিয়ানি হয়ে গেলে বেরেস্তা, কিসমিস এবং বাদাম দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে ঢাকার সুস্বাদু হাড়ি বিরিয়ানি তৈরি করতে পারবেন।
৫. জনপ্রিয় মাটন পোলাও
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার মাটন পোলাও একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার, যা বিশেষ করে মাংসপ্রেমীদের কাছে খুবই প্রিয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: খাসির মাংসের টুকরোগুলোর সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল প্রস্তুত: বাসমতী চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: পোলাও হয়ে গেলে বেরেস্তা, কিসমিস এবং বাদাম দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু মাটন পোলাও তৈরি করতে পারবেন।
৬. জনপ্রিয় পুরান ঢাকার ডিম পোলাও
ডিম পোলাও একটি সহজ এবং সুস্বাদু খাবার, যা খুব কম সময়ে তৈরি করা যায়।
রেসিপি:
- ডিম সেদ্ধ: ডিমগুলো সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে নিন।
- চাল প্রস্তুত: বাসমতী চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- পেঁয়াজ ভাজা: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া দিয়ে কিছুক্ষণ কষান।
- ডিম ভাজা: সেদ্ধ ডিমগুলো সামান্য লবণ ও হলুদ দিয়ে ভেজে নিন।
- চাল যোগ: ভেজে রাখা পেঁয়াজের সাথে চাল দিয়ে দিন এবং কিছুক্ষণ ভাজুন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- ডিম যোগ: পোলাও হয়ে গেলে ভাজা ডিম এবং ধনে পাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু ডিম পোলাও তৈরি করতে পারবেন।

৭. পুরান ঢাকার মাটন খিচুড়ি (ঘরোয়া)
পুরান ঢাকার মাটন খিচুড়ি একটি সুস্বাদু ঘরোয়া খাবার, যা মাটন, চাল, ডাল এবং বিভিন্ন মশলা দিয়ে তৈরি হয়। এটি সাধারণত পোলাও বা বিরিয়ানির তুলনায় মসলা ও জলযুক্ত থাকে। মাটন খিচুড়ি পুরান ঢাকায় বিশেষ করে শীতকালে খুব জনপ্রিয় এবং স্থানীয় বাসায় সাধারণত খাওয়া হয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: খাসির মাংসের টুকরোগুলোর সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল ও ডাল প্রস্তুত: মুগ ডাল হালকা ভেজে নিন। চাল ও ডাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল ও ডাল যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল ও ডাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: খিচুড়ি হয়ে গেলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে পুরান ঢাকার সুস্বাদু মাটন খিচুড়ি তৈরি করতে পারবেন।

৮. পুরান ঢাকার বিখ্যাত তেহারি
পুরান ঢাকার বিখ্যাত তেহারি একটি সুস্বাদু মাংসের চালের রান্না, যা সাধারণত গরু বা মুরগির মাংস, চাল, মশলা এবং তেল দিয়ে তৈরি হয়। এর মশলাদার স্বাদ এবং সুশ্রী রঙ তেহারিকে খুব জনপ্রিয় করে তুলেছে। এটি পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে অন্যতম এবং বহু উৎসবে পরিবেশন করা হয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: গরুর মাংসের টুকরোগুলোর সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল প্রস্তুত: পোলাওয়ের চাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- চাল যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে চাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন। ৬. পরিবেশন: তেহারি হয়ে গেলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু তেহারি তৈরি করতে পারবেন।

৯. ঢাকার ইলিশ খিচুড়ি
ইলিশ খিচুড়ি বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার যা ইলিশ মাছ দিয়ে তৈরি হয়।
রেসিপি:
- মাছ ম্যারিনেট: ইলিশ মাছের টুকরোগুলোর সাথে হলুদ গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল ও ডাল প্রস্তুত: মুগ ডাল হালকা ভেজে নিন। চাল ও ডাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাছ রান্না: একটি পাত্রে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাছ দিন। মাছ হালকা করে ভেজে নিন।
- চাল ও ডাল যোগ: মাছ ভেজে তুলে রেখে ওই পাত্রে চাল ও ডাল দিয়ে দিন এবং কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে কাঁচামরিচ ও মাছ দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: খিচুড়ি হয়ে গেলে ঘি ছড়িয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু ইলিশ খিচুড়ি তৈরি করতে পারবেন।

১০. রুই খিচুড়ি
রুই খিচুড়ি একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার, যা সাধারণত উৎসব বা বিশেষ অনুষ্ঠানে রান্না করা হয়, যা রুই মাছ দিয়ে তৈরি করা হয়।
রেসিপি:
- মাছ ম্যারিনেট: রুই মাছের টুকরোগুলোর সাথে হলুদ গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট ম্যারিনেট করে রাখুন।
- চাল ও ডাল প্রস্তুত: মুগ ডাল হালকা ভেজে নিন। চাল ও ডাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাছ ভাজা: একটি পাত্রে তেল গরম করে মাছের টুকরোগুলো হালকা ভেজে নিন।
- মসলা কষানো: ওই পাত্রে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ কষান।
- চাল ও ডাল যোগ: কষানো মসলার সাথে চাল ও ডাল দিয়ে কিছুক্ষণ ভাজুন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- মাছ যোগ: খিচুড়ি প্রায় হয়ে এলে ভেজে রাখা মাছের টুকরোগুলো দিয়ে দিন এবং আরও ৫-১০ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: ধনে পাতা কুচি দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু রুই খিচুড়ি তৈরি করতে পারবেন।
পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার উপভোগ করুন!

১১. ঢাকার বাসমতি চালের ভুনা খিচুড়ি
ঢাকার বাসমতি চালের ভুনা খিচুড়ি একটি জনপ্রিয় ও সুস্বাদু খাবার, যা বাসমতি চাল, ডাল, মাংস এবং মশলা দিয়ে তৈরি হয়। এটি বিশেষভাবে ঘি দিয়ে ভুনা হয়, যার ফলে খাবারের স্বাদ আরও বাড়ে। সাধারণত শীতকালীন উৎসব বা বিশেষ দিনে ঢাকায় এটি খাওয়া হয়।
রেসিপি:
- ডাল প্রস্তুত: মুগ ডাল হালকা ভেজে নিন। চাল ও ডাল ধুয়ে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- পেঁয়াজ ভাজা: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে আদা বাটা ও রসুন বাটা দিন।
- মশলা কষানো: আদা-রসুন ভাজা হলে হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং গরম মশলা গুঁড়া দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
- চাল ও ডাল যোগ: মশলা কষানো হলে চাল ও ডাল দিয়ে দিন এবং চাল কিছুক্ষণ ভেজে নিন।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে কাঁচা মরিচ দিয়ে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: খিচুড়ি হয়ে গেলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু বাসমতি চালের ভুনা খিচুড়ি তৈরি করতে পারবেন।
১২. পুরান ঢাকা মোরগের দোচা
এটি পুরান ঢাকার একটি মজাদার মুরগির খাবার।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মোরগের মাংসের টুকরোগুলোর সাথে টক দই, আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- জল যোগ: পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন। জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০-২৫ মিনিট দমে রাখুন।
- পরিবেশন: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু মোরগের দোচা তৈরি করতে পারবেন।
১৩. সুতি কাবাব
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার সুতি কাবাব যা একটি জনপ্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী খাবার। এটি মূলত গরুর মাংসের কিমা দিয়ে তৈরি করা হয়। সুতি কাবাবের বিশেষত্ব হলো এর মসৃণ গঠন এবং সুতার মতো লম্বা আকৃতি। নিচে এর একটি সাধারণ রেসিপি দেওয়া হলো
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের কিমার সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের কিমা থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে লম্বা আকৃতির কাবাব তৈরি করুন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম সুতি কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু সুতি কাবাব তৈরি করতে পারবেন।
১৪. শিক কাবাব
শিক কাবাব একটি জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু খাবার, যা বিশেষ করে মাংসপ্রেমীদের কাছে খুবই প্রিয়। নিচে এর একটি সাধারণ রেসিপি দেওয়া হলো:
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের কিমার সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের কিমা থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে শিকের মধ্যে লম্বা আকৃতির কাবাব তৈরি করুন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম শিক কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু শিক কাবাব তৈরি করতে পারবেন।
১৫. বটি কাবাব
বটি কাবাব ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার। এটি মূলত গরুর মাংস ছোট ছোট টুকরা করে কেটে মসলার সঙ্গে ম্যারিনেট করে শিক বা কাঠিতে গেঁথে কয়লার আগুনে ঝলসে তৈরি করা হয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের টুকরাগুলোর সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের টুকরাগুলো শিকের মধ্যে গেঁথে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন। অথবা কয়লার আগুনে ঝলসে নিতে পারেন।
- পরিবেশন: গরম গরম বটি কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু বটি কাবাব তৈরি করতে পারবেন।
১৬. জালি কাবাব
জালি কাবাব একটি মুখরোচক এবং জনপ্রিয় খাবার। এটি সাধারণত গরুর মাংসের কিমা, ডিম এবং বিভিন্ন মশলার সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। জালি কাবাবের বিশেষত্ব হলো ডিমের প্রলেপ দিয়ে ভাজার সময় এর উপরে জালের মতো একটি স্তর তৈরি হয়, যা দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের কিমার সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের কিমা থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে গোল বা চ্যাপ্টা আকৃতির কাবাব তৈরি করুন।
- ডিমের প্রলেপ: ডিম ফেটিয়ে নিন। কাবাবগুলো ডিমের গোলায় ডুবিয়ে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম জালি কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু জালি কাবাব তৈরি করতে পারবেন।
১৭. শামী কাবাব
শামী কাবাব একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার, যা বিশেষ করে মাংসপ্রেমীদের কাছে খুবই প্রিয়। এটি মূলত গরুর মাংসের কিমা, ডাল এবং বিভিন্ন মশলার সমন্বয়ে তৈরি করা হয়।
রেসিপি:
- মাংস ও ডাল সেদ্ধ: মাংসের কিমা এবং বুটের ডাল একসাথে পরিমাণমতো জল ও লবণ দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে জল শুকিয়ে বেটে নিন।
- ম্যারিনেট: বাটা মাংসের সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের মিশ্রণ থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে গোল বা চ্যাপ্টা আকৃতির কাবাব তৈরি করুন।
- ডিমের প্রলেপ: ডিম ফেটিয়ে নিন। কাবাবগুলো ডিমের গোলায় ডুবিয়ে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম শামী কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু শামী কাবাব তৈরি করতে পারবেন।

১৮. টিকিয়া কাবাব
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার টিকিয়া কাবাব, এটি জনপ্রিয় এবং মুখরোচক, যা বিশেষ করে মাংসপ্রেমীদের কাছে খুবই প্রিয়। এটি সাধারণত গরুর মাংসের কিমা, ডিম এবং বিভিন্ন মশলার সমন্বয়ে তৈরি করা হয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের কিমার সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কাবাব তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের কিমা থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে গোল বা চ্যাপ্টা আকৃতির কাবাব তৈরি করুন।
- ডিমের প্রলেপ: ডিম ফেটিয়ে নিন। কাবাবগুলো ডিমের গোলায় ডুবিয়ে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কাবাবগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম টিকিয়া কাবাব পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু টিকিয়া কাবাব তৈরি করতে পারবেন।
১৯. নার্গিস কোফতা
নার্গিস কোফতা একটি মুখরোচক এবং জনপ্রিয় খাবার। এটি সাধারণত মাংসের কিমা ও সেদ্ধ ডিমের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। নার্গিস কোফতার বিশেষত্ব হলো, মাংসের কিমার একটি স্তর সেদ্ধ ডিমের চারপাশে মুড়িয়ে ভাজা হয়, যা দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
রেসিপি:
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের কিমার সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, পেঁপে বাটা, গরম মশলা গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন। এরপর ২-৩ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- কোফতা তৈরি: ম্যারিনেট করা মাংসের কিমা থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে সেদ্ধ ডিমের চারপাশে মুড়িয়ে নিন।
- ডিমের প্রলেপ: ফেটানো ডিমের গোলায় কোফতাগুলো ডুবিয়ে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে কোফতাগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম নার্গিস কোফতা পেঁয়াজ কুচি, শসা এবং টমেটো দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু নার্গিস কোফতা তৈরি করতে পারবেন।
২০. শাহী হালিম রেসিপি
শাহী হালিম একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবার, যা বিশেষ করে রমজান মাসে খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- ডাল ও গম প্রস্তুত: ডাল ও গম ধুয়ে ৪-৫ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। তারপর জল ঝরিয়ে নিন।
- মাংস ম্যারিনেট: মাংসের টুকরোগুলোর সাথে আদা বাটা, রসুন বাটা, হলুদ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, লবণ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে ১ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে রাখুন।
- মাংস রান্না: একটি পাত্রে তেল ও ঘি গরম করে পেঁয়াজ কুচি সোনালী করে ভেজে নিন। এরপর তেজপাতা, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে ম্যারিনেট করা মাংস দিন। মাংস ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর গরম মশলা গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া এবং কাঁচা মরিচ দিয়ে আরও কিছুক্ষণ কষান।
- ডাল ও গম যোগ: মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে ডাল ও গম দিয়ে দিন এবং ভালো করে মিশিয়ে নিন। পরিমাণমতো গরম জল দিয়ে দিন এবং লবণ স্বাদমতো দিন।
- রান্না: জল ফুটে উঠলে আঁচ কমিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রান্না করুন। মাঝে মাঝে নেড়ে দিন এবং প্রয়োজন হলে গরম জল যোগ করুন।
- পরিবেশন: হালিম হয়ে গেলে বেরেস্তা, ধনে পাতা কুচি এবং লেবুর রস দিয়ে সাজিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু শাহী হালিম তৈরি করতে পারবেন।

২১. পনির সিঙাড়া
পনির সিঙাড়া একটি মুখরোচক এবং জনপ্রিয় খাবার, যা বিশেষ করে নিরামিষাশীদের কাছে খুবই প্রিয়।
রেসিপি:
- পুর তৈরি: একটি প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি এবং কাঁচা মরিচ কুচি দিয়ে কিছুক্ষণ ভেজে নিন। এরপর পনির, আলু, জিরা গুঁড়া, গরম মশলা গুঁড়া, ধনে পাতা কুচি এবং লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। পুর ঠান্ডা হতে দিন।
- ডো তৈরি: ময়দার সাথে তেল এবং লবণ মিশিয়ে নিন। অল্প অল্প করে জল দিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন। ডো ঢেকে ৩০ মিনিট রেখে দিন।
- সিঙাড়া তৈরি: ডো থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে নিন। লেচিগুলো বেলে ত্রিকোণ আকৃতি করে নিন। ত্রিকোণ আকৃতির ভেতরে পুর ভরে সিঙাড়ার আকৃতি দিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে সিঙাড়াগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম পনির সিঙাড়া সস বা চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু পনির সিঙাড়া তৈরি করতে পারবেন।

২২. জনপ্রিয় পাকোড়া
পাকোড়া একটি জনপ্রিয় মুখরোচক খাবার, যা বিশেষ করে বিকেল বা সন্ধ্যার নাস্তায় বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন ধরনের সবজি, মাংস বা ডিম দিয়ে পাকোড়া তৈরি করা যায়।
রেসিপি:
- সবজি মেশানো: একটি পাত্রে আলু কুচি, পেঁয়াজ কুচি, বাঁধাকপি কুচি, গাজর কুচি, কাঁচা মরিচ কুচি এবং ধনে পাতা কুচি নিন।
- বেসন মিশ্রণ: অন্য একটি পাত্রে বেসন, চালের গুঁড়া, হলুদ গুঁড়া, লাল মরিচ গুঁড়া, জিরা গুঁড়া এবং লবণ মিশিয়ে নিন।
- মিশ্রণ তৈরি: সবজির সাথে বেসন মিশ্রণ মিশিয়ে অল্প জল দিয়ে ঘন মিশ্রণ তৈরি করুন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে মিশ্রণ থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে গোল বা চ্যাপ্টা আকারে তেলে ছাড়ুন। সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম পাকোড়া সস বা চাটনির সাথে পরিবেশন করুন।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু পাকোড়া তৈরি করতে পারবেন।

২৩. সবজি চপ
সবজি চপ একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার, যা বিশেষ করে বিকেল বা সন্ধ্যার নাস্তায় খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- সবজি মাখানো: সেদ্ধ আলু, গাজর এবং মটরশুঁটি ভালো করে চটকে নিন। এর সাথে পেঁয়াজ কুচি, আদা বাটা, রসুন বাটা, কাঁচা মরিচ কুচি, ধনে পাতা কুচি, গরম মশলা গুঁড়া এবং লবণ মিশিয়ে ভালো করে মেখে নিন।
- চপ তৈরি: মাখানো সবজি থেকে অল্প অল্প করে নিয়ে গোল বা চ্যাপ্টা আকৃতির চপ তৈরি করুন।
- ডিমের প্রলেপ: ডিম ফেটিয়ে নিন। চপগুলো ডিমের গোলায় ডুবিয়ে নিন। এরপর ব্রেড ক্রাম্বে গড়িয়ে নিন।
- ভাজা: একটি প্যানে তেল গরম করে চপগুলো সোনালী করে ভেজে নিন।
- পরিবেশন: গরম গরম সবজি চপ সস বা চাটনি দিয়ে পরিবেশন করুন পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার।
এই রেসিপিটি অনুসরণ করে আপনি সহজেই ঘরে বসে সুস্বাদু সবজি চপ তৈরি করতে পারবেন।
২৪. দই-ফুচকা
এই খাবারটি ফুচকা এবং দইয়ের সংমিশ্রণ।
রেসিপি:
- ফুচকায় দই এবং মসলা মিশিয়ে পরিবেশন করুন।
২৫. আলুর চপ
আলুর চপ একটি সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় স্ন্যাকস।
রেসিপি:
- আলু দিয়ে মশলা ভরে চপ তৈরি করুন।
২৬. চটপটি
চটপটি একটি মজাদার রাস্তার খাবার।
রেসিপি:
- মশলা এবং নানা উপকরণ মিশিয়ে চটপটি তৈরি করুন।
২৭. নকশি পরোটা
ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার দিয়ে আপনার দিনের শুরু করুন।
নকশি পরোটা পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী পিঠা।
রেসিপি:
- ময়দা ও অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে পরোটা তৈরি করুন।
২৮. মোগলাই পরোটা
মোগলাই পরোটা পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা সাধারণত সেদ্ধ মাংস বা মুরগির সাথে পরিবেশন করা হয়।
রেসিপি:
- ময়দা, ডিম, মাংসের স্টফিং এবং মশলা দিয়ে পরোটা তৈরি করুন।
- তেল বা ঘি দিয়ে সেঁকুন এবং মুরগি বা মাংসের সাথে পরিবেশন করুন।
২৯. শাহী গাজরের হালুয়া
শাহী গাজরের হালুয়া একটি ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন, যা গাজর, ঘি, দুধ, চিনি, এবং মাওয়া দিয়ে তৈরি হয়। এটি বিশেষ করে শীতকালে প্রস্তুত করা হয় এবং খেতে অত্যন্ত মিষ্টি ও রেশমি। শাহী গাজরের হালুয়া পুরান ঢাকার জনপ্রিয় মিষ্টান্ন, যা বিভিন্ন উৎসব ও বিবাহ অনুষ্ঠানেও পরিবেশন করা হয়।
রেসিপি:
- গাজর কিশমিশ ও দুধের সাথে মেশান।
- ধীরে ধীরে ঘি দিয়ে মিশিয়ে সেদ্ধ করুন।
৩০. মিষ্টি সেমাই
মিষ্টি সেমাই বাংলা সংস্কৃতির একটি অঙ্গ। বিশেষ করে ঈদ বা বড় উৎসবে এটি খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- সেমাই ভাজুন এবং দুধ, চিনি ও গরম মশলা দিয়ে সিদ্ধ করুন।
- পরিবেশনের সময় পেস্তা ও কিসমিস দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
এখনই আপনার যাত্রা শুরু হোক ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার দিয়ে!
৩১. চকলেট ফ্রেঞ্চ টোস্ট
চকলেট ফ্রেঞ্চ টোস্ট একটি আধুনিক ফিউশন খাবার যা পুরান ঢাকায়ও বেশ জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- ব্রেডের টুকরোগুলি ডুবিয়ে প্যান-ফ্রাই করুন।
- চকলেট সস এবং ফল দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
৩২. ফিরনি
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার ফিরনি, যা বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী মিষ্টান্ন যা মিষ্টি দুধ, চালের আটা এবং মশলা দিয়ে তৈরি হয়।
রেসিপি:
- দুধ, চালের আটা এবং চিনি মিশিয়ে ধীরে ধীরে সেদ্ধ করুন।
- বাদাম বা কিসমিস দিয়ে পরিবেশন করুন।
৩৩. গুলাব জামুন
গুলাব জামুন একটি সুস্বাদু মিষ্টান্ন যা মিষ্টি সিরাপে ডুবিয়ে খাওয়ার জন্য খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- ময়দা, গুঁড়া দুধ এবং ঘি দিয়ে ডো তৈরি করুন।
- গোলাপজামুনের আকারে টুকরা তৈরি করে গরম তেলে ভেজে সিরাপে ডুবিয়ে পরিবেশন করুন।
৩৪. চকলেট পুডিং
চকলেট পুডিং একটি মজাদার ও ক্রিমি ডেজার্ট, যা সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়, যা একটি পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার। এটি শিশুদের ও বড়দের কাছে সমানভাবে জনপ্রিয়। নিচে চকলেট পুডিং তৈরির প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে দেওয়া হলো।
রেসিপি:
- একটি পাত্রে দুধ গরম করুন।
- তাতে কোকো পাউডার, চিনি ও কর্নস্টার্চ ধীরে ধীরে মেশান, যাতে কোনো দলা না থাকে।
- মিশ্রণটি ঘন হয়ে এলে এতে ডার্ক চকলেট যোগ করে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না মিশ্রণ মসৃণ হয়।
- ভ্যানিলা এসেন্স ও এক চিমটি লবণ যোগ করে ভালোভাবে মেশান।
- মিশ্রণটি একটি বাটিতে ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন।
- সেট হয়ে গেলে ফ্রিজে ১-২ ঘণ্টা রাখুন।
- পরিবেশনের আগে ওপর থেকে চকলেট শেভিংস, বাদাম বা হুইপড ক্রিম দিয়ে সাজিয়ে নিন।
এই সহজ রেসিপির মাধ্যমে ঘরেই রেস্টুরেন্ট-স্টাইল চকলেট পুডিং তৈরি করা সম্ভব, যা যেকোনো উৎসব বা বিশেষ মুহূর্তকে আরও উপভোগ্য করে তুলবে!

৩৫. মধুর পুডিং
পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার মধুর পুডিং একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ডেজার্ট, যা চিনি ছাড়া প্রাকৃতিক মিষ্টতা দিয়ে তৈরি করা হয়। এটি শিশু ও বড়দের জন্য সমানভাবে উপযোগী এবং সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়।
রেসিপি:
- প্রথমে একটি প্যানে দুধ হালকা গরম করে তাতে কর্নস্টার্চ গুলিয়ে নিন।
- আলাদা একটি পাত্রে ডিম ফেটিয়ে তাতে মধু, ভ্যানিলা এসেন্স ও লবণ মিশিয়ে নিন।
- এবার ধীরে ধীরে দুধের মিশ্রণটি ডিমের মিশ্রণে মেশান এবং ভালোভাবে নাড়ুন।
- একটি প্যানে ২ টেবিল চামচ মধু হালকা ক্যারামেলাইজ করে পুডিং মোল্ডে ঢেলে দিন।
- এরপর পুডিং মিশ্রণটি ক্যারামেলের ওপরে ঢেলে দিন।
- বেকারে ১৮০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ৩০-৪০ মিনিট অথবা স্টিমে ৩০ মিনিট ধরে রান্না করুন।
- ঠান্ডা হলে ফ্রিজে রেখে সেট করুন, এরপর পরিবেশন করুন।
মধুর পুডিং সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর একটি বিকল্প, যা যেকোনো মিষ্টান্নপ্রেমীদের জন্য উপযুক্ত এবং সহজেই ঘরে তৈরি করা যায়!
৩৬. পুরান ঢাকার লাবাং
পুরান ঢাকার লাবাং একটি সুস্বাদু ও সতেজকর ঠান্ডা পানীয়, যা বিশেষত রমজান মাসে ইফতারের সময় জনপ্রিয়। এটি তৈরি করা খুবই সহজ এবং কয়েকটি সাধারণ উপকরণেই তৈরি করা যায়।
রেসিপি:
- একটি বড় বাটিতে টক দই ভালোভাবে ফেটিয়ে নিন।
- এতে ঠান্ডা দুধ ও চিনি যোগ করে ব্লেন্ড করুন যতক্ষণ না মিশ্রণ মসৃণ হয়ে যায়।
- এলাচ গুঁড়ো, গোলাপ জল এবং কেওড়া জল মিশিয়ে আবার ভালোভাবে নাড়ুন।
- লাবাংকে আরও সতেজ করতে বরফের টুকরা যোগ করুন।
- গ্লাসে ঢেলে ওপরে বাদামের কুঁচি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।
এই সহজ রেসিপির মাধ্যমে আপনি ঘরেই রেস্টুরেন্টের মতো সুগন্ধি ও মজাদার লাবাং উপভোগ করতে পারবেন!
৩৭. পুরান ঢাকার নুরানি শরবত
পুরান ঢাকার নুরানি শরবত একটি জনপ্রিয় ঐতিহ্যবাহী পানীয়, যা বিশেষ করে গরমের দিনে এবং রমজান মাসে ইফতারের সময় বেশ প্রচলিত। এই শরবত স্বাদে যেমন অনন্য, তেমনি শরীরকে তাৎক্ষণিক প্রশান্তি দেয়।
রেসিপি:
- প্রথমে তোকমা দানা ১৫-২০ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখুন।
- একটি পাত্রে ঠান্ডা দুধ, রুহ আফজা ও চিনি মিশিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন।
- এতে ভিজিয়ে রাখা তোকমা দানা, গোলাপ জল ও কেওড়া জল যোগ করুন।
- গ্লাসে ঢেলে বরফ কুচি দিয়ে ঠান্ডা পরিবেশন করুন পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার।
নুরানি শরবত তার স্বাদ ও সুগন্ধির জন্য পুরান ঢাকার একটি বিখ্যাত পানীয়। এটি শুধু তৃষ্ণা মেটানোর জন্য নয়, বরং শরীরকে সতেজ ও উজ্জীবিত করতেও সহায়ক।
৩৮. আলু ভর্তা
আলু ভর্তা পুরান ঢাকার একটি জনপ্রিয় ও সহজ রান্না, যা সাধারণত ভাতের সাথে খাওয়া হয়।
রেসিপি:
- সেদ্ধ আলু ও মশলা দিয়ে মিশিয়ে ভর্তা তৈরি করুন।
- সবজি বা মাংসের সাথে পরিবেশন করুন।
৩৯. শুটকি ভর্তা
শুটকি ভর্তা একটি জনপ্রিয় মাছের খাবার যা পুরান ঢাকায় খুবই খাওয়া হয়।
রেসিপি:
- শুটকি মাছ শুকিয়ে ভুনা করে মশলা দিয়ে মিশিয়ে ভর্তা তৈরি করুন।
৪০. চিংড়ি ভর্তা
চিংড়ি ভর্তা একটি মজাদার ও সুস্বাদু ভর্তা, যা চিংড়ি দিয়ে তৈরি হয়।
রেসিপি:
- চিংড়ি সেদ্ধ করে মশলায় ভুনা করে ভর্তা তৈরি করুন।
ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার রান্না করতে চান? এখনই রেসিপি শিখুন!
৪১. বড় বাপের পোলায় খায়
“বড় বাপের পোলায় খায়” পুরান ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী এবং জনপ্রিয় ইফতারের পদ। এটি মূলত রমজান মাসে চকবাজারের ইফতারের বাজারে পাওয়া যায়।
রেসিপি:
- এই খাবারটি তৈরি করতে প্রথমে মাংস এবং ডাল সেদ্ধ করে নিতে হয়। তারপর আলু এবং ডিম সেদ্ধ করে নিতে হয়। এরপর পেঁয়াজ, রসুন এবং আদা কুচি করে ভেজে নিতে হয়। এরপর মাংস, ডাল, আলু, ডিম এবং ভাজা পেঁয়াজ, রসুন এবং আদা একসাথে মিশিয়ে নিতে হয়। তারপর বিভিন্ন ধরনের মসলা, বাদাম এবং ঘি দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হয়। সবশেষে সরিষার তেল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।
৪২. বাঙ্গালি খিচুরি
বাঙালি খিচুড়ি একটি জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা মাংস বা ডাল, চাল, মশলা এবং ঘি দিয়ে তৈরি হয়। এটি সাধারণত বৃষ্টির দিন বা শীতকালে খাওয়া হয়। মিষ্টি বা ঝাল মশলার মিশ্রণ দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি, বাঙালি পরিবারের এক বিশেষ প্রিয় খাবার। এটি মজাদার এবং সহজেই তৈরি করা যায়।
রেসিপি:
- প্রথমে চাল ও ডাল একসাথে ধুয়ে নিন।
- মাংস বা মুরগি দিয়ে মশলা এবং অন্যান্য উপকরণ মিশিয়ে সিদ্ধ করুন।
- পুরো মিশ্রণটি সিদ্ধ হয়ে গেলে মাটির হাঁড়িতে ঢেলে ধোঁয়া দিয়ে রান্না করুন।
৪৩. রোস্ট মাংস
রোস্ট মাংস একটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং জনপ্রিয় খাবার যা পুরান ঢাকায় বিশেষ করে ঈদ বা বড় উৎসবে পরিবেশন করা হয়।
রেসিপি:
- গরুর মাংস বা মুরগি সঠিকভাবে মেরিনেট করে তাতে মশলা ও ঘি মিশিয়ে সেঁকুন।
- তাপমাত্রা সঠিকভাবে ম্যানেজ করে রোস্ট মাংস তৈরি করুন।
৪৪. ঝাল কাবাব
ঝাল কাবাব পুরান ঢাকার একটি জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু কাবাব, যা মশলাদার ও ঝাল হয়। এটি বিশেষ করে যারা মসলার স্বাদ ভালোবাসেন তাদের জন্য আদর্শ।
রেসিপি:
- মাংসের টুকরোগুলো সঠিক মশলায় মেরিনেট করে, তাতে লাল মরিচ ও অন্যান্য ঝাল মশলা যোগ করুন।
- সেঁকে বা গ্রিল করে পরিবেশন করুন।
৪৫. ভেজিটেবল কাবাব
ভেজিটেবল কাবাব একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুস্বাদু খাবার, যা সবজি ও মসলার মিশ্রণে তৈরি হয়।
রেসিপি:
- পেঁয়াজ, গাজর, মটরশুঁটি, আলু এবং অন্যান্য সবজি মিশিয়ে মশলায় ভেজিটেবল কাবাব তৈরি করুন।
- কাবাবগুলো গ্রিল বা ফ্রাই করুন এবং সস দিয়ে পরিবেশন করুন।
৪৬. খাসির কাবাব
খাসির কাবাব একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় কাবাব, যা খাসির মাংস দিয়ে তৈরি হয় এবং এটি পুরান ঢাকার রাস্তার খাবার হিসেবে বেশ পরিচিত।
রেসিপি:
- খাসির মাংস ভালোভাবে মেরিনেট করে মশলা দিয়ে একত্র করুন।
- তারপর কাবাবের আকারে গঠন করে সেঁকুন বা গ্রিল করুন।
৪৭. চিকেন কাবাব
চিকেন কাবাব সাধারণত মুরগির মাংস দিয়ে তৈরি হয়, যা সুস্বাদু এবং তাজা মশলার স্বাদে ভরপুর।
রেসিপি:
- মুরগির মাংস মেরিনেট করে তাতে বিভিন্ন মশলা যোগ করুন।
- তারপর তাওয়া বা গ্রিল করে মাংস সেঁকুন এবং সস দিয়ে পরিবেশন করুন।
৪৮. চিকেন টিক্কা
মসলাদার চিকেন টিক্কা একটি সুস্বাদু গ্রিলড মাংসের খাবার, যা মুরগির মাংসকে মশলা, দই এবং বিভিন্ন ভারতীয় মসলার সাথে মেরিনেট করে সেঁকা হয়। এর তীব্র মশলাদার স্বাদ এবং খাস্তা বাইরের অংশ মাংসকে নরম ও রসালো করে তোলে। এটি একটি জনপ্রিয় স্টার্টার বা স্ন্যাকস, বিশেষ করে পার্টি বা অনুষ্ঠানে।
রেসিপি:
- মুরগির টুকরোগুলো মেরিনেট করে তাতে টিক্কা মশলা দিয়ে ভালোভাবে মেশান।
- পরে কাঠিতে লাগিয়ে সেঁকুন এবং পরিবেশন করুন।
৪৯. পুরান ঢাকার ঝাল খাসির মাংস
ঝাল খাসির মাংস একটি মশলাদার এবং ঝাল খাবার, যা খাসির মাংস দিয়ে তৈরি হয় এবং পুরান ঢাকায় খুবই জনপ্রিয়।
রেসিপি:
- খাসির মাংস মশলায় রান্না করুন।
- তারপর লাল মরিচ ও অন্যান্য ঝাল মশলা দিয়ে ঝাল গরম খাসির মাংস প্রস্তুত করুন।
৫০. পুরান ঢাকার ঝাল গোরুর মাংস
ঝাল গোরুর মাংস পুরান ঢাকার একটি শীর্ষস্থানীয় এবং জনপ্রিয় খাবার, যা গরুর মাংস দিয়ে তৈরি হয় এবং ঝাল মশলায় পরিবেশন করা হয়।
রেসিপি:
- গরুর মাংসের টুকরোগুলো মশলায় রান্না করুন এবং ঝাল মরিচ দিয়ে সিজনিং করুন।
- শেষে সস বা শসা দিয়ে পরিবেশন করুন।
ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার আজই চেখে দেখুন স্বাদ!
জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)
কাচ্চি বিরিয়ানি তৈরি করতে, মাংস (মাটন বা গরু) মেরিনেট করে রাখুন দই, আদা-রসুন, কাঁচামরিচ, গরম মশলা দিয়ে। তারপর আধাসিদ্ধ চালের সাথে মাংস, সাফরন, এবং ভাজা পেঁয়াজ যোগ করে, দমে রান্না করুন। মাংস ও চাল একসাথে রান্না হলে, কাচ্চি বিরিয়ানি প্রস্তুত।
মাটন খিচুড়ি রান্না করতে, প্রথমে মাটন মশলা, আদা-রসুন, কাঁচামরিচ, গরম মশলা দিয়ে সেদ্ধ করুন। তারপর চাল ও মুগ ডাল যোগ করে, পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। শেষে ঘি ও গরম মশলা দিয়ে দমে রান্না করে, গরম গরম পরিবেশন করুন।
শিক কাবাব তৈরি করতে মাংস (মাটন বা মুরগি) ছোট টুকরো করে মেরিনেট করুন আদা-রসুন বাটা, দই, লবণ, গরম মশলা, এবং কাঁচামরিচ দিয়ে। তারপর মাংসের টুকরোগুলো কাঠির উপর সাজিয়ে তাওয়া বা গ্রিলে সেঁকে নিন। সিক কাবাব গরম গরম পরিবেশন করুন সস বা সালাদ দিয়ে।
বাঙালি পোলাও তৈরি করতে প্রথমে বাসমতি চাল ভালোভাবে ধুয়ে ভিজিয়ে রাখুন। একটি পাত্রে তেল বা ঘি গরম করে এলাচ, দারুচিনি, তেজপাতা, লবঙ্গ দিয়ে ভেজে নিন। এরপর চাল, সামান্য লবণ, চিনি এবং পানি যোগ করে সিদ্ধ করুন। পোলাও সিদ্ধ হয়ে গেলে পরিবেশন করুন মাংস বা সবজি দিয়ে।
ঝাল কাবাব তৈরি করতে মাংস (মাটন বা মুরগি) ছোট টুকরো করে মেরিনেট করুন ঝাল মরিচ, আদা-রসুন বাটা, লবণ, গরম মশলা দিয়ে। তারপর মাংসের টুকরোগুলো কাঠিতে সাজিয়ে তাওয়া বা গ্রিলে সেঁকুন। ঝাল কাবাব গরম গরম পরিবেশন করুন।
ঝাল গোরুর মাংস রান্না করতে, প্রথমে গরুর মাংস মশলা, আদা-রসুন বাটা, কাঁচামরিচ, তেজপাতা, এলাচ দিয়ে মেরিনেট করুন। এরপর তেলে মাংস ভেঙে, ঝাল মরিচ ও অন্যান্য মশলা যোগ করে, পানি দিয়ে সেদ্ধ করুন। মাংস সেদ্ধ হলে, ঘি দিয়ে রান্না শেষ করে গরম গরম পরিবেশন করুন।
স্বাদে ভরা পুরান ঢাকার বিখ্যাত খাবার, আমাদের রেসিপি পেজে চলে আসুন!
উপসংহার
পুরান ঢাকা শুধু তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং ইতিহাসের জন্য নয়, বরং এর স্বাদে ভরা খাবারের জন্যও বিখ্যাত। এখানকার বিশেষ খাবারগুলো যেমন কাচ্চি বিরিয়ানি, মাটন খিচুড়ি, ফুচকা, শিক কাবাব ইত্যাদি, প্রতিটি খাবারই এর স্বাদ এবং মশলার সমন্বয়ে অনন্য। পুরান ঢাকার খাবারগুলো সাধারণত মসলাযুক্ত, সুস্বাদু এবং ঐতিহ্যবাহী। এই খাবারগুলি স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদেরও আকর্ষণ করে। পুরান ঢাকার খাদ্য সংস্কৃতি আজও মানুষের মন জয় করে, এবং এটি খাদ্যপ্রেমীদের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ।
সূত্র: Right News BD