নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়ে দগ্ধ ৪ আহত ৬

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ:

নারায়ণগঞ্জে ফতুল্লায় একটি ৬ তলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে গ্যাস লিকেজ হয়ে ৪ জন দগ্ধসহ ৬ জন আহত হয়েছে।

আজ সকালে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. তরিকুল ইসলাম জানান,

‘গত রাতের বিস্ফোরণে এখানে ৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে সবুজ খন্দকারের শরীরের ৫৫ শতাংশ, রানার শরীরের ১২ শতাংশ।

বিথির ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে, তাদের অবস্থা অনেকটাই আশঙ্কাজনক। রুবেল নামের আরেকজন সামান্য দগ্ধ হয়েছেন।’

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়ে দগ্ধ ৪ আহত ৬

গত ১২ আগস্ট শনিবার দিবাগত রাত ১২টার সময় কাশিপুর ইউনিয়নের হোসেনী নগরে লক্ষ্মী নিবাস নামের একটি আবাসিক ভবনে এ ঘটনাটি ঘটে।

নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক ফখরুদ্দিন আহমেদ আমাদের প্রতিনিকে বলেন,

‘ক্ষতিগ্রস্ত ফ্ল্যাটের ভেতরে গ্যাস লাইন ও ২টি গ্যাস সিলিন্ডার পাওয়া যায়।

প্রথমে ধারণা করা হয়েছে ঘরের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস লিকেজের কারণে বিস্ফোরণটি ঘটেছে। তা তদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এছাড়াও তিনি আরও বলেন, ‘৬ তলা ভবনের ৫ তলার উত্তর-পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটে বিস্ফোরণ হয়।

ওই ফ্ল্যাটের পশ্চিম পাশের দেয়াল ভেঙে পাশের টিনওয়ালা বাড়ির ওপর পড়ে পাশের ৩টি ফ্ল্যাটের দরজা ও দেয়াল ভেঙ্গে যায়।

বিস্ফোরণের পর ৪র্থ ও ৬ষ্ঠ তলার ফ্ল্যাটের ভাঙা আসবাবপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়।

বিস্ফোরণের এ ঘটনায় আহতরা হচ্ছে- হোসেনী নগর অঞ্চলের মোঃ লোকমানের ছেলে মোঃ সবুজ খন্দকার (২৫), মোঃ রানা (৩০), তার স্ত্রী বিথী (১৮) ও তাদের শিশু ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া মোঃ আবুল কালাম (৬০)।

তাৎক্ষণিকভাবে আহত অপর একজনের নাম এখন পর্যন্ত জানা যায়নি।

খলিল শিকদার জানায়:

দগ্ধ মোঃ সবুজ খন্দকারের চাচা মোঃ খলিল শিকদার জানান, ‘ভাতিজার একই অঞ্চলের হোসিয়ারি কারখানা রয়েছে। রানা ও তার স্ত্রী সেই কারখানার শ্রমিক।

তারা যে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন সেখানে বিস্ফোরণে তাদের ৪ জনের সবাই দগ্ধ হয়।’

আহত মোঃ আবুল কালাম ৬ তলার ভাড়া থাকতেন। তিনি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় বিস্ফোরণে আহত হন অপর একজন আহত হয় একই ভবনের ভাড়াটিয়া।’

এ বিষয়ে তিনি জানান, আহত হওয়া সবাইকে উদ্ধার করা হলে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সেখান থেকে তার ভাতিজা সবুজ, কারখানার শ্রমিক রানা ও তার স্ত্রী-সন্তানকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি জেনেছি আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

হোসেনী নগর এলাকায় ওই ভবনের মালিক মো: মাসুদুর রহমান আসলামের ছেলে বলেন,

‘বিকট শব্দে বিস্ফোরণের পর পরই আগুন ধরে যায়। পরে ভাড়াটিয়ারা একসঙ্গে আগুন নিভিয়ে ফেলে।

৫ তলার ২টি ফ্ল্যাটের দেয়াল ভেঙে যায়, পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনদের ভবনটি খালি করতে বলে। সেই মহুর্ত্তে ভাড়াটিয়ারা সবাই আত্মীয়স্বজনের কাছে চলে গেছে।

নারায়ণগঞ্জে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়ে দগ্ধ ৪ আহত ৬

৬ষ্ঠ তলার ভাড়াটিয়া হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘বিকট শব্দ বিস্ফোরণের পর পুরো ভবন কেঁপে ওঠে।

আমাদের ঘরের আসবাবপত্রও নষ্ট হয়ে গেছে বিল্ডিং ভেঙ্গে পড়ার ভয়ে সবাইকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যাই।

তাছাড়া সরাসরি দেখা যায়, ভবনের ৫ তলায় ৪টি ফ্ল্যাট রয়েছে বিস্ফোরণে উত্তর-পশ্চিম পাশের ফ্ল্যাটের পশ্চিম পাশের দেয়াল ভেঙ্গে পাশের টিনের ঘরের ওপর পড়ে দক্ষিণ পাশের দেয়ালটিও ভেঙে পড়ে।

সিঁড়িতে পূর্ব পাশের ফ্ল্যাটের দেয়ালও ভেঙ্গে গেছে। এ ছাড়া বাকি ২টি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র উল্টে পড়েছে, প্রতিটি ফ্ল্যাটের কাঠের দরজাগুলো ভেঙেছে।

বিস্ফোরণের পর দেয়ালগুলো ধসে পাশের টিনের ঘরের বাসিন্দা মো: আনোয়ার হোসেন জানান,

‘আমি আমার বৃদ্ধ বাবাকে বাড়িতে নিয়ে থাকি। এই ঘটনায় আমি শহরের নয়ামাটি অঞ্চলে কর্মরত ছিলাম।

আর আমার বাবাও নৈশ প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন। ঘরে কেউ না থাকায় সৌভাগ্যক্রমে দেয়ালে চাপা হওয়া থেকে বেঁচে গেছি।

সূত্র:- Right News BD

bn_BDBengali